Thursday, 13 August 2020

কবিতা

শাপলা পর্ব-১৩

কবি দুঃখানন্দ মণ্ডল এর কবিতা-






১।।    ∆  হে প্রেম ∆



তুমি যাকে অপেক্ষা বলো
আমি তাকে অনুরাগ বলি।

তুমি যখন অনুরাগের মানে জানতে চাও
আমি প্রেমের কথা বলি।

তুমি প্রেমের মানে খোঁজও অনন্ত আকাশে
আমি তোমার তর্জনী ধরে বলি চলো।

 তুমি বলো তোমার হাতে উষ্ণতা আছে
আমি বলি তোমার চোখে রামধনু আঁকা।

তুমি দেখো রামধনুর মাঝে প্রেমের বৃষ্টিখেলা
আমি বলি খানিক পথ বাকি ঘর বাঁধার।




২।।   ∆ অনন্ত পথ ∆



যুদ্ধ আর জীবন কেমন যেন একটা সম্পর্ক 
জীবনের জন্য যুদ্ধ বা যুদ্ধের জন্য জীবন
জটিলতাগুলো একত্রিত হয়ে উঠে 
শক্তি বাড়ে শত্রুর। 

জয় বা পরাজয় দুই শত্রুর হাতে
আমরা কেউ বলতে পারি না;
তুমি পরাজয় বরণ করো।
অস্বীকার করবে।
আসলে তারও জীবন অধুরা।
কেন না একসময় যুদ্ধ বন্ধ হয়
শূন্য জীবন বিস্তৃর্ণ মাঠ।

জীবন বা যুদ্ধ একটি অবয়ব রেখা
দেহতত্ত্বের সুর ভেসে বেড়াচ্ছে খোলা আকাশে।
             



৩।।   ∆ পুরানো হওয়ার আগে ∆
 


পরিচিত ব্যথা ধীরে ধীরে অভ্যাস হয়ে যায়
আঘাতের পর দ্বিতীয়বার মনে হয় না আঘাতের পরিমাণ। 

একটি পথ সরলরেখা ছেড়ে ভিন্ন পথ ধরে
পরিচিত মুখগুলো নেই অপরিচিত যাত্রাপথে।

দেখা না হওয়ার বিষয়টি নাও থাকতে পারে
নতুন পথ,কিন্তু কথাগুলো খুব পরিচিত-পুরাতন ব্যথার মতো।

আমি এখন অন্ধকারে বৃষ্টি দেখি
আমি এখন তোমার জন্য নয়,বৃষ্টির কথা শুনি কান পেতে।

অভিনয়ের পর্দা সরে যাচ্ছে ক্রমান্বয়ে
মেকআপ তুলি শেষ করতে পারছে না প্রলেপরূপ।

সময়ের সাথে যুদ্ধ করছে দর্শক 
তোমার সাথে দর্শকের দূরত্ব বেড়ে চলেছে তোমার অলক্ষ্যে।




৪।।  ∆ পরিযায়ী ৬ ∆



যন্ত্রণা তোমার, আমার কাছে তোলা 
ঘরে ফেরার কথা পথ অনেকখানি 
 মন অনুভব করে শরীরি ক্লান্তি 
তবু ঘরে ফেরা নিজের মাটির কাছে।  

ভালবাসো বলে ফিরে এসেছো 
কিসের টানে তা জানা নেই
কিসের জন্য দূরত্বের সৃষ্টি তাও জানা নেই
 মাথা উঁচিয়ে দাঁড়িয়ে আছে তোমার হাতে পোঁতা গাছটি।

গোয়াল দুয়ারে বাঁধা তোমার প্রিয় জীবটি ডাক দেয়
ঘরের চাবি হারিয়ে গেছে শেষবার উত্তরী খোলার সময়
এখন তুমি অতিথি,এখন তুমি পরিযায়ী 
 তোমার মাটির কাছে, তোমার জন্মভিটার কাছে।




৫।।   ∆ দাগ ৩৩ ∆



মৃত্যু কি এমন ভাবে আসে! আমার জানা নেই।
আমাকে আষ্টেপৃষ্ঠে বেঁধে রেখেছে ঘুম
আমি স্বপ্নে দেখি মাথার সামনে মৃত্যুদূত অপেক্ষারত
ঘুম ছাড়ছে না, ভোরের আলোও ফুটেনি এখনো
একটু ঘুমতে দাও। কত কথা স্বপ্নে তোমার সাথে
মাথার সামনে অপেক্ষা করছে আত্মাবাহক।

জীবনযাপন শেষ। সময় ধার দেওয়ার কোনো সুজন নেই
দেহটি ঘুমিয়ে আছে। ভোরের আলো পড়ছে জানালা দিয়ে।

এখন আর চেনা যায় না আবছা মুখটা। 
অনেক দিন ধরে জলের গ্লাসটা খালি পড়ে আছে।




অলংকরণ - মঞ্জু হেমব্রম

°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°

1 comment:

  1. কবিতাগুলো ভালো লাগলো। অভিনন্দন।

    ReplyDelete