১.
∆ হৃদয় জংশন ∆
কিছু দুঃখ দাঁড়ানো আছে জংশনে
সিগনাল পেলে দৌঁড়ে যাবে
ভুল গন্তব্য ফিরিয়ে দেবে আবার
ছেড়ে যাওয়া জংশনের কাছে
কখনোই ভালো সিগনালম্যান ছিলাম না
কোনোদিন লাইনম্যান হয়ে পৌঁছে যাবো
ভুল করে জংশনে দাঁড়ানো দুঃখের সাথে
তোমার দরোজা খোলা রবে ট্রেনের দুপাশে
যেমন থাকে আগমন ও প্রস্থানের আঁড়াল
তবুও আমি প্রকাশ্যে বাড়াবো হাত
একান্ত কিছু দুঃখ লুকোবার
জংশনে জংশনে অনেক দুঃখ কুড়িয়েছি
স্টেশনে নামাবো বলে; তুমিহীন এ পৃথিবীর
কোথায় আছে সেই সে স্টেশন?
২.
∆ রক্তছায়ার হাত ∆
হাত
পানিরূপ লালে ভিজতে ভিজতে কবেই
মেঘগুলো সাদা থেকে লাল থেকে কালো
হতে হতে একদিন সবুজের দিকে চেয়ে
নিঃসঙ্গ ডাহুকের মতোন ডেকে ওঠে
প রি ত্রা ণ...
স্বপ্ন জেগে ওঠে
রাতের ঘুম থেকে বুকের ওম-খাঁচায়
ধনুক ছিলায় বাণ গেঁথে গেঁথে একদিন
শত্রুর বুক ভিজিয়ে দিচ্ছি এই হাতে
পরম আদরে মাটির প্রলেপের মতোন
নিজের বুক জ্বলে গেলে কেউ শতবুকে
জ্বালাতে পারে দহনের সুখ গোপন অসুখে
উ ত্থা ন...
পতনের শব্দ
চমকে ওঠে বৃক্ষের খোলস
তক্ষক ডেকে যায় উত্তাপ দুপুরে একা
রক্তের লালসা ঝরে; দিগন্তজুড়ে ভয়ে
ডালে ডালে শকুন চেয়ে থাকে ডানামেলা
অন্ধ সময়ের ঢের আগে; অহেতুক শান্তনা
ঘুরে ঘুরে ফিরে আসে রক্ত-মাংসের ঘ্রাণে
হা হা কা র...
পেট পুড়লে
মন ও মগজে জ্বলে ওঠে প্রতিবাদ
থু মেরে দুরে ফেলি মিথ্যের বৈভবে আঁকা
আঁকা-বাঁকা মানচিত্রের জ্বলজ্বলে সাদাভাত
প্র তি বা দ...
৩.
∆ হঠাৎ নিশ্চুপে ∆
তুমি ছিলে?
তুমি কোথায় ছিলে?
তুমি কখন ছিলে?
কেনো ছিলে?
পৃথিবীর পথে, ঘাসের সবুজে,
রক্তবর্ণ ঠোঁটে, নীল জমিনে সাদার ভেতর
সকালের কোমল রোদে, বৃষ্টির ভেজা দুপুরে
শেষ বিকেলের সোনালী আলোয় কিংবা
কিশোরীর চুলখোলা কোনো স্নিগ্ধ বাতাসে
বসন্ত দুপুর, শ্রাবণ বিকাল, শীতের ভোর
রাতের অন্ধকার, সুবিশাল উদ্যান
কয়েকশত বছর খুঁজেছি তোমায়
তুমি ছিলে?
তুমি কোথায় ছিলে?
তুমি কখন ছিলে?
কেনো ছিলে?
তুমি কেমন ছিলে?
একবার; তোমাকে একবার দেখবো বলে
ফিরিয়ে দিয়েছি চাঁদমাখা আদরের ঘুম
শুধু তোমাকে দেখবো বলে
শৈশব লাটিমে ঘুরেছি দুপুর-বিকাল, সন্ধ্যা-সকাল
একবার; তোমাতে হারাবো বলে
বিশ কোটি ভালোবাসা ফেলে ফিরে আসি বারবার
তুমি এসেছিলে; নিশ্চই এসেছিলে পৃথিবীতে
একদিন
তুমি এসেছিলে; নিশ্চই ভালোবেসে অন্ধকারের
দিন
তুমি এসেছিলে; নিশ্চই দিনের কোলাহল ফুরালে আবার
দাঁড়াবে এসে শিয়রের উত্তাপে একদিন
৪.
∆ অনন্ত বিদায়ের মিছিলে ∆
লাশের মিছিলে মানুষ হেঁটে যায়
মানুষ হেঁটে যায়-- বিদায় বিদায়
কালেমায়, হরিবোল, ঈশ্বরের নামে
লাশের মিছিলে মানুষ হেঁটে যায়
অগণিত ক্লান্ত দিনের কথা হেরে যায়
হেঁটে যেতে যেতে মানুষের পা
তবুও ফুরোয়না পথ; দিগন্ত উদার
রোদ-বৃষ্টি-শীতে মানুষ হেঁটে যায়
মানুষ হেঁটে যায় কবরে-শ্মশানে
হেঁটে যেতে যেতে বিদায় জানায়
অন্তিম দিনের ব্যথা ভুলে ফিরে আসে
শোকের উদোম তৃষ্ণা ভেঙে
মৃত্যুর লেলিহান শিখা জ্বেলে
সৃষ্টির অপার লীলায় প্রস্থানে মিশে
লাশের মিছিলে মানুষ হেঁটে যায়
চোখর মিছিল দেখেনা আত্মার প্রলাপ...
৫.
∆ রঙছবির ধাঁধাঁ ∆
আচ্ছা, তোমাদের সুন্দর মুখোশের পেছনে
লুকিয়ে থাকা মনটাও কি সুন্দর?
তোমরা যা নিঃশব্দে উচ্চারণ করো
তার মাঝে কি কল্যাণ লুকিয়ে থাকে?
নাকি অন্তর্জামির সাথেও অভিনয় করে যাও
সুনিপুন মিথ্যের অভিনব কৌশলে?
তবে কেনো পৃথিবীকে এতো বিষাদ মনে হয়
তবে কেনো পৃথিবীর প্রাণ মানুষে এতো ভেদাভেদ?
পুড়ে পুড়ে রক্তাভ লাল বর্ণ ধারণ করে দৃশ্যত
সবুজ
পুরোটা আকাশ ছেয়ে যায় ধুমায়িত চিৎকার
পাখিপোড়া আর্তনাদে ঘুম ভেঙে ছোটে মানুষ
ধ্বংশ হতে হতে মৃতপ্রায় আশ্রয় চেয়ে থাকে
করুন চোখের কান্নাভেজা ছবির রঙদৃশ্যে
ক্যামের ক্লিক ক্লিক ছন্দ ভাসে নির্মোহ বাতাসের
গায়ে
তোমাদেরও কি কান্না পায় হে দৃশ্যশিকারী
No comments:
Post a Comment