কিশোর নাগ এর কবিতা -
[] সাঁওতালি জন্ম
এই দেখো রাস্তা চলে গেছে তীব্র দিনরাতের
সময় ধরে নক্ষত্রের প্রান্তে
দ্যুতির অনুগমনে ব্যাপ্ত তিমিরের দরজায় হাত
রাখি শব্দহীন
সোনালি ফসলের ঘ্রাণে বাজে ঘামের এস্রাজ
বাঁশি বাজে বাঁশের কোটরে
বাসন্তী বাতাসে ভাসে মহুয়ার গন্ধ
এটা কোন গল্প নয়
এখন স্থাবর-জঙ্গম জুড়ে ফেলে যাওয়া
যুদ্ধক্ষেত্রের মতো নিরীহতা
এই যে গালে হাত দিয়ে বসে আছো তুমি
ভেতরে একটা সাঁওতালি জন্ম অনবরত ঘুরছে
[] ক্যানভাস
সময় কেমন করে তার আদল পাল্টায়
এক এক মুহূর্ত চলে যায়
ঘ্রাণে ঘ্রাণে রুপোলি বিন্যাসে সূর্য হাসে আকাশে
জীবনানন্দের সোনালি ডানার চিল
ঢাল খায় বাতাসে
গভীর নগ্নতার মতো খুলে যায় সব আচ্ছাদন
আলোরিক্ততায় আবাসিক পাখিদের আচমন
বন্দরের নি:সঙ্গতা থেকে বকেরা উড়ে আসে
ঝরাপাতা থেকে থেকে নাচে আর হাসে
এটা কোন গল্প নয়
দগ্ধ শব্দের জয়
বারান্দা পেরিয়ে তুমুল বসতি গড়ে ওঠে বুকে
মাধবীলতাও দেখে ঝুঁকে
আজ-কাল-পরশুর আভাস
শিল্পী তুলি নিয়ে এঁকে চলে প্রস্তুত ক্যানভাস
[] একটি অমল উপলব্ধি
প্রত্যাশিত ফলটুকু সবসময় মেলে না
কয়েকটুকরো ফানুস ভাসে নীল আকাশে
যদি তন্দ্রাচ্ছন্ন স্বপ্নের নীল পরীটা
ডানা মেলে উড়ে যায় স্বপ্নের ভেতর
খুঁটে নেয় সোনালি গমের দানা
(অবশ্য কে চায় এমন পাগল, কবি আর প্রেমিক ছাড়া)
ইচ্ছে-পূরণ ভীষ্মের মতো যদি হতো
পাতলা ওড়নার মতো পর্দা চোখের উপর
'আয় ঘুম আয়, ঘুমপাড়ানি মাসি পিসি...'
ফুরফুরে হাওয়া দিচ্ছিল এবং শেষ রাতের চাঁদ
দেদার বিলচ্ছিল আলো হরির লুটের বাতাসের মতো
এরই মাঝে ঘুম এলো নির্বিবাদী
অশরীরী নিরুদ্বেগ ইচ্ছেগুলির ধ্যান সমাধি...
অলংকরণ - কনিষ্ক শাসমল
•••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••