Friday 31 July 2020

কবিতা

শাপলা পর্ব -১১

কবি সুব্রত সাহা’র কবিতা-






১।।   ∆ প্ল্যাকার্ড ∆



ছেঁড়া আঙিনায় জমাট রক্ত ও চেন খোলার গল্পে রেকাবী
দেয়ালে দেয়ালে পোস্টারিং। মিছিলের মাথা, হাত,
পা, নাভি, রোমকূপ সমস্তটায় লিখে রাখা ওম।
রেখার পাশটায় দেখেছি কাটাকুটি মাধ্যম
                                      ঘুড়ি ঘুড়ি খেলা -
বেঘোর আসমান তুলে নিলে পাড়াময় শিষ
ছড়ানো ধানের কুশ থেকে অবলা ব্যক্তিগত আখর
উনুনে হাঁড়ি; ঝাপানো পোলাপান
নগর বাড়ছে, অংশত জলের হিসেব বদল
পাশ কাটছে বাদামী সিংহ
ঘোড়সওয়ারী মহীন এবং নীলভিয়া নাম্নী কোন এক
পাখির পালকে আগামীকাল লিখে রাখা
মাঠ ভরতি উতসাহের আড়ালে উঁকি মারে নরম চাদর,
       শীত ও হ্যান্ডমেড চা
এরপর আমরা বড় হয়ে যাই
            সেগুন কাঠের চেয়ারটি বড় হয়না।
কাঠের কুন্দানো পায় জন্মে থাকা অহংকার দাঁড়ায়,
তাই বলে চেয়ারের সাথে লুকাছুপি খেলিনা
ফুরসতে লিখে রাখা গোপনীয়তা





২।।     ∆ বৃষ্টির কায়দা ∆



কায়দাটা নাকি বেজায় সোজা, ঢোকেনা মাথায়
কি করে বৃষ্টি হয় মনের আকাশ, সবুজ পাতায় ?
মেঘ জমেছে সহজ উঠোনের একটু কোণে
মেঘলা মেয়ে মেতেছে গুড় গুড় বাদলা দিনে !
কবে থেকে লিখিনা ছন্দের কবিতা
কি লিখি কেমন লিখি, পাইনা ভেবে তা !
মেঘ কি নেয় রানারের খোঁজ, বক্সা পাহাড়ে
জয়ন্তীর কোলে বৃষ্টি ছুঁয়ে থাকা আহারে !
শামুকতলা কলেজ আর আমলকি বনে মন
সাদরী কবি সন্জু কুজুর পুখুরিয়া বাড়ি,
বান এলে ভাই ভয়ের প্রহর বর্ষা ঘিরে
জল থই থই কুঁড়ে ঘর, বিছানায় হাঁড়ি !
ভিজছে সব আখরগুলো অঝোর ধারাপাতে
চালচুলোহীন মানুষগুলো ধুকছে হাভাতে !
পারিনা কিছু করতে, চোখে গড়ায় শুধুই জল
এমনি দিনে জ্বলছে আগুন, চাই নেভাতে ।




৩।।   ∆ ওয়ে ∆



অতসী একটা ফুলের নাম। ফুল কোনদিনও পুরোনো হয়না।
তোমার লাজুকতা আমার স্বপ্ন দেখার গল্প।
আঙুলগুলো নিশপিশ করে। বড্ড শর্মিলা।  আবার কখনো বেহায়া - বেশরম।
গভীর। গহন। বোধে নাড়ায়। ছুঁয়ে যায় টেরাকোটা শিল্প। 
ঘুম পাহাড়ের চড়াই উৎরাই ভাঙতে ভাঙতে ক্রমশ ধ্বস নামে...
শাড়ির আঁচল ভিজতে থাকে কোজাগরী চাঁদে। ছিপড়া বাঘবন।
ঝিনইডাঙার ঝিনুক মেয়ে। নদী বন্ধু  হয়। শরীরে শরীর রেখে ভালোবাসা
                                   অ্যালজেব্রা ফর্মুলা। পরিবৃত্ত - ব্যাস
ব্যাসার্ধ বরাবর এঁকে দিলাম অন্তবৃত্ত। জ্যামিতি - গণিত অনুসরণ
করে বৃষ্টি  নামে। সব ভেজে। আকাশমণি গাছ, নদী, জোনাকি সব...
খসে পড়ে শাল পিয়ালের ফুল।
রাত বারেটার পর খুলে যায় যাবতীয় সংলাপ। তুমি আমি কথা বলি।
পাশাপাশি। নগ্ন করি নিজেদের। যে পথে নিঃসীম অন্ধকার নিঃশব্দে  হেঁটে
চলি সেই পথ ধরে...





৪।।   ∆ আনকহা - ১ ∆



বটম খুলে মাকড়সা
         হিজিবিজি লিখছে
বীজ গলে টসটসে
সিমের ফুল = তুমি?
বিয়োগের খাতা খুলে
জল লিখছে চাঁদ
লাল টুপি বুটের ডাল
               ফ্যান ভাতের গন্ধে উবু হওয়া
রোদ্দুর গড়ালো
পিঠের ঘামে





৫।।  ∆ মাখানো খাম ∆



নীলগুলো আঁকা হলে মেঘ খুলে যায়
মাখানো খাম খোলে নদীরা
তুরতুরি আদর খায়। আসমানী লাফায়
চাবাগিচায় গপ্পো জমে। সবুজ পাতায় উত্তরা হাঁটছে...
শাপলা পর্বের কিস্তি শেষে কবিতার খাতায় রাত নামে
জলজ প্রত্যয় থেকে উঠে আসে আখর আর শব্দেরা
নিয়মিত যোগাযোগ লেখে নরমেরা
সেতুও উতলা
শাপলারা জড়িয়ে যায় যেতেই থাকে...




অলংকরণ - মেহবুব গায়েন

•••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••

1 comment:

  1. ভালোবাসাগুলো ঋদ্ধতা পাক। ধন্যবাদ নয় শুধু ভালোবাসাটুকু থাকুক...

    ReplyDelete