শিবালোক দাস এর কবিতা -
∆
তরণী
জলে পা রাখতেই সরে গেল কাঁটা। হয়তো খেলার ছলে।
হতভাগ্যের মতো দরজা খোলা। নিভে যায়নি মোমবাতি।
এতদিন তরণী ভাসিয়ে এসেছ। মাটি ঋণের কথা বলে।
হঠাৎ স্খলিত তোমার দেশ। তুমি কি ফিরিয়েছ তাকে ?
পেছন ফিরে তাকিয়ে সে দেখেনি। হাত দুটি ছোঁয়াও।
যমুনা এতদিন রয়েছে বন্ধক। কই জানাওনি তো তাকে !
তরণী কিন্তু বয়ে চলেছে। সে দেখেছিল শমনের মুখ।
কপালে ভাঁজ। তরঙ্গ কেমন অনিয়মিত। অনিশ্চিত।
নীচে লুপ্ত তোমার আপন দেশ। তাকে দাও চুম্বনের সুখ।
∆
যমুনা-২
আজ সমস্ত কম্পন ডুবে গিয়েছে
একাধিক কালোয়।
তুমি কি আদৌ কোনো ব্যথা বোঝো ?
বন্ধ চোখ কত শীতল,
পা রাখতেই বেশ জোরে বৃষ্টি নামে।
জানলা যেখানে শেষ হয়েছে,
সেখানেই উঠেছে একটি পান্ডুলিপি।
নিভে যেতে তো পারত, অতর্কিতে !
তুমি ঠিক মনে করিয়ে দিতে।
আকাশে তখন ভাসছে চুম্বন,
যমুনার খেয়াল নেই কখন সে
ছুঁয়েছে আমার হাত, ফুটেছে রেখা।
তুমি বুঝতে পারোনি, আমি তোমাকে
কখন ভালোবেসেছিলাম, নক্ষত্রে পুড়ে ?
প্রতিদিন সন্ধের পর পান্ডুলিপি...
প্রতিদিন সন্ধের পর অক্ষরবৃত্ত থেকে স্বরবৃত্ত...
∆
যমুনা-৩
তুমি আজ পরিপূর্ণ যমুনা !
আকাশ ভেঙে গেছে,
তোমার জ্বরে পুড়ে যাওয়া
কপালে কোনোদিন হাত রাখিনি।
বিদেহী নয়, মাটি থেকে খুঁড়ে আনা
খাঁটি সোনা গলিয়ে দিয়েছি নিজের বিরুদ্ধে।
তুমি এখনও বলবে আমার স্পন্দন হাওয়ায়
ভেসে বেড়ায়, যখন গোধূলি গাঢ় হয় ?
আমার কপালে একদিন আঙুল রেখে
চক্রাকার আবর্তে খুলেছিলে দরজা,
তারপর আমার মনে ছিল না মোটেও,
আমি ছুঁয়েছি ধারালো স্বর, যেখানে
গতকাল একটি মাছি আহত হয়েছিল।
আমি ছুঁয়েছি রুক্ষ চামড়া, কতগুলি শীতল
শ্বাস আমি বাঁচিয়ে রাখি অন্তিম সময়ে...
তোমার স্রোতের উপর নামে অকাল তুষারপাত...
অলংকরণ - সুধাংশু বাগ
••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••
No comments:
Post a Comment