Friday 31 July 2020
কবিতা
কবিতা
কবিতা
কবিতা
১।। ∆ হে সংসারী ∆
১.
হে সংসারী...
পূর্বজন্মে কাঠুরে ছিলাম,
কত ক্ষমা পাওনা রয়ে গেছে...
লতা ভাবিনি তোমায়,
বৃক্ষ জেনেই
ছায়ায় রেখেছি আঙুল।
মাথা ভর্ত্তি ঋণ..
ক্ষমায় ক্ষমায় ঝুঁকে গেছে কাঁধ।
পিঠে ঘৃণা মাখালো কেউ...
২.
এসো চঞ্চল,
ছলাৎছল পায়ে নূপুর পরিয়ে দিই;
বাজছে বাজছে...
বড্ড বাজছে কানে,
কেন...
৩.
অগোছালো স্বভাব রক্তে আমার।
ভেসে গেছি...
যত্ন নিয়ে দাঁড়ালে যখন,
নোঙর দাও;
সাঁতার কাটি।
৪.
বিভোর হয়ে কী বা দেখছো?
পাটাতনের নীচে যে ক্রোধ,
যে স্বচ্ছ টানাটানি–
সন্দেহ নাম দিতেই
হাত গড়িয়ে পড়ছে
যাবতীয় সঞ্চয়...
৫.
আহা
কী বা এমন দুঃখ?
কী বা এমন হাহাকার?
গাছে গাছে লিখে দিচ্ছো...
ও নোনতা জল,
তোমাকে মানায় না।
হে পুরুষ...
৬.
এই তো ঝিমঝিম করছে মাথা...
শরীরে বাড়ছে লাশের গন্ধ...
একটা মশাও ছুঁয়ে দেখছে না পিঠ,
তুমি তো অনেকদূর...
কে ডাকছে কে ডাকছে ব্যাকুল...
যাই...
২।। ∆ সংসারী হে ∆
১.
বাতাস পড়ে ফেলছি। পড়ে ফেলছি
বিধি লিখন;
বিধি বাম।
বিধি ডান।
তবে মধ্যবর্তী কে?
২.
ইশারায় উড়ছে পাখি। বসছে না।
ভেসে গেছে জীবন
জেগে উঠেছিল ভেলা
সে আর কতদিন?
বেহুলার আঁচলে ভেজা চিঁড়ে
কোলে সন্তান।
৩.
স্নেহ লিখে লিখে
কেটে গেছে কাল।
সন্দেহ বাসা বাঁধছে ডালে
যে বসে বসুক।
যে ঠোকরায় , ঠোকরাক
ঘ্রাণ কতটা তীব্র এমন যে
খুলে যাবে দ্বার, গন্ধশিকল
৪.
নোঙর খুলে ভাঙছ ঢেউ,
হাহাকার নেই...
নেই মনস্তাপ;
দিনের সঞ্চয় আমি,
পথের সঞ্চয় আমি।
নির্ভার ভ্রমণ...
এভাবে জগৎ ভাবো কেন?
৫.
গুছিয়ে নিয়েছো সব!
সবকিছুই কি গোছানোর প্রয়োজন হয়?
কিছু মুহূর্ত তো চিরকালীন
গচ্ছিত রয়ে যায়...
থাকে না বিধিনিষেধ
থাকে খেয়ালখুশি...
ফুরসত দিয়ো,
বিস্তার দেবে এঁকে...
৬.
সেই তো পরম
যা হারিয়ে যায় না।
তার ভুলে থাকা থাকে
খেয়ালী শিশুর মতো...
স্মরণে শান্তি
নির্জন নিরাময়।
৭.
পারাপার কখন কাছে আসে
কে বা জানে!
যত্নে রাখা সঞ্চয়
লালিত পালিত ক্রোধ
আতুল ঘুমঘোর
হাই তোলে,
রোদ মেখে কাদা মেখে জল মেখে...
৮.
গাছে গাছে ঝুলছে নিয়তি
খসে যাওয়া পাতাও ভোলেনা
জন্মদাগ।
নাভি বড় ঠাণ্ডা হয়ে আসছে
আগুন দাও আগুন দাও
হে শ্মশানবন্ধু আমার...
অলংকরণ - মেহবুব গায়েন
•••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••
কবিতা
কবিতা
কবিতা
কবিতা
কবিতা
কবিতা
কবিতা
Monday 27 July 2020
কবিতা
অভি কর্ষিত চারণভূমির ডাইরি
১.
তোমার অর্ন্তবাসের পরিপূর্ণ জানালা দেখতে চেয়ে
যে গূঢ় তত্ত্বের অবতারণা করতে হলো,তার সাথে
শুধুমাত্র তৃষ্ণার্ত উটের তুলনা দিতে পারি।যে উট
বসতিতে আসামাত্র সমস্ত কুঞ্চিত জন্মদ্বারে লেগে
গিয়েছিল অমূলক আগুনের শঙ্কা।শূন্যে ভাসমান
প্রতিটি সুস্থ বারান্দা ফিলআপ ছিল দেবতাদের
উন্মাদ কলকাকলিতে।উটটির বোধহয় সামান্য
বাতজ বেদনার প্রকোপ ছিল।না হলে ক্যান
বলো বারবার অর্ন্তবাসের জানালায় নাক ঠেকিয়ে
জেনে নিতে চাইছিল দৈব ওষুধের প্রকরণ ক্রিয়া।
২.
কার্যত প্লেজ়িয়ারিজমে্র ঘনত্ব অনুধাবন করা
আকাটা হীরকখন্ডের মতো কঠিন।সুবাতাস
এড়িয়ে ঘৃত ও গব্য চর্চিত বাঁশ দিয়ে ঠেলে
তোলা মাংসের বস্তুবাদ তোমার কাছে জননী
সুরক্ষা থেকে প্রাপ্ত টাকার সমান,যা দিয়ে তুমি
একশো ব্যাঘ্র শাবককে ঘাস খাইয়ে ছিলে।কার্্যত
অক্ষম মুদ্রাদোষে একটি লৌহখন্ড জ্বালিয়েছি
বৈমাত্রেয় ছাইদানে।কোথাও এক টুকরো ধোঁয়ার
সিলেবল্ নেই।তবু আজ,লোহাটির মনখারাপ।
৩.
কণা কণা ইশ্বরঞ্জান-আমাকে দাও মধ্যরাত্রি
বিভাজন করার মতো তলোয়ার।আমাকে দাও
নকল পাথর বসানো জ্যোতির্ময় আংটির আশা।
ছেঁড়া নোট দাও,টুটাফুটা স্বপ্ন দাও,দাও ফর্ম
হারানো খেলুড়ের সঙ্গলাভ।এ স্থবির জীবনচর্য়ায়
দাও অপেক্ষার চূড়ান্ত শীর্ষে গমনের যোগ্যতা।
রক্তে দাও প্রোটনের নির্বাণ।ইলেকট্রনের বৈধতা।
বিন্যস্ত বা অবিন্যস্ত যেভাবেই স্থিরতা পাক
তোমার মহাজাগতিক রহস্যোপন্যাস,তুমি কিছু
দাবি কোরো না শুধুমাত্র আমার বিস্ফোরনোত্তর
লিঙ্গটুকু ছাড়া।
কবিতার নিকষিত হেম হে ব্রাদার
বিকশিত কন্টক ফুলের মেটাফর,
কাষ্ঠ সাজ়ায়।ইহজন্মের অপ্রকৃতস্থ
গ্রহ পা টেনে চলে গ্যাছে ভৌমজলের
সারল্য বিন্দুতে।কবচ কুন্ডল তার
গচ্ছিত রাখা আছে সদ্য চাকুরিহারা
যুবকের সমাধিফলকে।এখন মধুক্ষরা
সাঁঝ।লবণ নিবন্ধীকরণ শেষ।গ্রেভইয়ার্ডে
নিভে যাচ্ছে অগ্নিশলাকা।যুবকের অশক্ত
চিবুকের নিচে এসে আড্ডা জমাচ্ছে
মাতাল ভ্রমর আর বৃদ্ধ হওয়া স্যাক লেটার।
তোমার আভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বসমূহ ইতিউতি মাথা
গলাচ্ছে হাফ্বেকড শ্বদন্তের সহায়তায়।রক্ত
নয়,বিঠোভেনের বেহালার খোঁজে।কোনোকালে
একপ্রকার নগ্ন সুর ধসিয়ে দিয়েছিল তার ধারালো
প্রাচীরের ব্যাবস্থাপনা।এখন ও ধার্মিক কিছু লোক
সেইসব কথা বোলে-টোলে জাগিয়ে তোলার চেষ্টা
করে মুমূর্ষু বন্দনাগীতি।বেহালায় ঢুকে পড়ে
আহত চাঁদের স্মৃতিকথা।নশ্বর ঠেক ভেঙে
যাওয়ার পর পৌনে পাঁচজন ছায়া তাস পেটাতে
বসে গানের স্কুল ফেরত শ্বদন্তের মেখলায়।
অলংকরণ - শান্তনু মহাপাত্র
°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°
কবিতা
কবিতা
১।। ∆ শ্মশানবন্ধু ∆
শরীর এভাবে শক্ত হয়ে যায়
শরীর এভাবে কাঁচা- শুকনো বাঁশের ওপর
নির্বিকার উপুড় হয়ে শুয়ে পড়ে
আত্মজনের দুঃখ শরীরকে নরম করতে পারে না
শরীর থেকে জগৎ খুলে পড়তে থাকে দফায় দফায়...
আশ্চর্য বাউলরোগ নিয়ে আমরা শ্মশানে বসে থাকি
একটা হারমোনিয়াম, একটা খোল, একজোড়া করতাল বাজতে থাকে,ধোঁয়া উঠতে থাকে ওপরে,
কেউ কেউ মদ্যপানে রত হয়, বুঝতে পারি
তোমার কলমে হেলান দিয়ে বসে থাকি খানিকটা সময়...
এই যে ধোঁয়ার সাথে কীর্তন মিশে যায়
কেউ হাসে, কার মুখের মতো
তখনই ফুরায়...!
২।। ∆ স্মার্ট নই ∆
স্মার্ট নই হুটহাট কারো সাথে মিশে যেতে পারি না।
মনে হয় আমার শরীরে পূর্বজন্মের জল জমে আছে।
এজন্মের হাস ও অন্য পাখিরা স্নান সেরে নেয় আমার ভেতর।
যদি তোমাদের সাথে হুটহাট কোলাকুলি করি
তারা উড়ে চলে যাবে অনেকটা দূরে...
আশায় আশায় থাকি
ওদের বিজ্ঞ ঠোঁট আমারই পাক ঘেটে
আমাকে তুলে দেবে ঐশ্বর্য নামের প্রাজ্ঞ বালিকার মুখ
যার চোখে ঘুম হয়ে নিভিয়ে দিতাম তারার আলোকে...
৩।। ∆ শিরোনামহীন ∆
যে তারিখে আমার জুতো ছিঁড়ে যাবে
খানিকটা ভয় ও ধুলো রেখে,
দম্ভ -ওজন ও অভিশাপ মুছে, গা এলিয়ে দেব তোমার কোলে
জুতো ছিঁড়ে যাবেই
তুমিও পোশাক খুলে ফেলবে গা থেকে
কৈশোর, যৌবন, বার্ধক্য
প্রেমিকা, বোন, পরিচিতা সব অবস্থা
ফু দিয়ে উড়িয়ে দেবে
ক্রমশ মা হয়ে উঠবে। জুতো খুলে আমিও সন্তান...
৪।। ∆ ভোর ∆
মাকে দেখে আজ প্রথম ভোরের মতো মনে হল
আবছা আলোয় আমার অকৃতজ্ঞ বয়স আর
পাতাগুলো ঝরে আছে
একটা সম্ভাবনার আলো আর পাখির ডাক
ছড়িয়ে দিচ্ছে আমার দিকে
পাখিরা আশ্চর্যভাবে ডাকছে, এখন তো গ্রীষ্মকাল
পাতা ছুঁয়ে শিশির নাকি কুয়াশা নামছে
নাকি আমারই যন্ত্রনার মতো নিছক ভিজে উঠছে
মুছে যাওয়ায় জন্য...
আমার বাড়ির পাশে একটি ভাঙা বাড়ি, চালে টিন নেই
ধোঁয়া বেড়িয়ে আসছে, কোন চক্রান্ত নেই ওরা হাসছে
ওদের ক্ষুধাচিহ্ন সরাসরি ছড়িয়ে দিচ্ছে বৃহৎ আকাশের দিকে।
আবছায়াতেই ফুটে উঠতে হয়, আজ
ফুলের কাছে শিখতে চাইছি সময়
সূর্য ওঠার কত মিনিট কত কম্পাঙ্ক আগে
একটি প্রকৃত ভোর শুরু হয়...
৫।। ∆ হাসপাতাল ∆
তুমি আমার মধ্যে একটি হাসপাতাল খুঁজতে এসো। দেখবে হাসপাতালই প্রকৃত ধর্মস্থান। স্যালাইনে আজান গুলে আছে, ট্যাবলেট হরিনাম। পাশাপাশি বসে দূর্গানামের তালেই বিড়বিড়িয়ে উঠছে কোরান। করুণ মুখ করুণতর হয়ে পরস্পরকে দেখছে। কোথাও একটিও ধূপকাঠি জ্বলছে না। একটিও মাইক তারস্বরে চিৎকার করে ডেকে উঠছে না কোত্থাও...
কবিতা
কবিতা
কবিতা
অনিয়মিত ডায়েরী-Abstract Series
১।। ∆ ০৬.০৬.২০২০ (১) ∆
"নয়নাভিরাম" আসলে তুচ্ছ শব্দমাত্র,
জুড়ে জুড়ে থাকে গাছের সাথে।কৈশর থেকে হালকা দানা
আপেক্ষিক
সীমানা
বিহীন
ধ্বজকেশর।।কোনো কাল গল্পের প্রবেশ নেই
শুয়ে থাকা দায়
তাই
বেঁধে বেঁধে রাখা
একটা তীর্যক ছায়া গাছ মরে গেলে, পাতাও ছেড়ে দেয় শিরা উপশিরা
বোধীবৃক্ষ তুমি কাকে ঈশ্বর বলো!...
২।। ∆ ২৪.০৬.২০২০(১) ∆
তোমার মনোযোগ বাড়ানোর জন্যই আমার এই যাওয়া আসা,
টেনে টেনে রাখি নজর,
ঘুম কেড়ে নাও অপ্রত্যাশিত ভাবে।অতটাও ঘোরে থেকো না, যাতে গাছের রঙ চিনতে ভুল হয়;
কেটে গেলে মায়া,
আহ্বান করো ।ভেঙে গেলে টান,
আমরা ; পাশাপাশি বসবো...
৩।। ∆ ১৫.০৭.২০২০(মন্দ চিন্তা / বেসড বোর্ড)∆
মোহন বাস্ফোর-কে চিঠি
একটা সাময়িক বিরতি নেবো বলে মোহন বাস্ফোর তোমাকে চিঠি লিখেছিলাম ,
উল্লেখ করা ছিলো ঠিক কোন কারণে আমার এই হঠকারী সিদ্ধান্ত ,
তোমার কোনো সদুত্তর পাইনি এতদিন ,গোলাপী বারুদের ধান নিয়ে বেশ কিছু শলাপরামর্শ হয়েছে যতদূর জানি ,
আপেল ঠোঁট আর জঙলী জানোয়ারদের নিয়ে যে বইটা প্রকাশ হবে বলে অপেক্ষায় ছিল তা নাকি আজ পড়ে রয়েছে পান্ডুলিপি সুদ্ধ কোণে!
মোহন বাস্ফোর তোমাকে আরও কয়েকটা চিঠি লিখেছিলাম মনে আছে! জানিয়েছিলাম আমার কালো রোগা মেয়েদের ঠোঁট ভালো লাগে ,যেখানে জড়িয়ে থাকে নিরুত্তর বনসাইয়ের ঘ্রাণ ,
এলিয়ে দেওয়া চুলের বিবাহিত নারীরা আমার প্রিয় , কোমড়ের ভাঁজ থেকে একটা কামরেনু গন্ধ ভেসে আসে ,তবুও আমি কারো কাছে গিয়ে বলিনা একটু স্পর্শ দাও ,
মোহন বাস্ফোর তোমাকে জানাইনি আমি, কবিতা লিখি বলে তোমার বউ বিছানা ভাগ করে নেওয়ার সময় আমার গলায় চুমু এঁকে দিয়েছিল আর বলেছিল কোনো নারীর ছোঁয়া পেতে গেলে আগে মন ছুঁতে হয় ,
মন ছুঁয়েই নাকি শরীর ,বাতাবি লেবু জাতীয় স্তন ,বক্ষ বৃক্ষের আঁতুরঘরে পৌছোনৌ যায় ,আমি কিন্তু তারপর থেকে দীর্ঘদিন প্রেমের কবিতা লিখবো বলে বসেছিলাম , কিন্তু আর কোনো নারীর শরীরই আমাকে পরাস্ত করতে পারেনি ,
তোমার বউ ব্যতীত...
৪।। ১৭.০৭.২০২০(২৪.০৬.২০২০)২
তন্দ্রা কেটেছে বলে আঁধার দেখছি ,
পরস্পর দূরে সরে যাচ্ছে কথা আর উপগ্রহ;
কোনো বিবর্তন বাদের কালিমা লিপ্ত নয় এরা।তোমাকে নদী দেবো বলে পাহাড় গুচ্ছ খাড়া ঢাল এনেছিলাম ;
ঘুমের মধ্যে কেউ একজন বলে গেলো এখন কক্ষচ্যুত উপগ্রহ তুমি ...৫।। ∆ ১৮.০৭.২০২০(লেখা আহ্বান পদ্ধতি) ∆
তোমার মধ্যে দীর্ঘ বছর ধরে গাছ বেড়ে ওঠে, ডালপালা কাটার পর পাখিরা চলে যায়।
সারাজীবনের সঞ্চয় আমার কাছে গচ্ছিত রাখো , শেষ স্রোতটুকু এক দীর্ঘ মেয়াদী চুক্তি।
যদি কাঠঠোকরার দলে আমি ভিড়ে যাই কখনও , ঠোঁট কেটে বাদ রেখে দিও আপেলের
অলংকরণ - দেবজ্যোতি মজুমদার
°°°°°°°′°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°
কবিতা
বৃত্তের মাথায় বিসমার্ক, নিজের হাতে ঠিক করে দেয় সম্পর্কের গাঢ়ত্ব
আদিম ছিটেবেড়াতেই বেজে ওঠে ধামসা, সেজে ওঠে সময় সংসার এবং আমি।
কোনো দিন ডাস্টবিনের ধার দিয়ে হেঁটেছো?
ডাস্টবিন এক মায়াবাক্স,গমগমে ইনস্ট্রুমেন্ট, ওখানে মালা গাঁথার স্বপ্ন ফেরি হয়। টিনের দেওয়ালে পারিজাত অরন্যের নিভৃত সঙ্গম, কামধেনু শবলার ভরা সংসার।
এখানে চাঁদ ওঠে সারাদিন, এ চাঁদ পশ্চিম দেখে না, ঘুর্নন বোঝে না। এখানে আকাশের রং একঘেঁয়ে নীল না, বরং অনেকটাই সাদা বা ধূসর,
বা সমস্ত রঙের হিজিবিজি,
এখানে শুধুই 'পাতিয়ালা' শরৎ আর 'মারওয়ারি'' বসন্ত। মৃদু রোদে 'খুশি' ঘাম এলিয়ে শুয়ে থাকে হাসনুহানার পাহাড়ায়। নরম বাতাসে পাখনা মেলে নিরুত্তাপ অভিধান।
অথবা 'কোড নেপোলিয়ান'।
ডাস্টবিনের পাশ দিয়ে হাঁটো মালিক...
সেখানে টুকরো টুকরো বৈদুর্য্যরা অপেক্ষা করে, আলবাত করে। বৈদুর্য্যরা পেশাদার, শেয়ার সূচকের ওঠানামা, জিডিপির বাড়বাড়ন্ত, লিবিয়া, সিরিয়া, ওয়ালস্ট্রিট সব বোঝে। তবুও সেই কালি-ঝুলি ঘাঁটা হাতে বা সিগনালে চ্যাপ্টা হওয়া পেটে যোগনিদ্রায় নিদ্রিত।
ডাস্টবিনের দেওয়ালে কান রেখেছো কোনোদিন?
"পাশাক্ষমালিকাম্বজ পদ্মা পদ্মালয়ে শোভে" শুনতে পাবেই...
ডাস্টবিনে চাঁদ ওঠে... ডাস্টবিনে চাঁদ উঠবেই...
মায়াবাক্সে জমা থাকা বৈর্দুয্যের গায়ে একটা করে চাঁদ গাঁথা থাকে...
ডাস্টবিন দেখেছো?
এখানে পৌরুষ আর কবজ পরস্পর সমান্তরাল।
বিকালে মরা পালকের সাথে নেমে এল বৃষ্টি।
অগুন্তি ফোঁটার সাথে একটু আমি মিশেছিলাম।
অকাল সন্ধ্যা নামানো চুলে হারানোর আগে, আমাকে ভরে নিল উন্মুক্ত ঠোঁট।
মৌচাকে মৌমাছি হিংসেয় আত্মহত্যার কথা ভেবেছিল বেশ কয়েক বার ।
তোকে ছুঁয়ে বৃষ্টি মদমত্ত হস্তি যুথ। সাথে আমিও।
এখন তুই তৈগা।
সমস্ত উপত্যকা এখন অনাবৃত। দিনের মত দাড়িয়ে আছে বিভাজিকা, ঝর্ণা হয়ে বয়ে চলছে বৃষ্টি অথবা আমি।
বস্তুত হরিণ আর আমি এখন অভেদ।
গভীর গিরিপথ পেরিয়ে গ্রস্ত উপত্যকা।
বৃষ্টি বুঝল,
কেন বিশ্বমিত্র,
কেন উর্বশি,
কেন শুকুন্তলা।
বাষ্প হল। হলাম।
দীর্ঘ সংগ্রাম শেষে লিভিংস্টোন বাড়ি ফিরল।
চাঁদ উঠল। পাখি ডাকল। মৌ জমল আবার।
আমি তোকে দেখলাম।
ফাগুনের মাঝামাঝি, পলাশ -শিমুল- অশোক এখন মতাল বেহেড।পাহাড়ি ঝোরার মত তরুণীর খোলা পিঠে ইমন - মল্লারের ঢুঁ ।
যদিও এসবে অভিজ্ঞান খুঁজে পায়না কোনো নির্মেদ নাভিদেশ।
কেবলই একটা দাউ দাউ -এ ঝলসাচ্ছে রোজ। যেন দম পাচ্ছে না, যেন প্রসবের অপেক্ষায় দিনগোনা শিশু, যেন নেফারতিতির মুকুটচ্যুত ঝুটা মুক্ত,
যেন পূর্ণিয়ার খুপরিতে থাকা সেই মালা।
অথচ কথা ছিল না এমনটা হওয়ার। চেয়েছিল সেগুন মঞ্জুরি ও তাতে লেখা কয়েকটি প্রেম।
আর বাতাসের ফোঁপসে গাঁথা শান্তিনিকেতন ।
কিন্ত ভাত এক করালবদনা ভৈরবী। কোন এক মন্ত্রবলে কেড়ে নিল দুইমলাট, কলম ও রাজকুমারি ।
প্রতিরাতে খুন হয় সমস্ত যাপন।
অভিজ্ঞান এখন স্পষ্টদেখে যে পাহাড় -পাথরেরই জাবেদামাত্র, কোনো ষোড়শীর খোলা বুক না।
প্রেমিকার চোখ কেবলই রক্তের ঢেলা,
আর নেফারতিতি?
কঙ্কাল ছাড়া কিচ্ছু না।
এক নদীপথ পেরিয়ে হেঁটেই চলেছি। ঘর ঘর খেলায় আমি বড্ড বেমানান--- মালিক। শুরুর আগেই শেষ হয়ে যায় সমস্ত বাকল।
এই চুন সুড়কির দেওয়ালে আমি তোর ঠোঁট আঁকতে পারি না, কানের লতির কাছে ঘুম জমা করার আগেই ফিকে হয়ে আসে সময়। এ মুদুনি চাল আমাকে গিলতে আসে, ছিঁড়ে খায় আদিম পৌরুষ।
কুলুঙ্গিময় বিষের বোতলে রোগা প্রেম - সূর্যাস্তের অপেক্ষায়।
কেঁদে ফেরে অস্তরাগ ও আবেশ ।
তোর শরীরে আস্তানার বদলে খুঁজে পাই পথ। যেখানে হাঁটুল মাটুল দিয়ে বসে থাকে গার্হস্ত্য ঘুম। এলানো চুলে বারবার কেঁপে ওঠে বানপ্রস্হ।
এপথে আমি একাই। বিভাজিকার গলিপথে হিমশৈল , গিরিপথে অতীন্দ্র পাহাড়ায় দুই শো ছয় অক্ষৌহিণী সেনা। গুপ্ত ছোরার ডগায় লেখা আমার নাম।
মালিক, এই পথে আলাদা যাপন আছে- ফিনিক্স আছে, ফুলদানি ভরা ডুুমুর ফুল আছে।
শুধু অস্তাচলের দিনে আমিত্ব ক্ষয়ের হিসেব নেই/ তুই ছাড়া আমার কোনো নদীও নেই।