কবি নীপবীথি ভৌমিক এর কবিতা-
১.
∆ রাগ - পরজ ∆
এই যে এতো বাতাস, আকাশ জুড়ে আগুনের উৎসব
খুন মাটি গান...
পাতা চিনে নেয় আমাদের এভাবে। কথারা মৃত্যু হয়ে নামে যখন নীলাভ দীঘির জলে
পরিত্রাণ হয়ে আসে, সুর বুকে রেখে
গাছের সাধিকা
আমাকে উৎসব এনে দাও আবার। শয্যায়
শর সাজিয়ে।
এ বসন্ত মিথ্যে নয় কখনো,
শুধু বেঁচে থাকার অধিকার ছাড়া।
২.
∆ বসন্ত ∆
বসন্ত আসলে রং বদলে যায় ঘরের। চুন প্যালেস্তারা ছেড়া জামা পরা দেওয়ালরা জেনে যায় মাটি আর আকাশের তফাৎ।
ক্ষীণ হয়ে আসে ক্রমশঃ
সন্ধ্যা দীপের আলাপ
খোলা ছাদ জানে জীবন মানেই
খইফুল আর চন্দনের গান
বসন্ত আসলে
আমাকে আমার চাইতে চোখে হারায় না কেউ।
৩.
∆ চোখ ∆
আশ্চর্য নদী বয়ে যায় প্রতিদিন
জীবন প্রহরে
যতটা খরোস্রোতা ভেবেছিলাম তাকে, সময়ের শান দেওয়া ঘড়ির ঘায়ে ভোঁতা হয়ে যায় আজ,
আকাশের গায়ে মেঘেদের ঘরবাড়ির গল্প - কথা লেখা হলে কি নিজেকে চেনা যায় আর ?
অবিশ্বাসী প্রশ্নগুলো উত্তর হাতড়ে মরে তাই
এ জীবন ভাঙা পতঙ্গের ন্যায়। প্রাণ বাঁচে শুধু
ধিকিধিকি আগুনের নিয়মে।
চোখ ফেরালেই সমস্ত সকালকে রাতের খাতাতেই
পড়ে নেওয়া যায় অন্ধ বিশ্বাসে।
৪.
∆ খেরোর খাতা ∆
সন্ধ্যা পেরিয়ে যায়। আকাশ চাদরের গায়ে তারারা জেগে উঠে সদ্য ঘুমের অভিনয় ভেঙে
আমরা খুলে বসি হিসেব নিকেশ।
খুলে বসি খেরোর খাতা।
এক ঘুম থেকে আর এক ঘুমে পাড়ি দিতে
গেলে কত যে রাস্তা পড়ে দিন আর রাতের গল্পে,
তাকে জানতে জানতে জীবনই প্রবঞ্চক হয়ে যায়
খইফুল আর সাদা ছাইয়ের মধ্যবর্তী সঙ্গীতে
আমরা পথ হাঁটি। হেঁটেই যাই।
খেরোর খাতা তো আসলে মিথ্যে প্রবঞ্চনা।
৫.
∆ রেস ∆
রেস মানেই কালো ঘোড়া নয় জেনো
হরিণও তো হতে পারে ,
আমার এই দৃষ্টি ছুঁয়ে যে সবুজ ঘাস ছুটে যায় পায়ে পায়ে রক্ত - ঘাম- বমি গন্ধ নিয়ে
তার গলায় একটা শিকল বাঁধা থাকে দেখ,
যার শবদেহ শুষ্ক হরিণরূপী ।
রেস মানে মায়াবী হরিণও নয়...
রেস কালো হরিণ। কোনো হাত ছুঁয়ে নয়,
নয় কোনো তেল মাখানোর অভিলাষ।
অলংকরণ- মেহবুব গায়েন
০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০
No comments:
Post a Comment