কবি তাপস বৈদ্য এর কবিতা-
১।। ∆ আস্থায়ন ∆
আবহমানের সংস্কারে প্রেম এক মন্দির।
প্রবেশ-পথে আস্থা ও বিশ্বাস দুই দ্বাররক্ষী,
আর গর্ভগৃহে তোমার আবাস চিরকালীন।
আস্থা অর্জন ও বিশ্বাস ভঙ্গের টাগ অব ওয়ারে
আমি রেফারি সেজে বাঁশি বাজাতে ভুলে যাই।
ভালোবাসার অন্তরতম সত্যের ভিতর
বিশ্বাস জাগানিয়া সুর রপ্ত করতে চেয়ে
তোমার শরণাপন্ন হলে তুমি পাথর হয়ে যাও।
আমি নীরব শ্রোতা হয়ে শুনতে থাকি :
'পাষাণের বুকে লিখ না আমার নাম'।
২।। ∆ আত্মায়ন ∆
জঙ্গলের উদাস হাওয়ায়,
পাতা-মাড়ানো পথের গানে যখন
তোমাকে নিয়ে হৃদয়ের কাছে যাব,
তখন চোখ ছাড়া কোনো অলঙ্কার
তোমার শরীরে থাকবে না।
চোখই তো সেই দরজা
যার সামনে আলোর সাগর,
আর পিছনে অন্ধকারের তুমুল বৈভব।
সেই আঁধারমহিমায় তোমার আমার
দেখা হওয়া মানেই আত্ম-অনাত্মের মিল।
৩।। ∆ বর্ণায়ন ∆
সৌন্দর্যর জন্য রঙের কাছে ঋণ স্বীকার করি।
রংদহন ও রংসহনের বেদনক্ষেত্রে অদৃশ্য সেতুর
নিজের হাতেই ভাঙা ও গড়ার বরাত আছে বলে
রংযাপনের প্রতি পলের হৃদঘাতে প্রেম টের পাই।
প্রেম আর কিছু নয়, শুধু কল্পলোকে তোমাকে
বারংবার না-পাওয়া ও হারানোর হৃদয়-সন্তাপ।
4.
প্রেমায়ন
তা প স বৈ দ্য
লুকানো পথের হদিশ জেনে নিয়ে
তোমার খোঁজে মনাঞ্চলে বেমালুম ঘুরি...।
সেখানে মনদেবী ও তোমার মিশে যাওয়া অস্তিত্বের আবহে যে গান বাজতে থাকে
হৃদয়ের মর্মরে সেটাই সত্যি বলে মেনে নিলে আবছা হয়ে আসে তোমার স্নানের দৃশ্য। এখানেও তুমি নিরাভরণ, শুধু আকাশের মতো একটা মনই তোমাকে সালাঙ্কারা করে রেখেছে।
অনেক অর্থ-অনর্থের মাঝে প্রেমযাপন শুধু
তোমার পথের অন্ধপর্দা সরিয়ে যেতে থাকে...।
খোঁজ অব্যাহত রেখে জীবনাট্যের কোলাজে
শুধু প্রেমের জন্য রঙের কাছে ঋণী হয়ে যাই।
৫।। ∆ অপেক্ষায়ন ∆
অপেক্ষার দুটো দিক--
তার একপাশে যে তুমি আছো
তা বলার মধ্যে এখনও
নতুনত্ব খুঁজে পাই বলে
আমার নাবিক স্বভাব আর গেল না।
প্রেমিকদের হাতে পারানি থাকে না।
থাকলেও থাকে জীবনের কিছু
সহজ বাউন্ডুলে বোধ।
খেয়া নৌকা তোমার।
এখন বলো তা ছুঁয়ে দেখব কীনা।
অলংকরণ - মেহবুব গায়েন
°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°
তাপসায়ন বড়ই সুন্দর ।
ReplyDeleteঅনবদ্য
ReplyDelete