Thursday, 29 October 2020

কবিতা





কবি আযাদ কামাল এর কবিতা-






কবি হারুন অর রশিদ এর কবিতা-




কবি নাহার আহমেদ এর কবিতা-



কবি সুবোধ ঘোষ এর কবিতা-




কবি নাহার ফরিদ খান এর কবিতা-



কবি রাজকুমার আচার্য এর কবিতা-



কবি জি কে নাথ এর কবিতা-




কবি অনিমেষ মণ্ডল এর কবিতা-




কবি বিদ্যুৎ ঘোষ এর কবিতা-





অলংকরণ- মেহবুব গায়েন

০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০

Monday, 19 October 2020

কবিতা

মাটি খোসা পর্ব-৩



কবি বিশ্বজিৎ দেব এর কবিতা-


কবি দীপক বেরা’র কবিতা-



কবি নিমাই জানা’র কবিতা-




কবি মোহনা মজুমদার এর কবিতা-





কবি সুবর্ণা বর্মন এর কবিতা-



∆∆

অলংকরণ- মেহবুব গায়েন

০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০

Saturday, 10 October 2020

কবিতা

মাটি খোসা পর্ব-২

কবি শান্তিব্রত বারিক এর কবিতা-




১।।  ∆ কেয়া ∆



১.
কল্পনার সুর ছিঁড়ে ধরে বুক খোলা জামার বোতাম
কিশোরী শরীরে খেলে যায় আগুন রঙের সুড়সুড়ি,
সমান্তরাল আকাশে ঘুড়ি ও পাখির ডানার সাক্ষাতে
কমে যায় জমে থাকা গেরুয়া মেঘের রক্ত মাংস।

জমির উঠোন ভেঙে রোজ কত বেহিসেবী মন প্রাণ
দরজার মুখে গিয়ে ফিরে আসে নিয়ম করে
পরিত্যক্ত সময় লুকিয়ে পড়ে গলির জানালায়
তুলে রাখে ফুটপাথের জীবন শৈলী।

সাদামাটা ভোরে বাতাস মাখার দোহাই দিয়ে
নিজেই হাত ছাড়িয়ে গেলে আগের মতন
তোমাকে হারিয়ে ফেললাম তোমার ভিড়ে....



২.
তোমাকে মনে করি, ভুলে যাই রোজ রোজ
ভুলতে পারি না তোমার কথা, স্মৃতি-মুখ
তোমার ওঠা বসা, হাঁটা চলা, কথা বলায়
ওজন বাড়ে শুধু ভালোবাসার...

স্মৃতি টপকে পৌঁছে যাচ্ছো কালকের ভুলে
আজকের দুপুর রোদ, বিকেলের ঘুমে
তোমার হাসি খেলা, সারাবেলার পুতুল বউ
নোঙর তুলে ভাসে আমার উঠোনে..

তোমার আধুনিক মনের চাহিদায় রেখেছি
ভিখারির পাত্র, প্রেমের ঝুলি প্রভৃতি।
কয়েকটা চুমুর আবদারে নয়, তোমাকে
ভালোবাসি তোমার দুঃখজলের সক্রিয় শোষণে....



৩.
তোমার হাসির রংওলা হলুদ বিকেল
আমাকে ফিরিয়ে নিয়ে চলে স্মৃতির দূরবিনে
আজ তেরো দিনের অভিমানে নীলিমা শরীর
উড়িয়ে ভেসে যাও বাঁশ বাগানের চোখ পেরিয়ে।

শুকনো পাতার মতো খসখসে হৃদপিন্ডে
রোজ ওঠানামা করে প্রেমের পারদ
যদিও দু'সপ্তাহের স্নানঘরে বাসি হয়
জমে থাকা জলচিহ্ন, তবু-
আমাদের ঘরোয়া বিছানায় থেকে গেছে
তোমার স্বপ্ন পুরীর ঘুম,
উঠোনের সমতল ঘাস মাটিতে লেগে আছে
তোমার নূপুর পায়ের হাঁটা চলা,
আমাদের সবুজ সাদা দেওয়ালে বেঁচে আছে
তোমার লাজুক মুখের আলাপন
আর আমার বইয়ের পাতায় পাতায় শুয়ে আছে
তোমার শান্ত ঠোঁটের উচ্চারণ....




ছবি - মেহবুব গায়েন

°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°

কবিতা

কবি মাহফুজ মুজাহিদ এর কবিতা-





১।।  ∆ ভোর আঁধার হলে ∆



পৃথিবী মরে গেছে
বেঁচে আছে কিছু দীর্ঘশ্বাস 
ঘাসের শিশিরে অশ্রু জমা
সকাল সূর্যে নিরাশার জামা
সারাদিন তাই হতাশার চাষ

পৃথিবী মরে গেছে
নিঃশব্দে রেখে গেছে ফসিল
বুকের আঁচড়ে পাঁজর ভাঙা নদী
স্রোতহীন বয়ে চলে সমূদ্র লোনায়

পৃথিবী মরে গেছে
স্বপ্নহীন বেঁচে আছে মানুষ
ঘাসের বুকে ছবি জমে 
শিশির ভেজা লাল অশ্রুপাত






২।।  ∆ চোখ ∆



একদুয়ারী ঘরে আমার বৃন্দাবন ফোটে
মৃদুহাসি যাচ্ছো হেসে তোমার গোলাপ ঠোঁটে
একলা চোখ কাছাকাছি দেয়না দেখা কেউ
তোমার মনে ডাক দিয়েছো আমার মনে ঢেউ

একদুয়ারী ঘরে আমার আদর ঘুমায় একা
তবুও তোমার নেশায় উড়ি দাওনি কভু দেখা

শিমুল বনে লাল ফুলেতে ভ্রমর হয়ে আসি
বটবৃক্ষ ঝুলের মতো প্রেমের ডালে বসি
বৃন্দাবনে সখি আমার প্রেমের ঘরে তালা
আর ডেকোনা না, ডাকলে তুমি বাড়ে মনের জ্বালা




৩।।  ∆ পাঠ পূর্বাপর ∆



যখন আমরা আমাদের সামনে এসে দাঁড়াই; চাঁদ-সূর্য ভেদ করে আলোর ইশারায় জেগে ওঠে পরস্পরের ছায়া। আমরা বিদ্যুৎঝলকে পাঠ করি অনন্ত গ্রন্থ। 

দীর্ঘ পৃষ্ঠায় লেখা আয়নার মতোন চোখ; কম্পনসুরে ভূমিষ্ট হই সদ্যপ্রসূত শিশুর মতোন। ন্যূয়ে থাকি; ঘৃণায়-কৃতজ্ঞতায়, অবহেলা-অনুশোচনায়। আমি কে? পৃথিবী? মানুষ? ধর্ম? ঈশ্বর-আল্লাহ-ভগমান?

আমরা রোজ আমাদের সামনে দাঁড়াই। প্রতিজ্ঞাবধ্য আমাদের দীর্ঘলিপি ফুটে ওঠে। নিমিষে পাঠ করি জন্মপূর্ব পাঠ-- ভুলে যাই। পিতৃশিশ্নে আমাদের পাঠলিপি মনে করতে পারিনা। ফুলগর্ভে আমাদের শরীরপাঠ্য কেমন ছিলো? 

আমাদের সামনেই আমাদের দাঁড়াতে হয় রোজ। প্রশ্ন ও উত্তরের মাঝে আমারা নিরুত্তর; নিরুত্তাপ হয়ে ঝরে যাই রাত্রির বিছানায়। আমাদের জন্মলিপি আছে, মৃত্যুলিপি লেখে ইতিহাস। আমাদের সামনে আমরা আছি। স্রষ্টার সামনে লিপিবদ্ধ দিনলিপি; অমীমাংসিত ইতিহাস।





ছবি - মেহবুব গায়েন

০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০

কবিতা

মাটি খোসা পর্ব-২

কবি এইচ আলিম এর কবিতা-





১।। ∆ ভেতর থেকে পুড়ে যাচ্ছে নীরবতা ∆



নাটায় - সুতার খেলা একদিন থেমে যাবে /
মুক্তিরবার্তা পেয়ে, ফের উড়াল দেবে মন।/
মায়াময় আচঁল ভেদ করে নিরুদ্দেশ প্রেম,/
তার হৃদঘরে নিখোঁজ পত্র পৌঁছে দেবে। /

কুয়াশামাখা হলুদখামে নিবেদন পড়েই /
ভোর পতনের আওয়াজে কান পেতে রবে।/ 
বুক পকেটে  মিশে থেকেও যোজন পথ দূরে/
নিয়ম ভাঙ্গার গানে মুগ্ধতার নিঃশ্বাস ঝড়ে/। 

শীত বিকালের বারান্দায় তোমার সময়গুলো/
হিসাবি হয়ে মিশে থাকে জমানো স্মৃতির ঘরে।/
তারপর, সবুজ প্রান্তরে দাঁড়িয়ে ভেবেছি/
ভেতর থেকে পুড়ে যাচ্ছে নীরবতা,/ 
কাঁচের মত ভাঙ্গছে নির্জনতা, /
গড়ছে কেবল জোনাকীর তীব্র আলো। /




২।। ∆ তখন পুরুষ হয়ে উঠি ∆



তোমার ঠোঁ‌টের ভাজ, /
না‌কের গড়ন আর-/
চো‌খের ভাষা পড়তে পড়তে/
পুরুষ হ‌য়ে‌ উঠি।/

পুরুষ হলে, তুমি কি/
গোলাপেরমত লাল হয়ে যাও?/
আমার লাল কিম্বা কালোতে কিচ্ছুই /
আসে যায় না। আমি চাই-/
তুমি প্রকৃতিরমত প্রশস্ত হও/
প্রশস্ত হতে হতে/
বুকের বনভূমিতে বসত গড়ে তোল। /

অথচ সেদিন তোমার উড়োচুলের /
ঢেউ দেখেই প্রেমে পড়ে গেলাম।/
তোমার হাতের মেহেদি রঙ/
চোখের কাজল, কানের ঝুমকো,/
কলাপাতার জামা, পায়ের জুতা/
কফিমগে লিপিস্টিকের ছোঁয়া/
দেখতে দেখতে আবারো-/
পুরুষ হয়ে উঠি। /





৩।। ∆ সে ফিরে যেতো যখন ∆



গ্রীষ্ম তাপানো পথে তখনো থেকে যায় কথা!/
অথচ শহুরের বৈকালিক হাটে,/
মচমচে ফুচকার চুপসে যাওয়া প্লেট,/
কফি মগে গাড় লাল রঙের লিপিস্টিক,/
দুমড়ে মুচড়ে ফেলে দেওয়া টিস্যু,/
ছড়িয়ে থাকা কাঁচা মরিচের টুকরো, /
বিল প্যাডে কালো রঙের যোগফল,/
শুণ্য চেয়ারের পাশে বসে থাকা ভাবনা-/
পড়ে থাকে দায়বদ্ধ হয়ে।/
অথচ, তার পার্স, ছড়ানো আঁচল,/
চকচকে জুতো, আয়রন করা জামা/
খোঁপাার ফুল, হাতের ঘড়ি,  /
চোখের কাজল, ঠোঁটের লিপিস্টিক/
সব তেমনি থাকতো, যেমন নিয়ে আসতো।/
বসন্ত বিকেলের বাতাস দিয়ে/
যখন সে ফিরে যায়/
পড়ে থাকতো সবুজ পাতার/
কম দামে কেনা লাল গোলাপ।/




ছবি - মেহবুব গায়েন

০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০

কবিতা

মাটি খোসা পর্ব-২

কবি মোঃ হুমায়ুন কবীর (অর্ণব আশিক)এর কবিতা-






১।।  ∆ একটা ঝলমলে জীবনের খোঁজে ∆ 



প্রকান্ড গাছের গুড়ির মত ওদের জীবন
কচু পাতার উপর টলটলে জলের মত ওদের জীবন
গরিলার হাতের মত ওদের পেশি, আকাশের মত ওদের বুক
ওরা পেশাজীবি শ্রমজীবী। 

ওদের জীবনের গায়ে ফুটে আছে কষ্টের  থোকা থোকা ফুল,
টুকরো টুকরো বাঁচার আকুতি নিকষ কালো আঁধারে মিলায়
বুকের ভিতর আর্তনাদ করে কষ্টের বিষন্নতা 
কাস্তে শাবল হাতুড়ি ঠোঁট বেঁকিয়ে হাসে
ওরা তবু লড়াই করে বাঁচা-মরার। 

পুঞ্জীভূত মেঘের মত কষ্টগুলো 
খুঁটে খুঁটে জীবনের পৃষ্ঠার পর পৃষ্ঠা উল্টায়
দারিদ্র্যের কষাঘাতে ক্ষত-বিক্ষত দিনগুলো রক্তাক্ত হয়
তবুও ওরা জীবনকে বাজি ধরে বাঁচা-মরার নর্দমায়। 

ওরা একটা ঝলমলে পেলব দিন খোঁজে 
ওরা একটা সুন্দর সমাজ খোঁজে 
ভাত কাপড় বাসস্থানের নিশ্চয়তা খোঁজে 
ওরা একটা ঝলমলে জীবন খোঁজে। 





২।।  ∆ আলোর মধ্যেই অন্ধকার ∆



শ্যামলী থেকে মিরপুরের বাস ধরেছি
বাসের ভিতর আগাছার মত মানুষ
গিজগিজ করছে, অনেকের মুখে মাস্ক লাগানো, কারো কারো হাতে আছে গ্লাভস 
অনেকের কোনটাই নাই, 
ভাইরাস, মৃত্যু এদের কাছে নস্যি
সকাল বেলা হাঁটতে বেড়িয়ে শিশির ভেজা ঘাস যেভাবে মাড়িয়ে দেয় মহাদেবের মত মানুষ, আমাকেও মাড়িয়ে দিয়ে একজন বললো 'সরি'।

গাড়িটা হঠাৎ থেমে গেলো
ট্রাফিক সার্জনের একটা হাত ড্রাইভারের সাথে করমর্দন করতেই গাড়িটি আবার চলা শুরু করলো। একজন যুবতী চিৎকার করে বললো আপনার কী মা বোন নেই ?
আমি তাকিয়ে দেখি একটা লোক তার পাশ থেকে সরে গেলো হন্তদন্ত হয়ে

এর মধ্যেই 
একজন হেই হেই করে উঠলো, 
নিয়ে গেছে নিয়ে গেছে সব,আমার জামার পকেট ফাঁকা,  হাউ মাউ কান্না; 

চাঁদের আলোয় কত কী ঘটে, দিনের আলোতেও  ঘটে, 

আসলেই কী দিনের আলো আছে? নাকি এখন আলোর মধ্যেই অন্ধকার?





৩।।  ∆ সম্পর্কের ধারাপাত ∆



সময় বড়ো অদ্ভুত 
মুছে দেয় পদচিহ্নমালা
খুব যত্নে রাখা  সম্পর্কও;
বেঁধে রাখা মন শুধুই দোল খায় 
ভুলে যায় চলার কথা, 
জানেনা কোন জল কীরকম।

বাঁধন খুলে দিতে হয়
যেভাবে খুলে দেয় ভোরের আলো
বন্ধ রাখা দরজা সব সব.
সময় মাপুক সম্পর্কের ধারাপাত.....




অলংকরণ - মেহবুব গায়েন

০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০

কবিতা

মাটি খোসা পর্ব-২

কবি রোকেয়া ইসলাম এর কবিতা-




১।। ∆ শ্যামল ঘ্রাণে ধুলিকণা ∆

 

চোখ বুঁজলেই অস্তিত্ব ছাপিয়ে আত্মার দায়
নেমে আসে তেরশত নদী
মাটির সাথে আমি আমার সাগর ঊর্মিময়। 

কন্ঠ পোড়া ধোয়া থেকে জ্বলে ওঠে অগ্নিমশাল
ঝরা পাতার জীবন তুচ্ছ সংগ্রাম  ম্লান 
ঝলছে ওঠে পিতার লাস
সফেদ শাড়িতে জননী আমার অনুপ্রাণ। 


বাতাসে বাজে বীরাঙ্গনার সকরুণ আর্তি 
আমার ভেতরেও জেগে থাকে  সবুজে  শ্যামল ধুলওকনা ;
জেগে থাকে নিরন্তর বাংলাদেশ 
পুস্প সৌরভে রক্ত স্রোতে ম্নান সমাপনে  শুদ্ধ লাল সবুজ 
চেনা জানা সব মিলিয়ে এক ঠিকানা...




২।।  ∆ অবধি আবহমান ∆



তুমি বিহীন বসন্তবেলার এই পাট
নিয়মের করাত টানে ভাঙে 
এই যে নৈমিত্তিক উদ্ঘাত
ভাংচুরের অভিঘাত
তার অবচেতন কতোটুকু বা কে জানে। 

চৈত্রের তিস্তায় 
শুকিয়ে যাওয়া অপলাপের নোনতা নিঃসরণ অথবা
ঝরে যাওয়া  টুপটাপ রক্তক্ষরণ 
আজ খুব প্রাসংগিক;
বেখেয়াল বাতাসের অনুরনণের অতীত যাপন
বড়জোর এই উদাহরণ.... 

কেউ জানে না সীমান্ত কোথায় 
কেউ চেনে না ধরনী প্রবহন পথ 
জোয়ার ভাটার নিরবধি বয়ে চলা জীবনে 
মেনে নেই নি অন্যথা... 

পথ চলতেই পথের খোঁজ 
চমকে উঠি থমকে দাঁড়াই 
নির্দ্বিধায় হররোজ। 

অবধি আবহমানে 
কেউ নেই আশেপাশে 
কেউ নেই নিশ্বাসে 
সেই একান্ত আপন ; 
তবুও অপার আগ্রহেই বয়ে যায় -
নিদারুন অচেনা যাপন....




৩।। ∆  ভোর ধর্মান্তর ও কবিতা ∆



ভোরের অপেক্ষায় স্বচ্ছ নিথর ঘোরে 
সবুজ এক পৃথিবী স্বপ্ন নিয়ে 
নব্য ক্যানভাস ইজেলে অনুক্ষণ আঁকে 
বৈষ্ণবী

জলরঙে বোনা নকশি কাঁথা  ধর্মান্তরিত হয়ে 
দুঃখ নামের দিগন্তের রোদবৃষ্টি
এক জীবন জুড়ে। 
মঞ্চের সব প্রম্পটারের নাম হতে পারে -
নাকছাবি 

হ্যারে নাকছাবি 
কেন ভেঙেছিস বেদনা প্রজ্ঞাপিত বাজেয়াপ্ত বয়সগুলো?
যন্ত্রণা কাতর জ্বরঘুমের দুপুরবেলা 
কম ভলিউমে বাজা সন্ধ্যারাত? 
গ্রীষ্মের গোলাপগুলো তবুও ডাকে 
ভোরের কবিও জাগে 
মেমোরি কার্ডের আই. সি. তে 
একদিন একজন ছিল.... 


পূর্বতন  সম্পর্কের জেরটেনে বলতে পারি -
অদ্য মেঘ ভাবনা 
কোন এক নিরোদ বর্ষা দিনের ফ্রেম ভাঙা ছবি




ছবি - মেহবুব গায়েন

°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°

কবিতা

মাটি খোসা পর্ব-২

কবি উত্তম দত্ত এর কবিতা-




১।।  ∆ সন্ন্যাসিনীকে ∆



আমি বিশ্বাস করতাম, কৃষ্ণসাগর থেকে উঠে এসে অন্যমনস্ক আত্মারা একদিন খুঁজে নেবে তোমার কবিতা। সমুদ্রের দেবতারা উচ্চকণ্ঠে পাঠ করবে তোমার নিটোল অক্ষরবৃত্ত। আশ্রম থেকে উঠে এসে তোমার মাথায় হাত রাখবেন মধ্যযুগের স্বপ্নের কবিরা। ঈর্ষায় পুড়ে যাওয়া মানুষের চোখের পাতায়   ঈশ্বর-প্রতিম এক কবি লিখে রাখবেন সোনালি সংলাপ। অলৌকিক আলোয় সহসা ভরে উঠবে তোমার সব-হারানো ধুলোর আঁচল।

আমি জানতাম, মোহনায় পৌঁছোবার আগে তোমাকে পেরিয়ে যেতে হবে অগণন পিশাচের কালো হাতছানি, অসূয়ার মায়াজাল, অক্ষমের গোপন প্রস্তাব। নৈরাশ্যের জরাগ্রস্ত মেঘ ও কুয়াশা তোমাকে বিষণ্ণ করবে ভোরবেলা। শুধু কবিতার জন্য এইসব মৃত্যুস্নান দুপায়ে মাড়িয়ে যাবে তুমি।

তোমার শৈশব দেখেছি আমি, টলোমলো পায়ে অক্ষরের হেঁটে যাওয়া, কাঁচা হাতে প্রতিমা বানানো। তথাপি মাথায় রেখেছি ছায়া, স্নেহময় হাতের আঙুল। নিশ্চিত বিশ্বাস ছিল, একদিন ভুবন পেরিয়ে যাবে তুমি। একদিন আমাকেও ভুলে যাবে, যেভাবে সন্ন্যাসিনী ভুলে যায় ফেলে আসা জরাজীর্ণ গার্হস্থ্য আশ্রমের কথা।





২।।  ∆ 'ছিদ্র না পাইলে শনি প্রবেশ করে না' ∆



ফিরিয়ে দিয়েছ, তাই
এবছর কোনও ফসল হলো না 
আমাদের নাবাল জমিতে। 
উড়ুক্কু সাপেরা এসে নষ্ট করে দিয়ে গেছে
রূপবতী হাঁসের খামার।

মাঝরাতে উঠে জেলেপাড়ার বিধবা বউটি 
ঘুমন্ত তোর্ষার জলে ছুঁড়ে দিয়ে এলো 
গামলা-ভরতি ফলিডল। তার রমণের কাল
ধুয়ে নিয়ে চলে গেছে এই নদী।

উৎসব-বাড়িতে গিয়ে আচমকা বেডকভার তুলে
আমিও দেখেছি জরাগ্রস্ত তোশকের মরা অট্টহাসি ।
প্রেসক্লাবে সাংবাদিক ডেকে আমিও বলেছি :
বিশ্বসুন্দরীর দাঁতে কীভাবে লুকিয়ে থাকে ঘুণপোকা। 

ফিরিয়ে দিয়েছ বলে, এই মৃত মফসসলে 
কবিরা মদ খাচ্ছে দুবেলা।
প্রকাশ্য রাস্তায় দিন-দুপুরে হস্তমৈথুন করছে
পাথরে মাথা কুটছে লুনাটিক ভিখিরির মতো
আর ক্রমাগত ভুল ছন্দে পদ্য লিখে ছুঁড়ে দিচ্ছে
পরিত্যক্ত ফসলের মাঠে।




৩।। ∆ প্রেত ও পিশাচের উপাখ্যান ∆



দুচোখে পেরেক গেঁথে 
চলে গেছ বলে 
তুমিও ভেবেছ অন্ধ হয়ে গেছি আমি।
ভেঙে পড়া প্রাসাদের ছাদে
মৃত প্রহরীর বন্দুকের পাশে
আর কোনো প্রেত জেগে নেই।

মানুষ মেরেছ তুমি --- 
মানুষের রক্তে ভেজা হাতে পাখিরাও ভোরবেলা 
গম খেতে আসে না এখন।
সারাটা বছর একটিও বৃক্ষ রোপণ করোনি তুমি। 
মনে রাখবার মতো একটিও অক্ষর
লিখেছ কি মানুষের চোখের পাতায়?
সারাদিন শুধু মহুয়ার চার ফেলে বসে আছ ব্যক্তিগত দিঘির কিনারে।

যেভাবে প্রত্যেক শিশু অসতর্ক অন্ধকারে একদিন বাবা ও মায়ের অলৌকিক সঙ্গমদৃশ্য দেখে ফেলে সারাদিন অস্বস্তিতে মরে, সেইভাবে 
একটা বোবা কালা তাঁবুর ভিতরে একা একা 
ঘুরে মরছি আমি। 
যেন কিছুই দেখিনি, কিছুই শুনিনি।

কিন্তু যতই আড়াল করো, একদিন তোমাদের অনাচারী সঙ্গম-দৃশ্য দেখে ফেলবে 
কাঞ্চন-বিলের পাখিরা। 
এবং কিছুই না দেখার ভান করে তারা 
পদ্মপাতার উপরে মাছ রেখে উদাসীন ঠোঁটে সারাদিন ঠুকরে ঠুকরে খাবে। 
আর তুমিও সমস্ত দিন কেউ কিছু দেখছে না ভেবে
ছোটো ছোটো পিশাচের হাত ধরে 
অন্ধকারে জাহান্নামে যাবে।

এই পাখিজন্ম আর ভালো লাগছে না বিনোদিনী।
এই নষ্ট স্টেথোস্কোপের গল্প আর ভালো লাগছে না। এই মৃত জিরাফের ভাষা 
এই দিন আনি দিন খাই ---- ঘন্টার জীবন 
ভালো লাগছে না আর।

ছোটোবেলায় যে বাগদি ছেলেটি 
আমাদের গরু চরাত 
আর খড়িনদীর জলে 
উড়ন্ত পাখির ছায়া দেখে দুহাতে মৈথুন করত
তোমার নতুন বন্ধুটির মুখ অবিকল তার মতো।

এইসব শ্যাম্পু করা রাখাল-বালকদের 
সস্তা আন্ডারওয়্যারের গল্প শুনতে 
আমার আর ভালো লাগছে না।




অলংকরণ- অতীশ কুণ্ডু

°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°



Thursday, 1 October 2020

কবিতা

মাটি খোসা পর্ব-১


কবি মেহবুব গায়েন এর কবিতা-




১।।   ∆ নামিয়ে রাখা জীবন ∆



তোমাকে দেওয়া অনেক গুলো বছর মনে আছে চারদেয়াল
যেদিন তোমার মুখ থেকে জীবন নামিয়ে রাখা হলো
আমি দূরে অনেক দিনের ভেজা কাপড় শুকিয়ে নিচ্ছিলাম মধ্য শিবপুর গ্রামে ,
তোমার রং চটা তুলির নজরুলে আমাকে রেখে
ফিরে গেলে....





২।।  ∆ সাদা সাইকেল ∆


আয়না পাতার আঁচে আমি ও জীবন
চা-বিস্কুট 
সাদা সাইকেলে চলে যাচ্ছে সংসার
সঙ্গে আগুন মা 
আমি দগ্ধ দিন....




৩।।  ∆ আলোর ওপারে ∆



ফ্যানের রাজত্ব পেরিয়ে
আমি হাত পাখার বিনুনিতে
 লাল মেয়ে খুঁজি,
খুঁজি ছাপ মুখ
মুখস্থ করা পলাশ নাচ,
খোঁপ কাটা পাহাড়ি মহুল আমাকে ডাকে
স্বপ্ন সেতার জড়িয়ে রাখি আলোর ওপারে...




৪।।   ∆ চন্দন ছন্দ ∆



তীর ছোঁড়া তুমিও পারতে
নেমপ্লেট মুখে টেনে বসাতে
শেষের খেলা
ছক্কা-চার-এক
বাউন্ডুলে আখড়া পার করলে বিনু
হরিলুটে কুড়াই নদী চৈতন্য
চন্দনে ছন্দ পোড়াও বাঁশির রাজকুমার...




৫।।   ∆ স্লেটের রঙ ∆



অযথা আকাশের দিকে শূন্য তাকালে 
মধ্যবলয়ের ভেতর দিয়ে মঞ্চ
নাটক চলছে,
একে অপরকে চেনানোর অভিনয়
রঙ ফুরায় মাটি স্লেট মুখোশ,
বারবার মুছেছি
চিনে রাখা অনেক কিছু
বন্ধু-সভ্যতা-রাস্তা
যেখানে শুরুর শব্দ ভাষ্য 
ছড়িয়ে দিচ্ছে ছবি

একের পর এক নেগেটিভ
ভাষা নয় আমিতো অপুকে খুঁজে নিচ্ছি
                                             কবিতায়...




অলংকরণ - অঞ্জন দাস

°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°


কবিতা

মাটি খোসা পর্ব-১

কবি সতীন্দ্র অধিকারী’র কবিতা-





১।।  ∆ অন্য ভাত অন্য ভারত ∆




১.
ভারতবর্ষের উদোম জঙ্গল থেকে ছুটে আসছে আমার
মা...
সারা গায়ে লেগে থাকা শাদা ভাত
আর ভাতেদের আত্মাহুতি!

কে- কার কাছে জানায় 
                                  প্রার্থনা...
যখন মুখুজ্জেদের ছেলে পিতার উদ্দেশ্যে তর্জনী নামিয়ে
শাল পাতায় ফেলে দেয় ভাতের ঢেলা
আর আমাদের কান্নাগুলি শুষে নেয় কোনো অ্যাক
কৃষকের গোলা ভর্তি ধান

আরও আরও চাপানো হয় পোড়া কাঠ!
জ্বলে ওঠে আগুন
জ্বলে ওঠে নাভি
যাই টুকুস করে ওদের দুটো ভাত দিয়ে আসি!

      

২.

কী হবে হেমন্তের বাতাসে এতখানি কাছাকাছি এসে
                                                     পড়ে থাকা জল
পৃথিবীর চাকা রাস্তা 
বরাবর দাগ রাখে 
অভিযোগ জানাবো না কোনো!  বিন্দু বিন্দু 
                                   স্রেফ যেভাবে ভুলে যাওয়া যায়

তুমি তো জানো মাথা গোঁজার ঘর বলতে যা বোঝায়
                                              তা- ছিল না কখনও
টিউশনির টাকায় পা ভারী হয়ে ওঠে ক্রমশ
                                আজও গাঁয়ে বাঁদর এলে
                                আমাদের মটকা ভাঙে খুব

দেখি বাবার কিনে দেওয়া সেই পিত্তি কালারের 
সাইকেল
একশো মিটার দূরে তোমাদের ভারতবর্ষের রোড!

      

৩.

আমার মুখ ক্রমশ বাবার মুখের মতো হয়ে
উঠছে এখন!  আর
পারিবারিক অসুখ 
গাম্ভীর্য ছুটে যাচ্ছে গ্যাস চেম্বারের ভিতর

আমাদের হাত যেন হিম হয়ে গেছে কবে! 
                              মনে পড়ে কর্মশিক্ষা 
                              পরীক্ষার দিন বাবা হাতে ধরে
কীভাবে আঁকতে হয় ভারতবর্ষের মানচিত্র 

আর আমি মরাইয়ের ভিতর
থেকে বের করে আনতাম বোরোধান 
আর রেখায় রেখায় ভরে উঠত সেই সব ধানেদের আস্ত শরীর
                                                এ মানচিত্র অন্য এক রৌদ্রের
                                                অন্য এক ভারতবর্ষের 

যেখানে আমাদের বোরোধানেরা তড়কা ও রুটির গন্ধে বলে উঠবে
আমাদের ভাতেরা যেন দীর্ঘজীবী হয়!     

   


     
২।। ∆ মুদুন ∆



সারা রাত ঝমঝম ঝমঝম বৃষ্টি!
আর আমাদের টালির ফাঁক থেকে ঝরে পড়ছে
সেই সব দেবতাদের পা - ধোয়া জল

এক হাতে আমাদের বুকে 
টেনে নিচ্ছেন বাবা আর এক হাতে
মুড়ো ঝাঁটা নিয়ে বিড়বিড় করছেন 
                                        নিজেই-

মুদুনটা দেখছি না সারালেই নয়!
    
         




৩।।  ∆ দেওয়াল চিত্র ∆




আমাদের বাড়িতে দেওয়াল চিত্রের সম্ভার ছিল না
কখনও...

যখন খুব ছোটো ছিলাম দেখতাম
গরুরগাড়ি করে আনা হোত তেলিডাঙার মাটি
আর মা তাতে গোবর মিশিয়ে সুন্দর ভাবে
নিকিয়ে দিতেন দেওয়াল!

ফুটে উঠতো খড়ির দাগ...
আর খসে পড়া চাঙড়ার মাঝে মনে হোত
আমি আমার ঈশ্বর
                            দেখছি আজন্ম কাল...
স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ!





অলংকরণ - অঞ্জন দাস

•••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••

কবিতা

মাটি খোসা পর্ব-১

কবি বিশ্বজিৎ আঁকুড়ে এর কবিতা-




১।। ঋতুহীন কবিতা-গুচ্ছ 


১৫.

খোলাই আছে দুয়োর 
ছাঁচতলায় ঘটি ভর্তি জল ! 
পা ধুয়ে ঢুকে যাবে ? 
শুচি করবে আমার বিহান কাল...!

ধান-দুব্বো তেলের মঙ্গল  চাপিয়ে নেবে মাথায় ? 
এখানে উঠোন ভর্তি আমোদ, পাকা ধানের শীষ...
নবান্নের আলপনায় বেজে উঠছে সন্ধের মাদল 
শাঁখ আর মাগরিব সালাতে টকবগে হবে তুমি ? 

নাকি সবই ফালতু কথার মত পাঁচিল  হয়ে যাবে
                            মেখে নেবে? ভিন্ন কোনো রোদ.....  
   




১৯.


পাশ কেটে যে টান খুলে ফেলতে চাইছো  বারবার 
হাতড়ে নিচ্ছ হেমন্ত লতাটির গায়ে লেগে থাকা অন্য হিম
                                                   ভিন্ন রোদের আলো  

কান থেকে খুলে ফেলছ পুরনো দুল 
                                          পা থেকে সোহাগা নূপুর.....
ভেতর ঘরের পর্দাটা যে দুলছে !  নড়ে উঠছে সূর্য ওঠা ভোর.....
দেখ,  একটা বৃত্তের ভেতরেই কেমন  ঘুরঘুর করছ অনিচ্ছায়
তাকে কি কারাবাস বলবে? নাকি ফুঁ দিয়ে উড়িয়ে দেবে
                                                                    হালচাল হাওয়ায়   
ভেতর ঘরের পাণ্ডুলিপি আমি তো পড়েছি 
উলটে-পালটে দেখেছি পাতা, শুঁকেছি  রাতে গন্ধ
                            সেখানে তো কোনো মূদ্রণ প্রমাদ নেই   
 
ঘৃণা করো অথবা পুজো....       
টুগের সিঁড়িটিকে  আমি প্রথম ধাপের গল্প বলি.....
  
গাছে উঠে যাওয়া বন্ধুটিকে এখনও আমি ঘৃণার রঙেই দেখি  



২৪.


তেতে উঠতে পারি না বলেই মাঝে মাঝে জ্বর আসে । সাথে মনখারাপের
 তীব্র গা-গরম। নিজেকেই খারাপ বেসে ফেলি বারবার । অথচ যত্নে ঢাকা 
দিই তোমাকে। জং ধরে। আঙুলে - গলায় -অন্তর দেশে।গণ্ডদেশ থেকে  যে 
ধীরস্রোত নেমে আসে । জাদুঘর থেকে যন্ত্রণা গ্রহণ করি। আমার কফিনেও
কী সেই দাগ লেগে আছে ! যাকে তুমি অন্তর-ক্ষত  নামে ডাকো.......   




২৬.

তবুও প্রতিটি সূচিপত্রে  তোমাকেই দেখতে চায় চোখ। ৯  আর ৮ এর 
ভাগে, ভাগফল ও ভাগশেষে। এই যে দীর্ঘ দূরত্ব ফেলে রেখেছ অনায়াসে। 
ছিলায় আর গাণ্ডীবের নিবিড় নৈকট্যে আঙুল ফসকে গেলেই কী কুপকাৎ হয়?
লক্ষ ও লক্ষ্মণরেখার! অবহেলা ছুঁড়ে দিলে লালন করি তাকে। পালন করি ঘৃণার 
গায়ে লেগে থাকা শোক। গায়েব করি অনিবার্য সব ভাঙন। তোমাকে স্পর্শ করতে 
কতটা পথ টপকাতে হয় অলিভিয়া!  কতটা শূন্যতা পেলে ঝেঁপে আসে কবিজন্ম? 
কেঁপে ওঠে জলের গভীরে  ঢিল দেওয়া ঢেউ........      


ছবি - মেহবুব গায়েন

°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°
 

কবিতা

মাটি খোসা পর্ব-১

কবি বিপ্লব ভূঞ্যা’র কবিতা-






১।।   ∆ আলো পরিবার ∆



জানালা আমার বন্ধু না
জানালা আমার শত্রুও না
জানালা ও ঘরের মেডিটেশান
আমার মেডিটেশান ওপারে একটা সংবাদপত্র
একটা চিরকুটে ঝরে যাওয়া
কাঁচা সকালের
জানালা একটা সরলরেখা

আলোর পেছনে সাজিয়ে রাখা
সমার্থক আলো পরিবার ।





২।।  ∆ সমবায় শিখে নেবে ∆



স্বপ্ন পোষার একটা ছোট্ট মাঠ
উপহার দিয়ে ছিল বাবার সমান উঁচু সময়
সাবধানে কেটে ,কেটে বসালাম চারাগাছ
ভেবেছিলাম ওরাও সমবায় শিখে নেবে একদিন
না বুঝে পায়রা উড়ে গেল
ডানায় হাওয়া ভর্তি করে উড়ে আলো
জীবনা নদ ডুমুর গাছের দিকে
তারপর একদিন উড়ে আসার অভ্যেসে
দেখি নাম, গোত্র ,ভুল ঠিকানার
প্রুফ দেখে লাল কালির
সরলরেখা টেনে দিচ্ছে ক্রমশ ...




৩।।  ∆ অনন্ত ঘোড়ার দিকে ∆



ততদিনে তুমিও বিপ্লব আঁকছো
লিখছো কলেজ ক্যাম্পাস-সেলাই,স্টিচের
অভ্যেস
খুব করে লিখলে ওসব কিছু
ভেবেছিলাম তুমি ট্রেনের ঝিক,ঝিক !
                   তুমি আগুন!
                    তুমি কবিতা পাঠ!
সেই সব বাঁধানো বিপ্লব ফ্রেমে
পারিনা ওসব - আমার ব্যর্থ কলমবাস
তোমার বিপ্লবে গোলাপ পুঁতে দিতে
মেঘ মেয়েদের খোঁপার বাগান
আলাপে এনেছি
বিকেল মেয়েরা সূর্য পাঞ্জাবিতে
খোঁপা ডুবিয়ে মেহেন্দি শেখাছে





৪।।  ∆ পরিচিত রিয়্যালিটি শো ∆



একটা সাঁওতালি রাতের বুকে
চাঁদ সুন্দর ডুবে গেল
টোটোওয়ালার সিরিয়াল দেখা
বউ,আগে দেখেনি এইসব
পরিচিত রিয়্যালিটি শো
বিচিত্র চিত্র দেখতে দেখতে
টোটোওয়ালার বউ
                   ঝমকে ওঠে!
আর একটা শুক্লপক্ষ ফিরে এলে
ডুবে যাওয়া চাঁদ সুন্দর
উঠে আসে ঐ বুক থেকে

টোটোওয়ালার বউ দেখছে
মাঝে মধ্যে বিকল ফুসফুস
লিভার -ইনহেলার
কালো রাস্তা শুয়ে আছে
শান্ত চোখের মতন..




৫।।  ∆ তুমি -ঘ্রাণ হরিতকী ∆



তুমিও পেয়েছো সেদিন - কাঠমল্লিকার ঘ্রাণ
আমিও পেতাম তেমন
তারপর, তারপর তোমার ঘ্রাণের কাছে
সব ধুয়ে গেছে
ফুল হয়ে আমার মন্দির

কলেজ মোড় থেকে রাজাবাজার
এ পথ জুড়ে আশ্চর্য ভাতের গন্ধ
আর কোনও ঘ্রাণ আমার মনে নেই
কতগুলো শতাব্দী জুড়ে আমার
                                     ডায়ালোসিস
হাজারো বৃষ্টিপাত শেষে
তোমাকে আসেনা হরিতকী ঘ্রাণ
মাঝে ,মাঝে অরণ্য বীথিরা এসে
চোখের চাদর সরালে - আশ্চর্য ভাত

শতাব্দী বয়সী মা বেড়ে দেয়
                                 ভাতের ছায়া ...



অলংকরণ - মেহবুব গায়েন

°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°

কবিতা

মাটি খোসা পর্ব-১

কবি অঞ্জন দাস এর কবিতা-






১।।  ∆ রাধিকা রসিক ∆



মাটির ওপর বিছিয়ে পড়ো যেমন তেমন
শান্তি খোঁজো ঝমঝমে দিন মেঘের মনে   
তুমি এলে গন্ধ চিনি বলেন মাটি
খাঁটি কথার একটি কথা শেকড় জানে

মানে বিহীন গর্জে ওঠেন তীক্ষ্ণ দুপুর
দুপুর মানে গল্প তো নয় সেসব দিনের
চেচিঁয়ে ওঠেন নীরবতা সময় কাবার
গরম বোধের বোধ মরেছে নিজের ফোনে

কোনর কোনে জমতে থাকে ঝলক নিনাদ
সেদিন হবে জমবে জলা ভরাট মাঠে
কাটিয়ে সময় আর কাটেনা বলবে তুমি
মেঘের মনে শান্তি বিলোই সূর্য পাটে




২।। ∆ আগুনের ধাতুরূপ ∆
             

সাত.


"তোমার হাতে ছুঁচ সুতোটি আমার হাতে ফুল
তাইনা দেখে বিশ্বজুড়ে হিংসা হুলুস্থুল"

প্রিয় কবি স্ব-ভূমি সীমানা লেখে পার্বত্য নদী ঢালু পথে 
জলডুবি সিনেমায় রিল ছোটে ভেসে ওঠে দহন মথুরা 
ল্যান্ডমাইন পোতা আছে বাঁশির ফোকরে কিছু লয়
মনে হয় হত্যা করি কলঙ্ক ভয়ের কিছু গানের পসরা  
 
পরাগে পরাগ ময় চোখ অন্ধকারে নামে খুশিগন্ধ রেণু 
ঘোরশাখা আলো খোলে অনন্ত পতনের প্রিয়  প্রসাধনী 
পাপড়ি ঠোঁটের কিছু মৌমাছি উড়ে যায় ফিরে আয় ঠোঁটে
ঝড় ওঠে রটে যায় খন্ডাংশ মেঘের পদ্য সংক্ষিপ্ত জীবনী  

 হলুদ পাখির শীষে ঘন হয় টি শার্ট  লবঙ্গ প্রশাখা
 অল্প বয়সী জলে কোমরের যন্ত্রণা ঢালে নলকূপ  
ততটাই  শীতল বোধ যতটা উষ্ণ রাখো রোদের বর্ণনা
প্রতিবারে লেখো"তোমাকে ছোঁয়ালে কমে আমার অসুখ"    

 



৩।। ∆ ঝড় খোলা জামা ∆



সাত.

উত্তরা থেমে যায় ফ্রিজ খোলা দেহে
খিদে পচে  সপ্তরথী আপন মানেনা
জন্মপ্যাঁচ ফেরি গায়ে সমুদ্র বানালো 
শামুকের মেরুদণ্ডে মুক্তি কামনা
   
জাতীয়তা ভাঙে রোজ অমেরু বাতাস
আত্মলোভ মুণ্ডুহীন দাঁড়িয়ে বসতি
হিংসা ক্রোধ সংস্কৃতি চাপলে আঁঙুলে
চক্রবৃদ্ধি  সুদ গোনে রাধিকার পতি





৪।। ∆ চেষ্টাচরিত্র ∆

 
 
আমি চাঁদ নই তোমার আলোয় আলোকিত আমি হবো
বৃষ্টি হতে চাই বার বার 
অক্ষরে মেঘ শব্দ যেবার অমনিই ঝরে যাবো     

পায়ের পয়ার কন্ঠে বাজাবে সুর
হাতের কালি রঙ দেবে দাও মনে
তোমার আপন মহিত শাসনে 
বুক থেকে হিরে খুলে নিতে জানে
কানে কানে ওড়া ঝড়ের পাখিকে 
টুকরো খড়ের ঘর তুলে দেবে 
ধুলো বাতাসের গতি ঢেকে দেবে নরম হাতের পাতা
তুনি ত্রাতা নও আমিও তোমার কোনকালে নই দাতা

একটি কলমে কথা অমৃত দুজনেই ভাগ নেবো 
আংটি বানাবো যে যার মাপে ধাতুজীবনের খাদে পরমাদে
আমি চাঁদ নই তোমার আলোয় আলোকিত আমি হবো 
অক্ষরে মেঘ শব্দ যেবার অমনিই ঝরে যাবো




৫।। ∆ রেলিং এ ডোরা ডোরা গতমাসের বিবাহ বার্ষিকী ∆



একটি কার্তুজ
নিশানা টোল খাচ্ছে উপত্যকায়
ছুটে গেলে মৌন বিছায় শীষ
পাখিদের  যুদ্ধগত বাসায়    
নিখোঁজ অরন্য  হৃদপদ্মনাভী
 আর তার কারেন্ট পাসপোর্ট।

গত মরশুমে হরিণ জল ছিল  পিলুং ঝর্ণায়
 প্রবাসী উপত্যকা টাটকা জয়ীতা কাশ্মীর  
আর একটি ইলেভেন্থ আর্য রমণী
ওরা সব বাড়ি ফিরে গেছে জমে গেছে সীমাহীন
দৃঢ়তা খুঁজতে এসে নদী হবো সে উত্তাপ ছিলনা আমার

 তবু বলি মন্টি মনা এসপ্তাহ কিচ্ছু হবেনা
হাতখালি ড্যামেজ কার্তুজ

পাকা রোদ মুশম্বি বাগানে কিছু  নষ্ট করেছি
নষ্ট জানালা গায় কাঁঠালের মাছি 
রেলিং এ ডোরা ডোরা গত মাসের বিবাহ বার্ষিকী
 আমাকে শুয়োর  দামে বেচে দাও সীমান্ত রক্ষীরা ফিরেছে  
একটি কার্তুজ
নিশানা টোল খাচ্ছে উপত্যকায়।




অলংকরণ - অমৃতা নায়ক

°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°

কবিতা

মাটি খোসা পর্ব-১

কবি কুমারেশ তেওয়ারী’র কবিতা-





১।।  ∆ ছুঁচসুতো ∆



সেলাইয়ের পাঠ নিয়ে ব্যস্ত থাকি, আত্মমগ্ন হই
যেখানে যা ছেঁড়াফাটা, জাগতিক বিস্ফোরক ভ্রম
আনাড়ি আঙুলে রাখি নবিসের সেলাই প্রয়াস
আলোর পর্দার ফাটা অংশ দিয়ে জায়মান কালো
অন্ধকার, ঢুকে আসে ভাঙনের কাল স্রোত হয়ে
সেখানে সেলাই দিই তড়িঘড়ি, অমৃতজাতক

ছুঁচের ছিদ্রের পথে সুতো পরাবার কালে দেখি, 
ওইপারে অভিসার, বৃন্দাবন, বিনোদিনি রাই
গোপন হাঁড়িতে রাঁধে হিরণ্ময় ভাতের সুঘ্রাণ

বিত্রস্ত আলোকে ঠাট, বিভঙ্গের সামান্য বদল 
টেরিকাটা শ্যাম দেয় অনন্তের ফুঁয়ের নিদান
এখনও অপাপবিদ্ধ, থেকে থেকে তাহার বাঁশিটি
কঠিন আখরোটের হৃদভেজানো মর্মধ্বনি তোলে 

সুতোতে নিদান রেখে ছুঁচছিদ্রে সযত্নে পরাই
রাই অঙ্গ ছুঁয়ে সুতো শ্যামতনু কেমনে বেড়ায়!





২।।  ∆ গৃহ ∆



আমার যে ঘর, তাকে গৃহ বলতেই ভালোবাসি
আমাকে প্রাচীনপন্থী যদি বলো
পদাবলী থেকে শুনিয়ে দেবই আনপথ কথা
বিদ্যাপতির ‘তাতল সৈকত’ থেকে
তপ্ত বালি এনে দেখাবো তোমাকে
বালির হৃদয়ে এখনও রয়েছে লেগে
                                           অনন্ত পিপাসা

শুদ্ধ ও কোমল নি-র দিকে ঠেলে দিয়ে
তোমার পায়ের গোছে বেঁধে দেব নাচের ময়ূর
অতঃপর নাচ-মুদ্রাটির থেকে তুলে নিয়ে
ফুলবন 
আমারই ঘরের কাছে এসে চেঁচিয়ে ডাকবো,
ও আমার গৃহ দরজা খোলো
হ্যাঙ্গারে ঝোলানো জামাটির ছেঁড়া বোতাম এখন
খোঁজ করবো আমি, চোখের নিশিপদ্মে নীল আলো জ্বেলে

ছুঁচসুতো কি সেতু হয়ে উঠতে পারেনা? সম্পর্ক সেলাই?




৩।।  ∆ মৌচাক ∆



তালা খুলে ঢুকে যাও অন্ধকার ঘরের ভেতরে
হয়তো প্রথমে দেখতে পাবে না কিছু
সাদা দেয়ালগুলিও যেন লুকিয়ে রেখেছে রং
পরীক্ষা নিচ্ছে তোমার 
কতটা আলোক আছে চোখের মোহনে

ম্যাঁও শব্দে লাফ দিয়ে তোমাকে ডিঙিয়ে যাবে
কোনো এক বেড়ালের চোখ
কিছুটা ঘাবড়ে গিয়ে পুনরায় থিতু হয়ে তাকাবে আবার
দেখবে কীভাবে রূপ নিচ্ছে আলো
প্রতিটি আসবাবের থেকে, বেরিয়ে আসছে নৃত্য আর বাক

তোমার ভেতরে মধু, গড়িয়ে নামছে 
বুঝে নিয়ো অতলান্তে জেগেছে মৌচাক




৪।। ∆ বিষদাঁত ∆



বিষদাঁত নিয়ে কতখানি খুশি, সাপ?
এই প্রশ্নে মাথা চুলকোতে চুলকোতে এক বক
উড়ে যায় দিগন্ত ছাড়িয়ে
ঠোঁট থেকে তার খসে পড়ে মাছ

কিছুটা দৌড়ে যাই, উত্তর চাই উত্তর চাই

ততক্ষণে একটি কাঠবিড়ালি 
আমাকে একটুকরো উপহাসে ভাসিয়ে দিয়েই
দৌড়ে উঠে যায় তার গাছের কোটরে
কিছু পরে ঠোঁটে চেপে ধরে নিয়ে আসে
শুকিয়ে যাওয়া একটি বিষদাঁত
উপুড় করতেই ঝরঝর ঝরে পড়ে জ্যোৎস্নার হাসি

আমিও উত্তর চাই বলতে বলতে 
দৌড়ে যাই আলের দিকে
সেখানে তো এক অতিবৃদ্ধ সাপ বহুকাল ধরে
দেখে আসছি তার আয়ুক্ষয়

বিষদাঁত নিয়ে খুশি তো হে বয়ঃবৃদ্ধ সাপ?
যেই খুলেছে হাঁ, দেখি, তার মুখের ভেতরে
থাম ভেঙে বেরিয়ে আসছেন নরসিংহ!
প্রহ্লাদের হাতের ভেতরে প্রাচীন বিষ্ণুপুরাণ!



অলংকরণ- মেহবুব গায়েন

°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°


কবিতা

মাটি খোসা পর্ব-১

কবি দিশা চট্টোপাধ্যায় এর কবিতা-




১।।  ∆ নিছক বৃষ্টিকথা  ∆ 



 আকাশে আজ মেঘ নেই।
তবু মনের ভিতর  নিম্নচাপ 
গ্রীষ্মদিনের দমবন্ধ করা হাঁসফাস
হয়েতো এবার ঝরে পড়বে
জুঁইফুলের বৃন্দচ্যুত!
বর্ষায়  অজস্র  জলধারায় 
কেঁদেও ফেরাতে পারব না যাকে 
সেকি এই বৃষ্টি ধারা?
কিংবা ভেজা  অক্ষর অজাত?
এ সবই কি নিয়তি?
অঝোর ধারায় অশ্রুস্নাত.......
আমার পরনের শাড়ি স্মৃতিজ্লে ভিজে আছে।
অথচ কী  অন্ধ তুমি!
বারেবারে বৃষ্টি চাও!!




২।।  ∆ অলীক ∆   



যতবার তোমার কথা 
লিখব ভেবেছি
ততবার ভাষাহীন হয়েছি।
আষাঢ় দীর্ঘবেলা 
কোনদিকে গেলে ভালো হতো জানি না।
ঘর নির্জন ততধিক নির্জন
ঘরের ছায়ারা .......
ক্ষেপে ওঠে শ্রাবণ সন্ধা
জ্যোৎস্না ক্রমশই অলীক এখানে।




৩।।  ∆ অমিই নারী আমিই নগরীক ∆
    

 
অমি এক নারী; নাগরিক
নিজের বাড়ি ছেড়ে
স্বামীর ঘরে ঘর বাঁধি।
দীর্ঘকাল ধরে খেলাধুলোয়  মেতে থাকতে থাকতে
ম্লান, সম্ভাবনাহীন এক সাগরের খোঁজে থাকি....
 গোটা জীবন ধরে কিছুই পাইনি।
যা পরিবার পরিজন দিতে পারত, দেয়েনি।
সুখের বদলে পেয়েছি অসুখ
ঢেউ উপচে ওঠে
তারপর
বলাই বাহুল্য ভাসিয়ে নিয়ে যায়ে  সব।
আমার শহুরে চোখ
দুপুরের রোদে  পুড়তে পুড়তে দেখেছে----
কেবল মানুষ নৌকার  নিকট দাঁরালে
গোপনে কোনো ছবি
সাগরও হয়ে যেতে পরে।




৪।।  ∆ অনুচ্চার ∆



চারপাশে বড্ড আওয়াজ 
কতবার  আর্জি জানিয়েছি
কোনো  শব্দ কোরো না।
কেউ শোনেনি, কেউ শোনে না।
কতবার বলেছি------ 
নিঃশব্দে কথা বলতে শেখো!
গাছেরা  বাতাসে দুলতে দুলতে নিঃশব্দে  ঢলে পড়ছে মাটিতে....
দেখেছো কী? 
জলের স্রোতে নীরবে মিশে যাচ্ছে
জীবনের ছায়া!
মৌন ধ্রুবপদে গান  গাইছে পাহাড়ও.....
এতকাল নিজেকে গোপন রেখেছিলাম অন্য ব্রক্ষেন্ডে
আর নয়ে,
রক্তের কত ধ্বনি
হৃদপিণ্ড একা একা শোনে!!
নিঃশব্দে পুবে সূর্যদয়, 
পশ্চিমে অস্ত যায়ে, নিঃশব্দে!!
আমার দু'চোখ যত  দূর  দেখতে পায়ে
 ততদূর  চেয়ে থাকে------
কতবার বলেছি, শব্দ কোরো  না
নিঃশব্দে কথা বলতে শেখো।




ছবি - অহীন্দ্র কুমার দাস
–––––––––––––––––––––––––––––