কবি বিশ্বজিৎ আঁকুড়ে এর কবিতা-
১।। ঋতুহীন কবিতা-গুচ্ছ
১৫.
খোলাই আছে দুয়োর
ছাঁচতলায় ঘটি ভর্তি জল !
পা ধুয়ে ঢুকে যাবে ?
শুচি করবে আমার বিহান কাল...!
ধান-দুব্বো তেলের মঙ্গল চাপিয়ে নেবে মাথায় ?
এখানে উঠোন ভর্তি আমোদ, পাকা ধানের শীষ...
নবান্নের আলপনায় বেজে উঠছে সন্ধের মাদল
শাঁখ আর মাগরিব সালাতে টকবগে হবে তুমি ?
নাকি সবই ফালতু কথার মত পাঁচিল হয়ে যাবে
মেখে নেবে? ভিন্ন কোনো রোদ.....
১৯.
পাশ কেটে যে টান খুলে ফেলতে চাইছো বারবার
হাতড়ে নিচ্ছ হেমন্ত লতাটির গায়ে লেগে থাকা অন্য হিম
ভিন্ন রোদের আলো
কান থেকে খুলে ফেলছ পুরনো দুল
পা থেকে সোহাগা নূপুর.....
ভেতর ঘরের পর্দাটা যে দুলছে ! নড়ে উঠছে সূর্য ওঠা ভোর.....
দেখ, একটা বৃত্তের ভেতরেই কেমন ঘুরঘুর করছ অনিচ্ছায়
তাকে কি কারাবাস বলবে? নাকি ফুঁ দিয়ে উড়িয়ে দেবে
হালচাল হাওয়ায়
ভেতর ঘরের পাণ্ডুলিপি আমি তো পড়েছি
উলটে-পালটে দেখেছি পাতা, শুঁকেছি রাতে গন্ধ
সেখানে তো কোনো মূদ্রণ প্রমাদ নেই
ঘৃণা করো অথবা পুজো....
টুগের সিঁড়িটিকে আমি প্রথম ধাপের গল্প বলি.....
গাছে উঠে যাওয়া বন্ধুটিকে এখনও আমি ঘৃণার রঙেই দেখি
২৪.
তেতে উঠতে পারি না বলেই মাঝে মাঝে জ্বর আসে । সাথে মনখারাপের
তীব্র গা-গরম। নিজেকেই খারাপ বেসে ফেলি বারবার । অথচ যত্নে ঢাকা
দিই তোমাকে। জং ধরে। আঙুলে - গলায় -অন্তর দেশে।গণ্ডদেশ থেকে যে
ধীরস্রোত নেমে আসে । জাদুঘর থেকে যন্ত্রণা গ্রহণ করি। আমার কফিনেও
কী সেই দাগ লেগে আছে ! যাকে তুমি অন্তর-ক্ষত নামে ডাকো.......
২৬.
তবুও প্রতিটি সূচিপত্রে তোমাকেই দেখতে চায় চোখ। ৯ আর ৮ এর
ভাগে, ভাগফল ও ভাগশেষে। এই যে দীর্ঘ দূরত্ব ফেলে রেখেছ অনায়াসে।
ছিলায় আর গাণ্ডীবের নিবিড় নৈকট্যে আঙুল ফসকে গেলেই কী কুপকাৎ হয়?
লক্ষ ও লক্ষ্মণরেখার! অবহেলা ছুঁড়ে দিলে লালন করি তাকে। পালন করি ঘৃণার
গায়ে লেগে থাকা শোক। গায়েব করি অনিবার্য সব ভাঙন। তোমাকে স্পর্শ করতে
কতটা পথ টপকাতে হয় অলিভিয়া! কতটা শূন্যতা পেলে ঝেঁপে আসে কবিজন্ম?
কেঁপে ওঠে জলের গভীরে ঢিল দেওয়া ঢেউ........
ছবি - মেহবুব গায়েন
°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°
No comments:
Post a Comment