Thursday 21 March 2024
কবিতা
Wednesday 20 March 2024
কবিতা
দীক্ষা
তোমার সাথে দেখা হবার কথা কি আমার ছিল?
তুমি বলবে, 'জানি না।' তুমি বলবে, 'যা হচ্ছে হতে দাও।'
তোমার মুখে মুখে ঘোরে বিজ্ঞান,'বিপরীত মেরুরই আকর্ষণ বেশী।'
অথচ,
বুকের ওপর তুমি অবলীলায় ধরে রেখেছ পবিত্র বাইবেল,
তোমার আঙুলের স্পর্শে আরো উজ্জ্বল হয়ে উঠছে কাঁটার মুকুট। হাঁ করে শুনছ লুথার, ক্যালভিন!
পায়ের পাতা ছুঁয়ে গেলে, বুকের ভেতর বসে থাকা বিশ্বাসঘাতক জুডাস,স্পর্শজাত শিখায় উত্তপ্ত করে নিচ্ছে হাতুড়ি!
হৃদপিন্ডের ওপর গেঁথে যাচ্ছে একটার পর একটা পেরেক।
তোমার ক্যাথোলিক বুকের ওপর প্রোথিত হোক সাতানব্বই হাজার নিবন্ধ!
লেখা থাক "ওমনিয়া ভিনশিট অ্যামোর: এট্ নোস সেদামুস অ্যামোরি।"
প্রটেস্টান্ট হতে গেলে, ঝড় উঠবে নিশ্চিত।
নির্বাসনই হবে আমার শাস্তি,
তবুও কি তোমার মনে প্রশ্ন জাগবে না,'সমমেরুরও কি আকর্ষণ করার ক্ষমতা ছিল?'
∆
খাবার
খাবার খাওয়ার বিবিধ নিয়ম!
কেউ খায় গোগ্রাসে, কেউ খায় রেখে রেখে,
কেউ কেউ খাবার আগে মন্ত্র বলে,
"ভোজনেচ জনার্দনম্ !", ছড়িয়ে দেয় জল।
কারো কারো খাওয়া ভীষণ যত্নের-
আসনের সামনে পঞ্চব্যঞ্জন এনে রাখে গৃহলক্ষ্মী,
পাশে বসে তুলে নেয় হাতপাখা।
কারা যেন খায় খুঁটে খুঁটে?
কোনো দেশে খায় এক হাতে, কোনো দেশে দু'হাতে।
একমুঠো'তে চোখ জ্বলে ওঠে কারো কারো, হর্ষে;
কারো আবার মুঠো মুঠো খেয়েও বিষাদ জমে ওঠে,
কোনো কিছুতেই তখন আর পেট ভরে না,
ধীরে ধীরে সে খেতে শুরু করে সবকিছুই -
চাল, ডাল, আলু, টাকা-পয়সা, ঘর-বাড়ি, জমি-জায়গা,
শিক্ষা, অর্থনীতি, রাজনীতি, নিয়ম-কানুন, আইন-আদালত, একটা রাজ্য, হয়তো একটা দেশও…
∆
মা
হারিয়ে ফেললাম আংটি,
বোধহয় আরো একটা...
হারিয়ে ফেলেছি বাজুবন্ধনী,
রূপোলী হার, একে একে সবই -
ফের হারিয়ে ফেলব জেনেও,
ফেরার আগে, কী বিশ্বাসে
আবার কড়ে আঙুল কামড়ে
হাতের ওপর বেঁধে দিচ্ছ বিপদতারিণী'র লাল সুতো!
ছবি- মেহবুব গায়েন
••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••
কবিতা
Tuesday 19 March 2024
কবিতা
নির্ভাবনায় আঙুল তোলো মুকুটে
খর্ব হয় নির্জনতা
বিপথে ছড়িয়ে যায় ঝুরঝুরে বালি
যে গাছে বেয়ে ওঠে লতা
তার দিকেও এসে পড়ে বিরুদ্ধ নজর-
অসহায় কুঞ্জদিনে পা ফেলি ঘাসে
লুকিয়ে পড়ে নদীর অসুখ...
এখনো নিরস্ত্র জিভে
জেগে ওঠে বিচ্ছিন্ন প্রপাত...
বিপরীত স্রোতে সিংহাসনের টুকরো
অচেনা নৈশদিনে ঘুম নামে ফ্যারাওয়ের চোখে...
সারা পৃথিবী যখন ঘুমোয়,
আমি একটু অন্ধকার নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকি দরজায়
ফেলে যাওয়া পাঁচিলের দিকে নজর থাকে রোজ
ঘুম না এলে অযথা পাহাড়ের কথা ভাবি-
নি:শুল্ক জানলায় হাত রাখার কথা বলিনি আর
যদি পুরনো দায় এসে পড়ে নগরকেন্দ্রিক শাসনে
আলোর বিপরীতে তখন নজর কাড়ব...
সারা পৃথিবীর কাছে আজ একটাই প্রশ্ন
সত্যিই দরজা কি অধিকারহীন?
ভেবে দেখব
পৃথিবী নয়
রাত্রির কাছে প্রশ্ন করা সহজ...
না ঘুমনোও ভালো
কিন্তু যতদিন না বটগাছের অপারগতা মানতে হয় প্রকাশ্যে...
বেড়ে যাক ততটাই দূরত্ব
সাহস ফুরোলে যেভাবে আঁতকে ওঠে সবাই
রুমালের গিঁটে বায়বীয় বাসস্থান
ধর্মসঙ্কটে পড়ুক দম নেওয়া পুতুল...
ঘাড়ে কোপ মারার জন্য কবরের তল্লাশি
শূন্যস্থান নামক যেকটি কবিতা ছিল
তারাই ছাপা হয়েছে নামী ম্যাগাজিনের পাতায়
শেষ পৃষ্ঠার কবিতা 'আঙুলহীন মানুষ'...
ঘেরাটোপে গেরুয়া দিগন্ত
নতুন করে দরকষাকষি হয় নি
গিঁট পড়েছে অবচেতনে
আরও দামী হয়েছে কৃষ্ণগহ্বর।
মেঘ জমলে সূর্যের নমনীয়তা স্পষ্ট
এই মুহূর্তে দরকার
অন্ধকার হাতড়ে বেড়ানো বিধর্মী মানুষ...
কবিতা
চোখের কাজল অশ্রু জমায়
বুকের পাঁজর মনখারাপ
পায়ের পাতায় শরীরের ভার
গলার কাছে শুকনো পাপ ।
কিছু ছায়া নিজেকে চেনায়
রক্তপাতে ভেজে অহং বোধ
ক্যালেন্ডারের দাগ বেড়েছে যত
গুলিয়ে গেছে অনাদরে রাখা শোধ ।
পাহাড় রাখছে নদীর বুকের ব্যথা
আকাশ শোনায় খুচরো রোদের গল্প
ক্ষিদের দিনে যারা ভরিয়েছে পকেট
তাদের চোখেও অনাহার অল্পসল্প।
ভাঙাচোরা মানুষ আঁকড়ে ধরে হাত
দুঃখ দিয়ে চিক টেনে দেয় দরজায়
চোখের জলের দাগ চেনা যায় সহজে
শুধু দাগ থাকেনা গুমরে মরা-য় ।
∆
যারা হারায় ইচ্ছা কিংবা অনিচ্ছায়
বোকা হাত ঘাম মুছে নেয়
সহজ করে শীতের রোদে
ফর্সা গালে লজ্জা নামে
মরশুমি ঠোঁট আড়ালে কাঁদে ।
অঙ্ক বাড়ে আনাগোনায়
সমাধান রাখা হলুদ মাফলারে
চিঠির খামে পুরোনো কৌশল
বেলা বাড়ায় অযথা কলঘরে।
খোলা ছাদে জোছনা এসে পড়ে
শিশির মেখে ভারী হয় বিনুনি
যে পাড়া শুনশান হয় সন্ধ্যেয়
সে পাড়ায় রাতে কোলাহল শুনি ।
খুঁটে রাখা সন্ধ্যারতির ভাপ
মানুষ রাখার নিখুঁত পদ্ধতি
যারা হারায় ইচ্ছা কিংবা অনিচ্ছায়
তাদের বোধহয় না ফেরাটাই রীতি।
∆
আমাদের কোনো বাসা থাকেনা
বন্দর রেখেছে পুরোনো মানুষছাপ
ঋণের গায়ে ঠুনকো বেঁচে থাকা
ভরাডুবি জীবনের মোহ ছেড়ে
ছায়ারা খোঁজে বিষাদের ব্যাখ্যা।
রাত ছড়ায় ঘুমের ঘোরে বালক
যন্ত্রণা পেয়ে কুঁকড়ে ওঠে ভোরে
তার শুধুই ক্ষিদেরা রঙচঙে
এমন যথাযথ উপোসের ভিড়ে।
জোনাকিরা প্রহরী পাঠায় রোজ
চোখের জলের গন্ধ তারা চেনে
বিদায় মানে আবার ঘুরে আসা
অপেক্ষারা মন থেকে তা মানে।
ভগবানের কোনো দোষ থাকেনা আসলে
সবকিছুই মিথ্যে আলোর সান্ত্বনা
ক্ষিদের গন্ধ যাদের গা থেকে ওঠে
তাদের কোনো বাসা-ই থাকেনা ।
ছবি- মেহবুব গায়েন
••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••
Monday 18 March 2024
কবিতা
Sunday 17 March 2024
কবিতা
Wednesday 13 March 2024
কবিতা
Tuesday 12 March 2024
কবিতা
গল্প বলা হচ্ছে দেখে
কেউ কেউ ছুটে গেল রাতের শেষে
তখনই প্রবল হাওয়া,
তখনই তোমার দরজা খুলে যাওয়া
নিশ্চিন্ত হতে হতে ভাবি
যাদের গায়ে এখনও শীত লেগে আছে
যাদের গায়ে এখনও চাদর,
তুমি তো তাদের কাছে আলো হবে ঠিক
আমি কোন অন্ধকার স্বরে বৈকুণ্ঠের পলাশ কুড়োব?
∆
ভিজে যাও তবে
আমাদের ছবিতে কত রং
বসন্ত, কাচের গ্লাসে বেগুনি তরল
চুমু খাচ্ছি দেখে যারা হেসে ফেলল খুব
তাদের মুকুল দাও, গন্ধ শুনুক
আমি কারও নই, কেউ নয়তো আমারও
ভিজে যাও, ভিজে যাও চোখে
সাধের নৌকাটিতে শোক নেই ডুবে দেখবার
আহত নেশার মতো তোমাকে জেনেছি
∆
সেবা
এই যে বারান্দায়
জ্বর এল রক্তদাগ বেয়ে
অলৌকিক ভাবুক যে যেমন লোকে
তুমি জানো, এইসব বৃথা গবেষণা
কী তরঙ্গ খেলেছে এই কাছে-আসা-দিনে
তুমি জানো, বসন্ত কেমন বেদনা
সেবা আনো অপরিচিত হাওয়ার দখিনে