দেশিক হাজরা’র কবিতা -
[] নতুন []
শিষ ভারে শশি নূর ঢলে পড়ে কুমুদের কোলে
পৌষের রোদ্দুর পিছু নেয় কুয়াশা সরিয়ে।
আঙুলের প্যাঁচে সাদা খড়ি মাটি, আঁকা হয়
লক্ষ্মীর পা, দেখে বৈরাগী। নবান্নে নব চাল
মিঠে গুড়ে মাখা। ভোর হলো দোর খোলো,
দাও মা ভিক্ষা।
নতুন এসেছে উঠোনে লুটোপুটি খেতে
কোঁচড়ে বাঁধা লাল মুড়ি, সাদা গুড় পিঠে।
[] গাঁ []
শহরের কোলঘেঁষা বন্ধু এক উদাস
থাকে সে সেখানেই, আমাদের ঘর
পানে তাঁর মন করে বাস। শহরের
অনেক দূরে আমাদের বাড়ি। তালগাছে
বাঁধা থাকে রসালো পিড়িতের হাঁড়ি
দেখেনি সে তেতুলের বোন, জামপাতা
মোরা ছোট ডিঙি, কালো দিঘির ঢেউ।
পথের পাশে বয়ে যাওয়া বিল
কে জানে সে, ওখানে একা একা কী করে!
বলি তাকে চলে আসিস পৌষের কম্পন ধরে।
তুসু গানে সুর তোলা হিমেল বালিকার মুখ,
দেখাবো কাক ভোরে ডুমুরে ফুল।
মনে তার বড়ো ব্যথা কৃপণ অন্তরে
কোন এ মাঝ রাতে, একা একা শুনেছিল
হেডফোনে 'জীবনানন্দ' বলে যাঁরে
[] বিভাজন []
এসব আলগুছে অহমিকায় আর কষ্ট পাইনা
বরং 'তাহাদিগকে' ভাগবান বানিয়ে তোলার প্রক্রিয়া
অভ্যাস করেছি প্রাতঃকালে। বক্ষে টলটলে দিঘী
একটি ডিঙ্গি পাড় ঘেঁষে বাঁধা। প্লাস্টিকের নিসর্গমূলক
অ্যালবাম খুলে রেখে দরজা দিয়ে হেঁটে চলে যাই
বহুদূর, যদি কিছু পাও নিয়ে যেও অযথা সংকোচে
ফুরিও না বেলা। তোরঙ্গে তোলা আছে উষুদের ফর্দ,
অশ্রুগ্রন্থি, তোলা আছে কিচ্ছু অবহেলা। যা কিছু দুঃখ
শুনিও এই বেলা ওবেলাতে বেলা পরে যাবে। চকচকে
আলো গুলো ধৈর্যহীন, শোনে নাকো কিছু— বলে
এসো দলে যদি চাও উন্নত 'করিতে' শির।
অলংকরণ - কনিষ্ক শাসমল
••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••
No comments:
Post a Comment