খুকু ভূঞ্যা’র কবিতা -
∆
আমাদের জীবাশ্মগুলি
দূরে ওই মেঘের সঙ্গে আমার মিইয়ে যাবার কথা ছিল
বৃষ্টি এনে দিল মাটির কাছে
ভেবেছিলাম মাটি আমাকে শুদ্ধ করবে
জন্মের যত ক্ষতচিহ্ন সব মুছে দেবে
মাটি বিষ খেয়েছে,যেন সতীশের বউ
গজলা ওঠা বুকের ভেতর জাপটে ধরে বলছে এই নাও আমার আত্মহত্যা
ভেবেছিলাম কোঁচড় ভর্তি ঘাসের মত কোমলতা দেবে
সেই তো তুমি মৃত, আমি মৃত
আমাদের জীবাশ্মগুলি মিছিলে মিছিলে চিৎকার করছে
এবার সত্যযুগ আসবে
∆
নিস্পন্দ
পৌষের চাঁদের দিকে তাকিয়ে ভাবি আমাদের মৃত আবেগগুলি ঝরে পড়ছে নিঃশব্দে
যেন সদ্য বিধবা নারীটি সাদা কাপড় পরে তাকিয়ে আছে সর্ষে ক্ষেতের দিকে
পৃথিবীর ঘরে ঘরে শঙ্খধ্বনি মুছে গিয়ে মৃত্যুসফেদ সুর বাজছে ঝরা পাতায় ঘাসে ঘাসে
আমি কখনও চাইনি আলোর শব বুকে নিয়ে অশৌচ পালন করি
অথচ আমার স্নায়ু শিরায় গোধূলির পাণ্ডুলিপি
কারা ছায়া ওড়ায় শোক ওড়ায়
আমি মৃত জোসনার মত ক্রমে সাদা হয়ে যাই
স্বপ্নছাওয়া উঠোনে পড়ে থাকে পৌষের নিস্পন্দ অঙ্গীকার
∆
ইচ্ছের কলহ
প্রত্যাশাগুলো একা হয়ে যাচ্ছে
যতবার ভেবেছি অনেক্ষণ আজ আকাশ দেখব
হঠাৎ পাখিটি পথ হারিয়ে জানিয়ে যায় অসীমেরও দুঃখ আছে
মৃত্তিকার ওমে যে ঘাস সুবাসিত
তাকে কোলে নাও, আঁচল খোঁজে চাবির গোছা
কতদিন ভেবেছি সোনালী স্বপ্নের মত মুক্ত হব
লাশ হত্যা খুন অথবা অপরিনত বধূর নিরুচ্চার চোখে ডুবে যায় গোপনে জমানো কোজাগর
এজমালি হয়ে যায় সুখ ইচ্ছে আকাশ
সবই খোয়া যায়
সবই রয়ে যায় এই জীবনে এই শরীরের
অভিন্ন ছায়ায় ছায়ায়
অলংকরণ - নিশিপদ্য
•••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••
No comments:
Post a Comment