Monday 15 August 2022

কবিতা

চিক বর্ষা সোঁদা টুপ পর্ব -৬




অঞ্জন দাস এর কবিতা -



১.
∆ রাধে বিদ্রোহ ∆


সে আলো কৃষ্ণ মনি বৃষ্টি আমার 
তোমাকে ধুয়েছি বাঁশি সুর খুঁজি মনে
একান্ত গোপনে খুঁজি সর্বস্ব তোমার 
আমি চোর ভরাডুবি যমুনা নয়নে 

কাননে এসেছি প্রিয় ভুলে যাই পথ
জীবনের মায়ারথ গ্রাস করে মোহ
ডানা দিও শিষ দিও দিও  জ্ঞান রথ
ধুলো পাহাড়ের নিচে রাধে বিদ্রোহ 



২.
একটি পুকুর পুকুর ছবি 


১.
দু এক ফোঁটা গোলাপ গড়াতে এসে
সারা বাগান যখন বুকের দিকে এগুতে থাকে
এক কোটি চোখের অর্জন দিও আচার্য অন্ধকার 

২.
মীরাগাঁয়ে পাতার ঈশ্বরী পা 
খুলে রাখে চটি
হাত নামে পায়ের ভিতর
তুলে নেয় নেমতন্য কার্ড 
মৌচাক জেগে থাক মনে
শ্রমিক বাতাসে ছিল শেকড়ের সমস্ত তরুণী 

সদরে তেতুল কুঁড়ি- আচমকা বৃষ্টি হলেই 
 ঘুমভাঙে ত্রিপল ভূবনে - ঘাম ভর্তি পাঁচু মন্দির 
চেয়ে দেখে ওপাড়ার হুইস্কি রঙের 

পর পর দাপট বাতাসে দেব, দারুচেনা 
ও বাড়ির পাতলা হিঁচড়ে পাকা যুবকের বাড়ি
বারুদ শহরে ওরা পালিয়ে মরেছে 
 

৩.
কাঁটা পঞ্চায়েত সেলাই সমিতির সমস্ত দিদিরা
আমি
গতমাসে টাটকা খরায় শুকিয়েছি সমস্ত মজুরি 
এ মাসে একটা ও প্রেমের কবিতা লেখা গেল না
সেলাই হলনা ডাঁই ফল্স বসাবার রকমারি মেঘডুরে বাড়ি
সারা বাগানের জল চোরা ঘোগে চোখের পুকুরে এলো
আঁকে জলহাঁস  বুকের পরপর কিছু গোল ঢেউ
ভাঙা তছনছ কিছু পড়শী গানের অষ্ট আঙ্গিক

অলংকরণ- নীশিপদ্ম
•••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••

বিপ্লব ভূঞ্যা’র কবিতা-


১.
∆ আলিঙ্গন প্লেট ∆


বন্ধ চোখের ওপারে অবশিষ্ট
সময়কে বালি বলি
বালি তো বৃহৎ রূপান্তর
পর্বত ভেঙে এই খন্ডাকার সময়
রূপান্তর তবু আরোহণই বলি
বালির পাশে আরোহণ তবু মানায়
ফুলের পাশে খালি আলিঙ্গন

আমাকে টুকরো করো আলিঙ্গন প্লেটে 
তুলে দাও - এসময়....




২.

∆ অপেক্ষা সাজানো ইট ∆


তুমিও এসো আমার ইটের অপেক্ষা সাজানো
 এ ঘরে
দেখে যাও পুট্টির প্রলেপ, রঙের টান
তারপর এসে বসো আমার ভেতর
আমার ভেতর ঘরে প্রদীপ জ্বেলেছি
নিভে যায় ভয়ের বন্ধ দরজা
আমার ওঘরের চাবিতে হারিয়েছেন তিনি
ভোরের সত্যি স্বপ্নে দেখি ওরা শ্মশানে
পথ সরিয়ে তুলছে বালি পাথরে
ওদের কি  তবে সব পথ মেরামত
শেষ হলো এত দিনে....


৩.
∆ গোলাপ হরণ ∆


এখানে উঠে এসে দেখো
কেমন কেটেছে পথ হরিণ
             তোমার সবুজের দিকে
উঠে এসে দেখো বেঁকেছে পথ
হরিণীর দিকে জলজ চোখ
আরও একটু উপরে এসে দেখো
আমার নায়াগ্রা জল ভাত

বেচারা গোলাপ অপহরণের সমার্থক
                       কিছু পাতাকে শেখালো...



অলংকরণ- নীশিপদ্ম

•••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••


মেহবুব গায়েন এর কবিতা-



১.
∆ সানন্দ দাঁড়িয়ে ∆


আমার জীবন বন্ধু সাইকেল
কাঁথি শহরের হ্যাজাক পথ দেখিয়ে বাড়ি ফেরাতে
সেদিনও কলেজ গেটে 
হলুদ হ্যান্ডলুম শাড়ি, খোঁপায় কৃষ্ণ চূড়া ফুল, চোখের পাড়ে ভাঁজকরা কাজল রঙ বেয়ে ঠোঁটের এককোনে তিলের মাধকুরী গন্ধ গন্তব্যে নয়, আমার সামনে দাঁড়ালো পছন্দের দোয়াত হাতে, ধরার আগে বেরিয়ে গেলাম সীমা রেখা পেরিয়ে বুড়ির দোকান,

যেখানে আমার সানন্দ দাঁড়িয়ে আছে....



২.
∆ শব্দ হকারি ∆


যুদ্ধে থেমে যেতে হয়
কথার মধ্যে কোন ফ্যাকাল্টি পড়ে নেই
শুধু মারাডোনা আকাশ,

অপু- অঞ্জনের সানন্দে আমার সাইকেল পেরিয়ে গেছে
বাংলাদেশ বারান্দা...
হাফ প্যান্ট থেকে ফুল প্যান্টে রাধাচূড়াও বন্ধু
তুমি বললে সাজানো চুলের ঠুমরী,
পথের আয়নায় উড়ে যাচ্ছে 
ঝুলে থাকা মুখের ব্যারিকেড...
শুধুই শব্দ হকারি-
আমাদের আলো সার্কাসে...


৩.
∆ কূর্পর ওড়া সময় ∆


আমাকে পোড়াও মীন মোম !

মাছ কি পুরুষ!
 নাকি আমি !
জল ঝাপটায় ভেঙে যাওয়া ঘুম
স্বপ্ন নাবালিকা,
সেও আগুন সুতোয় পুড়তে চায় 
 
সাদা শাড়ির ইস্ত্রিতে
পা রঙিন হলে,

 কর্পুর ওড়াও সময় আমাকে...

অলংকরণ- নীশিপদ্ম

•••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••


1 comment:

  1. সব লেখাগুলিই অনবদ্য।বিশেষতঃ মেহবুব ভাইয়ের লেখাগুলি মন ছুঁয়ে গেল।

    ReplyDelete