বসন্ত বৈষ্ণবী পর্ব-৯
গৌতম কুমার গুপ্ত এর কবিতা -∆
নীল উপাখ্যান
ধনুকে ভাঙোনি পণ অগ্নিতেজ সমান
সেও তো মোহজাত দ্রবণের ঐচ্ছিক ফেনা
চোখের ওপরে ভাসাও কমনীয় শ্রীমুখ
আমি তাকে ঘৃণা বলি না, বলি প্রিয়তা
অঙ্গীভূত করি তাই সমূহ ছাই ও ব্যথা
উড়ে যায় অসম ও তফাত প্রাচুৃর্য ভিন্নতা
ভালবাসা যদি এভাবে উচ্চারিত হয়
জলাশয়ের অথবা ভিজে যাওয়া শব্দে
মিশে যাবো তোমাতে প্রাণিত দৈব বৈভবে
আমার যা ফেলে দেওয়া ধূলো অথবা কাদা
কুড়িয়ে নেবো, শুধু তোমাকে নয় ঈশ্বরী
আমাকেও ভালবেসে নিজস্ব জলীয় সহজে
এও তো ঐশ্বরিক ভালবাসার অর্জিত মেধা
দেহে মনে মিলে যায় আমার সব অর্জিত দ্বিধা...
∆
প্রাক্তন
অভ্যাসের ঘর থেকে বের হয়ে গেলে
পড়ে থাকে অবশেষের অংক
শূণ্য চেয়ারে বসে আছে ছায়া
ছায়া দেখছে হাসছে কথা বলছে
শূন্য দৃষ্টিতে অস্তরাগের বিকেল
পাখিদের ফিরে যাওয়া সাঁঝবেলা
এখনো পড়ে আছে খাতা পেনড্রাইভ
কাগজপত্র ফাইলের পুরোনো গন্ধ
চেনা জানালার পর্দা পাইনগাছের সারি
ঝাউ দেবদারু দেয়ালের গায়ে ক্যালেন্ডার
অপরিচিত ঠেকছে ফিরিয়ে দিচ্ছে তাকে
পরিচিতের মাঝখানে এক আগন্তুক সে
দেনা পাওনার হিসেবে পড়ে আছে
শ্যাওলা চোখের অর্ন্তভেদীর দৃষ্টি
পরাজিত নয় তবু নিয়মনিগড়ে বাধা
পাঁজরের ইতিহাসে শ্মশানের হাড়গোড়....
∆
মধু-সংক্রান্তি
এই য়ে বটবৃক্ষের ছায়া এই যে অশ্বত্থ জারুল
এই যে হিরন্ময় হিরণ্যরেতা
এই য়ে হরিতকী শাখার শুষ্ক ভগ্নাংশ
ওই য়ে ছিন্ন পালকের এক ফোঁটা শোণিত
ওই য়ে নীল অম্বরের ভগ্নাংশ মেঘ
এই যে পুষ্করিণী অববাহিকা এই যে তৃণগাছের পত্রমুকুল
এই য়ে সুশোভন যুবা্ এই যে সুলোভিত কপালের টিপ
ওই যে মহাকাব্যিক মোহমায়া ওই যে জাগতিক প্রেম
ওই যে মধুচৈত্রের শেষ বেলার লগ্নপ্রহর
বড়ো আনন্দে রেখেছে রভসের শ্লীল
আমি তার কথাকলি তুমি তার পত্রভাষ
আমি তার যাজ্ঞিক তুমি তার তপস্বীনী স্বাধ্বী
আমি তার আত্মিক তুমি তার অনুব্রতী
এই যে বৃন্দ সুললিত সুরম্য এই যে আমোদিত আহ্লাদ
এই যে প্রবুদ্ধ সহজাত চোখের অনাবিল ছায়া
এভাবে ক্রমশঃ ছড়িয়ে পড়তে পড়তে..........
অলংকরণ - নিশিপদ্য
•••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••
No comments:
Post a Comment