কবি দেবাশিস প্রধান এর কবিতা-
১।। ∆ ক্ষত ∆
গমরঙা রোদ কাঁপছে ঘাসের ধুলোয়, বেবুর গাছে পাখপাখালির সভা।
মনুষ্যজন ন্যায় অন্যায় বাঁধে, জোট বাঁধো হে, তৈরি হও এমন আহ্বানে
এক এক পাখি ভিন্ন স্বরে চেঁচায়। এই পাখি তোর হাড়গোড় সব চ্যাঁছা।
গুলতি ছুঁড়ে কি মার মারে খোকাবাবুর দল ! জোরসে ডাকে পেদুর বনের পেঁচা।
সবুজ টিয়া বনের হরিয়াল যায়না ধানের ক্ষেতে
চার্দিকে রোজ ঝুলছে মায়া জাল, আমরা মরি, ক্ষুৎকাতরে রোজ
হায়,এমনই দিন কাল!
২।। ∆ আয়ু ∆
আমার না বলা কথা তুলে রাখি তোমাদের চৌকাঠ সীমায়
এমন। পবিত্রমুখ লক্ষ্মীজলার মাঠের হু হু ছড়ায় বাতাস
শীতল আলোয় নারী রি রি রোদের বাগানে
খোঁজে অমল পরাগ
তেমন আঢাকা শরীর থেকে খুঁজে নেবো বেবাক গন্ধ মৈথুন
তোমার হিমবাহ রাতের শরীর থেকে ছেঁকে নাও দিনান্ত উত্তাপ
এখন ওমুখেই ঝরে পড়ছে নাক্ষত্রমথিত ক্ষমা, মকর জলের আয়ু
তোমার আমার মধ্যে এভাবেই গড়ে উঠেছে আলোর অহংকার
তথাগত রোদ্দুরের তুকতাক, সুখ-দুঃখ বিষাদ সিন্ধু ঘাঁটা নিজস্ব ভূগোল।
৩।। ∆ ভেতরে ভেতরে ∆
তোমার ভেতর শীতল গন্ধ
অগাধ ইচ্ছে সবুজ অহর্নিশ
কলবলিয়ে ফুটছে কমার তোড়
পাখপাখালির কিচিরমিচির দুধেল ধানের শীষ !
তোমার মধ্যে আঁটুল বাঁটুল কথা
আয়ুযাপন দিঘল পাতার পাতার জল----
কাঁপছে শুধুই কাঁপছে দিন ও রাত
ক্ষমার মতো আকাশ চোখের নীলে
টপটপাটপ পড়ছে তরল ধারা
সময় এবং সময় অনর্গল !
আমার মধ্যে তোমার সরল হাসি
ঘাই মারছে চিরহরিৎ উষ্ণ অভিলাষী ।
৪।। ∆ টান ∆
চরিতার্থ কথাটি লিখি,তোমাদের কোমল হৃদয়ে চামড়ায়
আদ্যন্ত এমনই লিখি-----অক্লান্ত অভিপ্রায়, প্রাণান্ত অভিজ্ঞাতার
সুচিমুখে জরুরী অক্সিজেন খুলে দিই-----জীবন্ত বেঁচে থাকার
এও এক আশ্চর্য বিধান। এসো, তবে আঁধার পর্দা ছিঁড়ি ক্রমাগত হ্যাঁচকা টানে-----।
৫।। ∆ জড়তা ∆
আজ না পাওয়ার জন্য দুঃখ নেই -----
অনিশ্চিত ধূসরতা, ধুলোময় এটলাসের
প্রতি অক্ষে অবাক আলো-আঁধারের
প্রতি কথা, প্রতি অঙ্গে শ্যামপবনের
হাওয়া ইতিহাস । উৎসাহের মুষ্টি ভিক্ষার
জন্য দু’হাত পেতেছি ধুলোর চামরে,
রক্ত রসের অঢেল আয়োজন পড়ে রইলো
দক্ষিণে উত্তরে । তার চেয়ে সামাজিক
মহার্ঘ সময়ের ডানায় বেঁধে রাখি
প্রেম । হে নৈঃশব্দ্য, তুমি এত অসহযোগী
প্রবাহের মধ্যেও প্রেক্ষিতে প্রতিমার বিরুদ্ধ
চেতনা দাও, এসো----- অনড় সভ্যতার
ভিত নাড়িয়ে চুরমার করো, অজীর্ণ সংস্কৃতি।
অলংকরণ - মেহবুব গায়েন
•••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••
No comments:
Post a Comment