[] মেহবুব এবং শান্তিব্রত
এক
বরং অনুভূতিকে আশ্রয় করি, অমূর্ত ধারণাকেই গ্রহণ করি, সেই সাধনার কাছে যেতে চেষ্টা করি বিনম্র সত্য নিয়ে। তারপর চোখ বন্ধ করে খুঁজতে থাকি সেই তীক্ষ্ণ খসড়ার শব্দ। সমকালীন পরিবেশের মধ্যে কবি সময়ের স্রোতে কাণ্ডারী, নেমে পড়েন ভবিষ্যতের সন্ধানে। অতীতকে আঁকড়ে ধরেই সমকালীন সময়টাকে মেনে নেয় । তাই আসে ভবিষ্যত। এই যে নিশ্বাস নিচ্ছি তখনও কি সুর খুঁজে চলেছেন তিনি, আড়বাঁশি বাজাচ্ছেন জ্যোতির্গময়? তবে আমার উৎস কি জোনাকি বয়ে বোড়ানো পাগলপারা বাতাস ? তাই প্রতিদিন জন্ম হয় সম্ভাবনা। জন্ম হয় মাটি মাখা নাভিমূল আর সুগন্ধী গন্ধরাজ। তারই নাম পরা অথবা অপরা , তারই নাম পিপাসা। কেবল নিজেরই অপেক্ষা থেকে পরাজিত হতে চাইনি কেউ –
দুই
জড়বস্তুর ছন্দকে জড়িয়ে ধরতে সজীব হতে হয়। শরীর এবং আত্মার স্তরে একে অপরের প্রতিটি স্পন্দন অনুভব করতে হয়। যেমন ধরুণ মৃত কাণ্ডের উপর সাদা কালো ছত্রাক, সম্পূর্ণ পরজীবনে থেকেও সূর্যের সাথে জন্ম মৃত্যুতে জড়াজড়ি। অন্ধকার নিচ্ছে, নিচ্ছে পরোক্ষ আলো। হাওয়া আসছে সেই দক্ষিণ থেকে। আসেপাশের কথাবার্তা হাঁটাহাঁটি এমনকি গরম কিংবা ঠাণ্ডা ভালোবাসতে বাসতে বুঝতে পারছে কিছুই বদলায় নি। কিন্তু আশ্চর্য হতে হয় — ঘড়ির শব্দ আসছে। হৃদয় ছুটছে অথচ বৃক্ষলতার মৌনতার কাছে তার কোনো নবজন্ম নেই। চিড়চিড় করে ছড়িয়ে পড়ছে ছোট্ট গ্রামের গড়পড়তা কান্না। পোকামাকড়ের গাছপালায় হয়তো আর্দ্রতা হয়তো অনার্দ্র খুশি।
তিন
আমি সকাল সকাল সকালের ভিতর নেমে যাই। জুতো পরতে পরতে আমাদের পায়ের পাতা শক্ত থেকে নরম হয়ে যাচ্ছে। আমদের নতুন জুতো পরার অভ্যাসে অনেক সতর্ক, তবুও কাঁচা মাটির গুঁড়ো লেগে যাচ্ছে পায়ের ভিতর। গতবারের থেকে আরও খারাপ এই রাস্তা। মোচড় লাগছে নিতাই মামার পায়ের গাঁঠে। রক্ত জমাট বাঁধছে মোচড়ানো অনুভবে। সেখানেই আমাদের সাক্ষাৎ হয়, ছোটবেলা থেকেই পুকুরটা বাঁশঝাড়ে ঢাকা, চুইয়ে আসা আলোর ফোঁটা গুলি চাঁদপানা। তার দিকে তাকিয়ে আমার বেড়ে ওঠা - একটির পর একটি সিঁড়ির ধাপে শুধুই আগাছা। এবং পরবাসী বোল্ডারে পায়ের নখ উঠে যায় — রক্ত পড়ে ফিনকি দিয়ে।
No comments:
Post a Comment