সৌমাল্য গরাই এর কবিতা -
[] জননী
আমাকে পুরোটা গিলে নেবার পর
শাদা কাপড়ে ঢেকে বলা হয়েছিল- ভালো হবে
শূন্যে ছোঁড়া দু একটা ফায়ারিং,
ছুটে এসে হাতকড়া পরিয়েছিল চলমানতায়
ফাটকের ভঙ্গুর রেখাতে লেখা ছিল তোমাকে খোঁজার সংকেত
পকেটে খুচরো নোটের ছাপ, দু এক গাছি লম্বা চুল
চিরুনির কাছে তল্লাশি হয়ে ঝুঁকেছিল
শুকনো গালে নরম অমসৃণ হাসি, নির্বান্ধব কান্নায়
তোমাকে দেখা গিয়েছিল বোরখার আড়ালে, চরম ব্যস্ততায়
জীবিত ও মৃত, দুই সন্তান লালন-পালনে
[] সংসার
ঝড় আসে, কত মৃত্যু হয়ে গেছ পার...
সন্ধ্যা নামে, শাঁখের আওয়াজ শুনে দূর—
আকাশে যখনি জ্বেলে দাও লক্ষ তারা
সবার অলক্ষ্যে ভাবি, এভাবে অনন্তকাল
চলে যাবে, দুজনের নতুন সংসার..
[] শিখণ্ডী
পোড়া জতুগৃহের নিকটে জমে থাকা ছাই
তুলে আনে দায়ভার, মহাযজ্ঞশালার বিজনে
খেলাকে ঘুরিয়ে দিয়ে শকুনির পাশা শুধু জানে
কত দানে কার স্মৃতি কতটা পোড়াবে
নিয়ম পতিত হয়। অদ্বিতীয় একলব্যের কর্তিত
বৃদ্ধাঙ্গুলি উৎসর্গ পেরোয় সামাজিক কসাইখানায়
অযথা নিরীহ বালকের শোণিত যাত্রায়
ভিজে যায় স্থল জল অন্তরীক্ষমূল
উদবাস্তু পথিকের ভিড় কমাতে আগুন গোগ্রাসে
গিলে নেয় খান্ডবের বন
শেষ অন্ত্যমিলে পাওয়া প্রারব্ধ হিসেব
ধ্বংসের আওয়াজ আনে, অর্জুনের স্মৃতিবিদ্ধ তীরে
ভীষ্মের অমেয় প্রতিজ্ঞার ফাঁকে-ফাঁকে
ভুয়ো দায়-দায়িত্বের প্রগাঢ় গান্ডীব হাতে নিয়ে
শিখণ্ডী দাঁড়িয়ে আছে লিঙ্গহীন অপত্য জগতে
অলংকরণ - কনিষ্ক শাসমল
•••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••
No comments:
Post a Comment