Friday, 16 September 2022
কবিতা
Thursday, 1 September 2022
কবিতা
Monday, 15 August 2022
কবিতা
Tuesday, 2 August 2022
কবিতা
তোমাকে আমার আলোয় দেখছি
তোমাকে দেখেছি নিপুণ আবছায়ায় নিটোল হতে প্রতিদিন
ছাপা অক্ষরে খাঁজকাটা নকসায়
জোঁনাকিরা এলোমেলো হয়ে যায়
আমি কোটি জোঁনাকের কবরে আঁধার নামিয়ে এলাম
তোমাকে আনবো বলে, ঝিকিমিক আলো এল ই ডি
প্রেমিকের মতো নির্জন গলি আবেগ
সেলফোনগুলো আলো করে রাখে মুখ
তরঙ্গ উঠে তরঙ্গে ডুবে যায়
তোমাকে ডাকার বেদুইন আয়োজনে
কিছু যোগাযোগ ব্লক্ হল গত রাতে
তোমাকে জড়িয়ে পাগলামি স্বরলিপি
স্তব্ধতা ভেঁঙে হরবোলা হয়ে ওঠে
নিপুণ আবেগে ভেসে থাকে আচরণ
গভীরতা খোঁজে দ্বিতীয় পদক্ষেপ....
২.
∆ ইচ্ছেকুসুম ∆
যেখানে মৃত্যু যন্ত্রণায় পা ডুবিয়ে বসে থাকি তোর আশায়
মাথায় বিলি কেটেদেয় হাইটেনশন শব্দমালা
দাঁতের গোঁড়ায় শিরশিরিয়ে উঠতে থাকে অসহ্য অবহেলা
সেইখানে দু'দন্ড ঘুমোতে চাওয়া তোর নরমে
তোর আঙুলের ভাঁজে অস্বাভাবিক সব বিষাদ কোষ
ভবিশ্য নিয়ে অভ্রভেদী কৌতুহলী আলোচনার গোঁড়ায়
রুট-রড্ হলে আমার কানে ফিসফিসিয়ে বলিস
আমি মন পেতেছি বহু প্রজন্ম আগে-
তোর যন্ত্রণা আগলাবো বলে দু'হাত ভরে
যে রুগনো পায়ে ভর করে আকাশকুসুম
ভেবে চলি, গেঁথে চলি অসহ্য ফুলমালা
সেসব অলিক ছোটোগল্পের তলপেটে পোঁতা
আছে দু'চারটে মেহগনি বীজ
তুই ওম দিয়ে বড় করিস একদিন
সেই সকল ইচ্ছেকুসুম মহিরুহ
৩.
∆ একা সাপ আর আমি ∆
নিচু গলা ব্যবহার করে সুরঙ্গে ঢুকেপড়ি
তারপর কাশবন দূরে পদ্মডোবা
জড়িয়ে থাকে ডোরাকাটা শীত
উত্তুরে মেঘ ডাগর চোখে ফ্যানটাসি ফেরি করে
আলোর ঘোরে বুঁদ হয়েগেছি
সাঁতরে এগনো বহুদূর পথ
মৃত চত্তরে হাওয়া দেয় ঝাউপাতা
বালিয়াড়ি চাপা গন্ধেরা ঘুম ছিঁড়ে খায়
তবু অঙ্কুর ঊর্ধ্বগামী স্রোতে
গা ভাসিয়ে জীবন দোলায় আজও
Wednesday, 27 July 2022
কবিতা
আষাঢ়ে আশ্বিন যদি ভাসে
সাদা মেঘগুলো ঘুরে ঘুরে কাঁদে যদি
ছাদের আলসেয় প্রাণ ফাটিয়ে
হেসেছে যে বটচারা এতদিন
আজ ম্রিয়মান হলে আর
মৃত্তিকা যদি পাথর পারা
সে প্রত্ন প্রস্তরে
দেখো পাঁজর জ্বালিয়ে হোমাগ্নি জ্বেলেছি তবে।
আমিই ঋত্বিক, হোতাও আমি
মন্ত্রে উচ্চারণ আঁকি—
ওম! স্বাহা!
হে অগ্নি! আমাকে খাও!
জলহীন জলাশয় যদি খায় সকল পঙ্কজ আজ
আষাঢ় বোধনে তবে
উপড়ে আনি নিজের আত্মা!
এসো হে সজল মেঘ—
আহুতি শেষে বৃষ্টির জলে
পবিত্র যজ্ঞাগ্নি পুণ্যে যেন জাগে !
সে পুণ্যাহে, এই দেখো ছাই ভেদ করে
জন্ম নিই নতুন উদ্ভিদ আমি
জীবনের সংরাগে!
২.
∆ খোঁজ ∆
ধুলো উড়িয়ে হাঁটছি একা
হাঁটছি হারিয়ে যাব বলে
হাঁটতে হাঁটতে একদিন বুঝলাম
আমি খুন হয়ে গেছি
তবুও হাঁটছি...
ওরা আমাকে খুঁজল
পথে
নদীর নিরালা ঘাটে
গাছের ছায়ায়
গোধূলির খুনখারাপি মায়ায়
রক্তের আঁশটে গন্ধে
নিহিত লবণে তার
জনহীন শ্মশানে, কবরে
এমন কি আমার একলা কবিতায়—
কোথ্থাও খুঁজে না পেয়ে
হাল ছেড়ে দিল ওরা...
সেই থেকে খুন হয়ে যাওয়া আমি
হাঁটছি একা, ধুলো উড়িয়ে, ধুলো উড়িয়ে
আর খুঁজছি সে খুনিকে—
হয়তো নিজেকেই!
বহু দূরে কাজলরঙা মাঠে তখন
জেগে উঠেছিল হরপ্পা, সান্নাটা ভেঙে!
৩.
∆ প্রেম ∆
ভালো আছি ভালোবাসাহীন !
বেদনাও নেই
আনন্দও নেই কোনো |
শুধছি শুধু জন্মের ঋণ !
ভালোবাসি--
এ কথাটি দু ঠোঁটে আর
আঁকবো না কক্ষনো !
Thursday, 21 July 2022
কবিতা
১.
∆ অন্ধনির্জনতা ∆
"There are more things in heaven and earth than are dreamt of in your philosophy."
Hamlet : Shakespeare
অন্ধনির্জনতা থেকে একটু এগিয়ে যাও দেখবে একটি লোক ঢেউয়ের মতন আকুল হয়ে বাঁচার আশায় দাঁড়িয়ে আছে।
এখন আর একটু এগিয়ে যাও,
দেখবে ওটা আসলে লোক নয়, গাছ।
এইবার তুমি দৃষ্টিগুলোকে তীরের ফলার মতন ছুঁড়ে দিতেই দেখবে ও আসলে গাছ নয়, নদী!
তুমি দেখতে না পারার ব্যর্থতা দিয়ে প্রশ্ন করবে,
তা আবার হয় নাকি! গাছ কখনও নদী হয় ?
তুমি যুক্তি দেখাবে, পৃথিবীর লুপ্ত ইতিহাস থেকে তর্ক তুলবে আঙুল নাচিয়ে, লজিকের বই খুলে পাতার পর পাতা উল্টাবে।
কিন্তু বিশ্বাস করো আমার অন্ধ-মহাকালে যে বিষণ্ণতা জমে আছে তা দিয়ে আমি বোঝাবো
কীভাবে একটি লোক একদিন গাছ হয়ে নদীর মতন ভেসে যায়।
গাছের ভিতরে কোনো মেঘ থাকেনা। জানো ?
থাকে শুধু সাদা-কালো বিশ্বাসের বৃষ্টিধারা।
জীবনের সকল মৌনতা সিঁড়িভাঙা জলে ভাসিয়ে দিতে হয় নদী হওয়ার আগে।
কারণ, ঈশ্বর বইতে প্রদীপের সরলতা লাগে।
তুমি ভাবছো। ভাবছো, কীভাবে এতসব জানলাম ?
কারণ, আমিই তোমার বুকের পাশে বসে থাকা প্রথম পুরুষ।
২.
∆ মৃত্যুহীন প্রাণ ∆
"কবিকে দাঁড় করিয়ে দেওয়া হয় রাইফেলের নিচে
তারপর তার কফিন বাক্সের ওপর খোদাই করে দেওয়া হয়- এটা দেশদ্রোহীর লাশ
একে স্পর্শ করোনা"
-প্রবীর আচার্য্য
যে ঘরে আগুন লাগে তাতে বিষয় পোড়ে;
মানুষও পোড়ে কখনো কখনো।
আবার কখনো ছেলের চিতায় বাবাও পোড়ে নীরবে।
প্রশাসন আসে সহানুভূতির ঘন্টা বাজিয়ে।
তখন এমন এক ঝড় ওঠে যার ভিতরে বাতাস থাকেনা।
আঁধারের পেটে জ্বলতে থাকা ক্ষুধার আগুন ইতিহাসকে ডেকে আনে।
আর ইতিহাস আসে কার্তুজ পাল্টাতে।
কিন্তু ইতিহাসের পাতায় আগুন লাগলে?
পোড়ে দেশ,
পোড়ে সভ্যতা,
পোড়ে সাহিত্য-সমাজ-সংস্কৃতি।
কেউ আসেনা প্রতিবাদের ঘন্টা বাজিয়ে।
পুড়তে পুড়তে বদলে যায় মানুষ।
পুড়তে পুড়তে বদলে যায় কুতুবমিনার-তাজমহল-ধর্ম-শিক্ষা-আইন-আদালত।
সব পোড়ারই গন্ধ ভাসে বাতাসে।
এই যেমন দুধ পুড়লে দুধের,
ভাত পুড়লে ভাতের,
প্রাণ পুড়লে প্রাণের।
তবে, ইতিহাস পুড়লে কোনো গন্ধ ভাসেনা বাতাসে।
এই ভাবেই হারিয়ে যায় বহু যুবকের ঘুম, এই ভাবে হারিয়ে যায় বহু যুবতীর লাশ।
অলংকরণ- মেহবুব গায়েন
•••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••
Saturday, 16 July 2022
কবিতা
প্রতিবার আমি ভাবি, আমার হাত থেকে আর কোনও
খাজা কবিতা বেরোতে দেবো না, এই ভেবে সরে আসি
ধ্বংসস্তূপ হতে। জানালার পর্দায় গিঁট বেঁধে তাকে
অলীক এক তানপুরার আকার দিয়ে গরাদে ঝুলিয়ে
দিই গান। একটু আধটু বই পড়ার অভিনয় করি। এদিকে
অভিনয়েও পটু নই, সে হিসেবে চটচপ অভিনয় ছাড়তে
বাধ্য হই। ওপারের অমোঘ ডাকের মতো করে ডাক আসে
দুপুরে ভাত খাওয়ার। হাতে ভাত মাখতে মাখতে কিছু খাজা
কবিতা আসে চচ্চড়িতে। তাদের আমি অপেক্ষা করাই।
হাবিজাবি ইতর-ভদ্র শব্দগুলো এত সহজে নিজেদের
হক ছাড়ে না। থালার পাশে ঘোরে, অধিকারের দাবীতে।
কিছুতেই বোঝাতে পারি না ওদের, অসময়ে
শব্দের গতিবেগ নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা আমার নেই।
২.
∆ জুলাই সিরিজ (২) ∆
সে রূপকথারা রাতের চাঁদ থেকে নেমে আসে। ছুটে আসে কিনা জানি না। যখন দূরে কালো নারকেল গাছের ফাঁক দিয়ে আলোময় জানালাটা নিভে যায় তখন বয়সের ধারনায় কেমন যেন মনে হয়। মনে হয় এবার আদরও নামল বুঝি ও জানলা বেয়ে রূপকথার দেশে। রাজপুত্তুর আর রাজকন্যার রাতপোশাকে ক্ষণিক বিরতি।
একটু পর দেখি টর্চ জ্বেলে, চাঁদ হাপুস নয়নে রূপকথা খুজতে বেরোয়। তার পা টলে। ঝিঁঝিঁ পোকারা আর নাইট ডিউটি করবে না বলে হল্লা করে। তাদের সাথে জোনাকিরা তাল মেলায়। এরোপ্লেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ
ঘোষনা করে। কোনো অ্যারিস্টোক্র্যাট মেয়ে মশা নাকি বস্তির ঝি মশা আমায় কামড়াতে ছুটে আসে ঠিক বোঝা যায় না।
গ্লাস আর বোতলের ইগোর লড়াই তৃতীয় বিশ্ব যুদ্ধ পর্যন্ত গড়ায়। ‘আত্ম সম্মান নিয়ে ফিরে যাওয়াই ভালো’ এই বলে গ্লাস, ড্রাঙ্ক অবস্থায়, হাত থেকে পড়ে আত্মহত্যা করে। এদিকে জানলা দিয়ে আদর শেষে ফিরতে
গিয়ে রূপকথার পা কাটে।
জীবনে সবই দুর্ঘটনা — এই বলে আমি সব কেস ডিসমিস করে দিই জোর করে।
৩.
∆ জুলাই সিরিজ (৩) ∆
গড়গড় করে বলে যাওয়ার মতো কিছু কথা রিহার্স করছি মনে।
কমবয়সের প্রেমের মতন কিছু একটা রোগে ধরেছে হয়তো।
তাতে বুঁদ হয়ে আছি। উড়ে যাচ্ছি। চারিত্রিক স্খলন দেখছি
আয়নায়। এত লুচ্চা একটা মানুষ আমার ভেতরে থেকে এতদিন
বিড়ি ফুঁকছিল, খেয়ালই করিনি। হয়তো সে দেওয়ালে ঠেস দিয়ে
দাঁড়িয়েছিল, আমি পাশ কাটিয়ে গেছি, ভদ্রতার দোহাই দিয়ে।
হায়রে জুলাই,এমন তরতরে বৃষ্টি হচ্ছে, দেবী গলে গলে পড়ছে,
শক্ত কাঠামো ফ্যালফ্যাল করে চেয়ে আছে, ওকে নগ্ন করল জুলাই।
স্যাঁতস্যাঁতে ভীরু উচ্ছিষ্ট আবহাওয়া, প্রেম। বয়স যত বাড়ছে,
ততই আত্মার নগ্নতা যে একটি উদযাপনের বিষয়, তা জানছি।
নিজের ভেতরে এতদিন যে যীশুর আরোপিত মহিমাগুলো
দেখতাম, তার ভ্রম কেটে গিয়েছে। দুষ্ট, লোভী, শয়তান,
ইতর, জানোয়ার ও অপরাধপ্রবণ যে মানুষটা বেরিয়েছে
তাকে আমি গড় করি। তুমিই আমার লুক্কায়িত মানিক।
গচ্ছিত রত্নাকর। নির্লজ্জ এক মাইডিয়ার মানুষ।