কবি পল্লব গোস্বামী’র কবিতা-
১।। ∆ মাটি ∆
মাটির ঘর থেকে
তুমি নেমে গেলেই
বৃষ্টি নামে।
দেওয়াল থেকে দাখিলা ঝরে পড়ে ...
আমি মাটিকে ধীরে ধীরে তরল হতে দেখি
আর চোখের সরল দিয়ে
স্নেহ আঁকি
মা- শশকটির মতো করে ...
মাটির খোঁয়াড়েই শরীর তোমার
আমারও শরীর খেয়ে যায় মাটির সকাল
শুধু
চোখদুটো রেখে যায় ।
দেখে যায় ,
বুদ্ধের বঙ্কিম বুকের ভেতর
অপার করুণায় ।
২।। ∆ অন্যনাম ∆
আকাশ এর মাথা থেকে
সমস্ত চাংড় খসে পড়লে
একটা আকাশমণি গাছের গুঁড়ি -
আমাদের
গুঁড়ো গুঁড়ো পললভূমি
আর সৌরখচিত মাঠের
স্বপ্ন দেখায় -
স্বপ্নেও আমাদের বুকে
একদিন আকাশমনির জঙ্গল হবে
জঙ্গল থেকে তিরতিরে নদী !
চোখে চোখে কুমারী
সেইতো মিড় ভেঙে মাথুরের সময়
সেইতো আমাদের প্রাকৃতিক পদাবলী !
প্রেমতো এমনই এক প্রকৃতির ডাকনাম
যার আবিশ্ব বর্ষা ,ভালোনাম - ভালোবাসা |
৩।। ∆ শ্মশান ∆
আমাদের প্রত্যেকের বুকে শ্মশান থাকে ।
যেমন থাকে -
ঘুমের ভেতর ঘুম
স্বপ্নের ভেতর স্বপ্ন ।
বর্জ্য জমতে জমতে
একদিন পাহাড় হলে
সেই পাহাড়ের কোলে , মেঘের ফাঁকে
দক্ষিণমুখী জলাধারের পারে -
জেগে ওঠে বধ্যভূমি ।
আমাদের কুন্ডলিনী চক্র পোড়ে
হাওয়া-মোরগের ঠোঁটে
প্রেয়সী দাঁড়িয়ে থাকেন : ঠিক যেন বজ্রযোগিনী
যাঁর প্রচন্ড কাতরিতে -
খাঁক হয়ে যায় ,
আমাদের অতীত ও আগামী ।
৪।। ∆ কুঞ্জবনের কথা ∆
রাই , একটু ভালোবাসার কথা বলো ।
সুমি কই ?
সরপুঁটিদের ঝাঁকে পা টিপে টিপে
প্রিয়াঙ্গী বিরজার জলে
আলগোছে লুকিয়ে এসেছি ওকে ।
তাঁর ময়ূরী দেহে
কাজল ফুটলেই
আবার যাবো ।
এখন দমবন্ধকর দুপুর ।
তালাবদ্ধকর কুকুরের মতো
লালা ঝরছে দ্যাখো ;
রাই , একটু মুগ্ধতার কথা বলো ।
আমার বুকের হাড়বাঁশি ,তোমার নূপুরনিক্কণে-
ক্ষুধাও উধাও হয় জানি ;
হাওয়ার ঘাগরে ভাসছে দ্যাখো অগুরু চন্দন...
রাই , আজ আবার কুঞ্জবনের কথা বলো ...।
৫।। ∆ পরিযান ∆
বালিকা বিদ্যালয়ের ছাদ থেকে
চখাচখিরা উড়ে গেল |
সিঁথিহাঁসের চোখে
আমি তোর নাম
বিড়বিড় করলাম কিছুক্ষণ |
বিড়বিড় করতে করতে একা একা ভাত খেলাম | আধপেটা খেয়েই উঠে গেল তিতির |
তারপর, এক্কা দোক্কা খেলতে খেলতে
তুইও উড়ে গেলি ...
মহাজনের মারের মতো ,
বুড়ি বেলগাছটিতে
আটকে রইল
নীল পরিযানের পালক |
অলংকরণ - মঞ্জু হেমব্রম
°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°
No comments:
Post a Comment