প্রসেনজিত রায় এর কবিতা -
∆∆
পাহাড় এবং তুমি
বোকার মতো পাহাড় দেখে খুশি হই
মনে হয়,
এই বুঝি ছুঁয়ে ফেলছি ঝরণার জল, কাঠের দোতালা, নির্জন টং ঘর,
প্রেমিক-প্রেমিকার একান্ত পাইন বন, অথবা তোমাকে...
পাতার ফাঁকে দুর্লভ সূর্যাস্ত দেখে হাসতে থাকি
হাসতে হাসতে ঠকে যাই, ঠকে গেলেও
আমার অবৈধ উচ্চারণের একমাত্র সঙ্গী তুমি
আমার ছোঁয়া হয় না কিছুই!
রাস্তার সব ধুলো চোখে মুখে নিয়ে বাড়ি ফিরি
বুকের ভেতর ভাঙতে থাকে পাহাড়ি নদী, বনফুল
চোখ লাল হয়ে আসে। মা বুঝতে পারেন, আবার নেশা করেছি।
মায়ের চোখের ফাঁকি দিয়ে কী করে তোমায় দেখি বলো তো?
∆∆
মৃত্যু
একটা মৃত্যু ফড়ফড় করে দেহ ছেড়ে উড়ে যায়
কেউ জনে না, কোথায় যায়?
একটা মৃত্যু মানুষের ভিতেরেই মরতে থাকে রোজ
নিকোনো উঠোন ছেড়ে বেরিয়ে যেতে যেতেই মনে হয়
যেন ফিরে আসি
অথচ, যদি ফিরে না ফিরি, আটকে পড়ি কোথাও
তুমুল বৃষ্টির মাঝে---
কোন পাখি উড়ে যায়, কে জানে এ ঝরের দিনে?
বাড়ি থেকে বেরিয়ে সব রাস্তা নদী হয়ে গেছে
পাড়ে পাড়ে বাঁধানো শশ্মান, বটগাছ--- কত পাখি!
ঝাঁকে ঝাঁকে উড়ে আসছে আরও....
∆∆
ঠিক কেমন যেন!
তোমরা সবাই কেমন কেমন হয়ে যাচ্ছ
আমি বুঝি না, ঠিক কেমন?
কিন্ত বুঝে যাই, ঠিক কেমন যেন...
কতদিন বড়ো হচ্ছে না মায়ের চালতা গাছটি
পোষ মানছে না ভুলো বিড়াল
বাক্সে জমে থাকা জামাকাপড় রোদে আসছে না
কলের পারে কেমন যেন, কেউ স্নানে যাচ্ছে না
আমি বাবার দিকে তাকালে, বাবা মা'র দিকে তাকায়
মা উনুনের দিকে তাকালে, আমি আকাশের দিকে তাকাই
আকাশটা যেন কেমন কেমন ঘোলাটে,
যেন সব মেঘেরা ফেরি করা বন্ধ করে দিয়েছে
চুপচাপ, নিশ্চুপ---
বৃষ্টি হওয়ার কথা ছিল, তাও হল না
খালি বারবার ভুলভাল মোরগের ডাক শুনছি!
অলংকরণ - সুধাংশু বাগ
•••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••
No comments:
Post a Comment