১.
∆ বিকার ∆
১।
একটি সকালবেলা সুঁচের মাথায়
গেঁথে থাকে সহজ গমনে।
দানের সহজ ভাষা ভ্রমে
করেছে চতুরমুখী তাই।
হরি আসে হরি যায়, আমাকে ধরে না।
আমিও অক্ষম হাতহীন…
ছেড়ে দিয়ে অনাবিল আনন্দ কুড়াই।
২।
চাকার উপরে কাটে অর্ধেক জীবন
বাকিটা চাকার তলে কেটে কেটে যায়।
দাগের চাদর সরে গেলে
কথা বলে মরণের গান।
বহুমুখী শ্রমিকের মতো দাম ওঠে
আকাশে তখন তবু প্রেমের বাজারে
অপবাদ জোনাকির আলোর মতন
জ্বলে শুধু পেছনের ঘরে।
জারে জারে দ্রবীভূত মুখ
কখনও অ্যাসিড আর কখনও ক্ষারের
রসে চাপে লিটমাস হয়ে আছি প্রায়।
রোগ ভোগ পাশ দিয়ে ঘোরে
আমাকে অচ্ছুৎ ভেবে হয়তো ছোঁয় না।
তবু আমি বেঁচে আছি অনাবিল প্রেমের বিকারে।
২.
∆ জরাসন্ধ ∆
আমার মাথায় আর কিছু আসছে না।
ঢিলেঢালা সুতোর কৌটায়
কোথায় লুকিয়ে আছে সুঁই!
ভাঙা ব্লেড থাকতেও পারে।
আমি তবু সেলাইয়ের নামে
ভেবেছি নিয়তি দুই টুকরো আপেলে।
আসলে বাঁধতে গিয়ে নিচে
জরাসন্ধ হয়ে গেছি তার।
এইবার পর্যাপ্ত ভীমের কাছে
একদিন মুছে যেতে হবে সেও জানি।
কৃষ্ণেরও বাঁশি যাবে থেমে।
এখন আসনে রাখা দেবী
আমার প্রেমিকা।
মননে বসান দেবী বৌয়ের সতীন।
৩.
∆ ক্ষত ∆
গোয়েন্দা প্রবণ মন বেশি সৎ হয়ে গেলে
কথা বলে ঘরের বেড়াল।
তাকে বেশি না তোলাই ভালো।
হয়তো তখন কোনও অদৃশ্য কুকুর টের পায়
নিজেরই শরীর থেকে ক্ষত পচা ঘ্রাণ।
হৃদয় আহত হয়, তবু বেঁচে থাকা
যেন এক সই দুটো পায়ের উপরে।
চোখের ভিতরে মহাভিনিষ্ক্রমণ।
অগুন্তি পথের শেষে ঠিক একজন
আয়না চিবিয়ে এসে সামনে দাঁড়ায়।
আমরা আসলে তো সময় নষ্ট করার জন্যই
কবিতা লিখছি, মনে হয়
অপেক্ষার নামে রেখে যাচ্ছি কাটা দাগ
লুকোনো শরীরে।
৪.
∆ কুকথা ∆
কার কাছে ধরা দেব? কার কাছ থেকে যাব ছিঁড়ে!
হরিণের মধ্যাহ্ন ভোজন
বেরসিক নদীর ওপারে গেলে থেমে
এই পার ভাবের ভবন।
কচি কচি পাতার বয়ানে
লেগে কুয়াশার যোনি চেরা আলো
ভাষা আরও প্রবল হয়েছে।
গাল বেয়ে নেমে আসা অশ্রু সকল
হঠাৎ থমকে গেলে ফুঁয়ে
রোদনের জ্বালা নিয়ে দেহে
তবুও থমকে থাকে মোম।
কার রিং কার আঙুলে গড়ায় জানে
বুকের পাথর।
ধীরে ধীরে সব রং ক্ষয়ে যায়,
সব হাসি মুছে যায় গাঢ় সাদা একটি টেবিলে।
আমাকে ছাড়ে না নীল আলো, লাল আলো!
ক্ষণে ক্ষণে চাকার ঘর্ষণে
দূরত্ব মুছতে গিয়ে শেষে
সব ব্যাস ছোটো হয়ে গেছে কুকথায়।
কিছুটা অপূর্ণ থাকা ভালো।
সব পাওয়া হয়ে গেলে কিছুই থাকে না।
দ্রোহের নিরীখে অক্ষরেখা
বেমানান হয়ে যায় দ্রাঘিমা শুলেই।
আমাকেও মনে হয় শুয়ে আছি
তোমাকেও শুয়ে আছো মনে হয়
গাছ পাখি আকাশ তারারা
সবাই পড়েছে পাশে শুয়ে
এমনই অনন্ত সব শোয়া
কেউ কারো ধারে কাছে নেই।