Tuesday, 4 August 2020

কবিতা

শাপলা পর্ব -১২

কবি রামকিশোর ভট্টাচার্য এর কবিতা-





১।।    ∆ একদিন ∆



অদ্ভুত এক আলো ভিজিয়ে দিচ্ছে আমায় ৷আর
দিনের পর দিন আমি রাতের কথা লিখছি-
সমস্ত আকাশে ৷ রক্তগন্ধা ফুল নিয়ে অপেক্ষা করছি
সেই নদীর কিনারায়, যেখানে জন্মজন্মান্তরের দীর্ঘশ্বাস
ঢেউ আঁকে প্রতিদিনের হাত ধরে ৷ আমাদের
পরম্পরার গল্পরা শুয়ে আছে ওই নদীর অন্তরে ৷
মা আমাদের আগুন বলয় ৷ একদিন রহস্য শেষ ৷
একদিন সবুজ সংকেত ৷ অশ্রুমোচনের সব দাগ
আগুনগন্ধ মেখে উঠে আসবে জীবনের উজান ভাটায়....





২।।   ∆ ছেলে ঘুমোলেও ∆



কয়েক গ্যালন অন্ধকার লেগে আছে অভ্যাসের পাশে...
অথচ বাউলবাজারে কিছু কথা রূপদের হাত ধরে-
আজও আশকারা উড়িয়ে দেয় গতজন্মের
নৌকাদের দিকে ৷ প্রতিজ্ঞা ছিল জীবাশ্মে জীবাশ্মে
বিশ্বাস ছড়িয়ে দেওয়া হবে প্রতীক্ষা ছাড়াই ৷
নির্লিপ্ত গীতবিতানের পাতা হাঁ করে দেখে -
বিষধারায় ভিজে যেতে যেতে বাঁশি আজও নেচে চলেছে
একতারাটির সঙ্গে ৷ নীলকন্ঠ দিন বাজছে ৷
বাজনার
দংশনে ছায়া-পুরুষেরা হারিয়ে ফেলছে দিন ৷ এখন
কাঁথা সেলাইয়ের যুগ, সূঁচসুতোর উত্থানপতনে
আমাদের বিপ্লবদিন চুরি হয়ে যায় ৷ উসকোখুসকো
টাকার হিসেব ৷ মা-মরা চাবি হারানোর গল্প ৷
এখানে
নুন বেশি - তাহলে ঘুরে আসা যাক ৷ ওদিকে
ছেলে ঘুমোলেও পাড়ায় পাড়ায় ঘোরে চিরকুটের ডাক....





৩।।   ∆ চাঁদনি ∆



মায়াময়ী ফুলটি আজ সামনে দাঁড়ালো ৷ এবার বুঝি রাজপাট ৷
হাওয়ার ভিতর খেলে বেড়ানো স্বপ্নের দল দু'পাশে ছড়িয়ে দেয়
বিচিত্র রঙের প্রার্থনা ৷ আমি দেখি এক অলৌকিক আলো
আহ্লাদী সেজে উঠে আসছে মায়ানদীর থেকে ৷ ইহকাল
ভিজে গেল জোছনার জলে ৷ পরকাল কীর্তনীয়া
সেজে
বসে গেল রাজপথে পথে ৷ সমস্ত আকাশ ঢাকে খণ্ডছায়ায় ৷
খুশিফুল খুশিফুল বলে কে যেন প্রদীপ ভাসায় 
আকাশগঙ্গায় !
দূরে এক ধ্রুব-সেতারে বেজে ওঠে চাঁদনি কেদার...





৪।।     ∆ ঘাতক ∆



এক অদ্ভুত গল্প বসে আছে টেবিলল্যাম্পের নিচে ৷ আর
তুমি কিছুতেই জোছনার অনুবাদ নিয়ে গবেষণাপত্রটি
জমা দিতে পারছো না ৷ হাতূর ঘড়িটি থেকে উড়ে আসে 
মর্গের গন্ধ ৷ সবাই তোমাকে ঘাতক ভেবে ফাঁক-ফোকর খোঁজে
কারও সৌভাগ্য -সরণি বেয়ে দৃষ্টি হেঁটে যায়
সেকেন্দার হওয়ার আশায় ৷ এসব দেখেই 
ক্রমশ আবেগ আক্রান্ত 
ড্রইংরুম  বেজে ওঠে ৷ অথচ অনেক প্রত্যাঘাতই
সময়ে আসে না ...





৫।।   ∆ পাতাঘুঙুরের ছায়ালিপি ৩৩ ∆




গাছপাড়া ৷ হিজলবাড়ি পাইনবাড়ির মধ্যে দিয়ে চলে যাচ্ছে
উৎসবের আলো ৷ পাতাপথে বনস্পতিকাহিনীর ফুরিয়ে আসা
 দিন ৷ হঠাৎ চিঠির সাজে ফিরোজা বেগম ভর সন্ধ্যায় বৃষ্টি এনে
দিলো ৷ আর সবুজ কণারা ছড়িয়ে গেল রাইকিশোরীর বেশে
গাছের নীচের গাছগুলি মরশুম ভেবে
বসন্ত রচনা লেখে বেতসের বনে ৷ দ্যাখো
কৃৃষ্ণচূড়ায় তাই গোধূলি লেগেছে ৷ আর
এক ফরগেট মি নট প্রুসকে ডেকে বলছে-
কিস মি কুইক ...




ক্যামেরা বন্দি - অস্মিতা সোম

•••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••

3 comments:

  1. অসাধারণ সব কবিতা। মুগ্ধ হয়ে পড়লাম। শ্রদ্ধা অনেক দাদা

    ReplyDelete
  2. শ্রদ্ধা এবং ভালোবাসা
    ভাল কিছু কবিতা পড়ানোর জন্য

    ReplyDelete
  3. যত পড়ি তত শিখি।

    ReplyDelete