কবি রাজীব ঘোষাল এর কবিতা -
১।। ফসিল
একটি মাছ সর্বান্তকরণে বুঝতে পারছে
শুকিয়ে আসছে বাসগৃহ, নদীজল...
কিন্তু তার ছটফট করা ছাড়া অন্য উপায় নেই
তার পাঁকের ভেতর ফসিল হওয়া ছাড়া
অন্য কোনো উপায় নেই...
২।। ঘুঘুডাক
ঘুঘুডাকের মত ব্যাকুল বুকের মোচড় আর হয় না
এইটুকু সার সত্যের পেছনেই দরজা খোলা...
বুকপকেটে তারা বুকপকেটে নদী,পাহাড়,সমুদ্র
কুর্চিফুল।বনবিহারী এক মানুষ ঘোরে...
ব্যোম-ভোলা!
পথে যাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ হয় তারা
কেউ ভোগবাদী, কেউ নাস্তিক আবার কেউ
ঈশ্বর বিশ্বাসীও বটে।
অথচ একটা বিষয়ে সকলেই একমত
বেলা যত মধ্যাহ্নের দিকে
বিকেলের দিকে গড়ায়,
ঘুঘু ডাকের হাহাকার
তাদের অস্তিত্ব জুড়ে বাজতে থাকে,
বাজতেই থাকে...
৩।। খ্যাপাটে ঈশ্বর (পৃষ্ঠা -১৩)
খুব নিরালায় থাকা মৌচাকে,কোনো একদল বখাটে ছেলে
ঢিল ছোড়ার পর থেকেই অস্থিরতা,আবহমান...
থামার কোনো লক্ষনই নেই।
তারা লক্ষ করছে না কাছেই থাকা ফুলবাগানটিকে,
লক্ষ করছে না শূন্যতার অসীম বিস্তারকে।
শুধু ভেতরে ভেতরে গুমরে গুমরে
দ্বিগুন বেগে ওড়াউড়ি করছে মৌচাক ঘিরে...
যদিও কেউ কাউকে ধাক্কা মারছে না,
অথবা বোঝা যাচ্ছে না কার ভরবেগ
কার গায়ে আছড়ে পড়ছে...
৪।। বসত
বাসর পেরোনো নবোঢ়ার মত
ভোরের আকাশ শুয়ে আছে।
গাওয়া ঘিয়ে রঙের বিশ্রস্ত তলপেটে
নাভি হয়ে চিকচিক করছে শুকতারা।
আরো নিচে ঝুল ঝুল অন্ধকারের
গর্ভ ফুঁড়ে বেরিয়ে আসে সূর্য।
সূর্যের বুক চিরে পাখি ওড়ে
সমুদ্র ঢেউয়ের দিকে....
ঢেউ একটি ঠিকানা
জলতরঙ্গের কালোয় লেখা
বুকে ঝিলিক দেয়
পড়া আর হয়ে ওঠে না....
৫।। শরীরে মহুয়ার গন্ধ
আকাশের নীল গুহা থেকে মুখ বাড়িয়ে
দেখে নিচ্ছে জ্যোৎস্নায় মাড়ুলি দেওয়া তেপান্তর...
গলানো পেতল, ছাঁচে ঢেলে গড়ে তোলা
কামনার রূপ তখন কুঞ্জ সাজায়...
হাওয়ার ক্যানভাসে মিথুন আঁকে যে চিত্রকর
তার তুলি হয়েছে সাইবেরিয়ান পাখি,
খসে পড়া উল্কার ভেতর
পতপত বাতাসে উড়ছে
মাছের আঁশ দিয়ে বানানো জানালার পর্দা
দূউর থেকে কিছু কামরাঙা ফল
ডাক দিয়ে গেলে, শরীরে মহুয়ার গন্ধ জমে ওঠে...
অলংকরণ - ইন্দ্রানী পন্ডা
•••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••
No comments:
Post a Comment