শাপলা পর্ব - ৫
কবি রাজেশ্বরী ষড়ংগী এর কবিতা-
১।। • সনদ •
প্রতিটি সর্বনাম ছায়াবৎ ধ্বনি
কিছুই থাকেনা বাকি- নামমাত্র
মৃত কথা, মন্ত্রপুষ্প, ছায়া ভাসে জলে
মাটির দাওয়ায় ওড়ে লতানো চড়ুই
হৃদয়ে বেঁধে রাখো তার
দু-একটি বকুল ফুলের আলো
তোমার সনদ পাঠাও মধ্য আষাঢ়ে
জানিনা কিভাবে এই মন্দার বাতাসে
সর্বশেষ দ্রুতিটুকু ছুঁয়ে
জন্মান্ধ ভ্রমরেরা ওড়ে
২।। • পরজন্ম •
দেখো প্রিয়,
এ ঝড় উত্তরণের
সামগান শ্যামাঙ্গী শষ্যের
করকুন্তলে ভরে দাও সকল আলো
উচ্চারণে ভরে দাও প্রকোষ্ঠ আধার
শরীর থেকে ভেসে আসে জলের মন্ত্র, ক্ষমার আড়াল
বিদ্যুৎঘন এই মেঘ মোহনায়
সমস্ত চুম্বনরাশি ঢেলে দাও আদিগন্তে
পরজন্মহীন এই আলোর জাহাজে
৩।। • সমর্পন •
দেহকাল ধরে ফুটে আছে ফুল
তার সমর্পণ কোথাও রাখিনি,
উৎসর্গপত্রটুকু ছাড়া ।
মেঘের উপত্যকা নেমে এলে-
দু'চোখে অন্ধকার খুলে বসি।
ক্লান্তির পায়ে বাঁধা থাকে গতজন্মের কথা।
একটি মোহিতসুর ডেকে ওঠে বাঁশির আড়ালে।
৪।। • গন্ধ •
নদীকে জানাই
গাছ মাটি আর অশ্রুর কথা।
নদী আমার পূর্বজন্মের আলো।
মায়ের শরীরের গন্ধ নিয়ে বয়ে যাচ্ছে
জন্ম-জন্মান্তর
অবগাহনের সব ছাই ভেসে যাচ্ছে স্রোতে ও জলে।
৫।। • জীর্ণ ধুলোর দিন •
জীর্ণ ধুলোর দিন শেষ হলে অনন্ত গ্রহণ বেঁধে চলে যাবো শিমুলের বনে।
অতল শূন্যকে
শিল্পসম্মত খুন করে ফেলে গেছে যারা,
তারাও, শিরায় শিরায় তীব্র অন্ধকার টেনে বেঁচে থাকে
নিমগ্ন বকের ঠোঁটে।
নাভিকুণ্ডের পাশে সুগন্ধী আলো জ্বেলে বসে আছি জ্বরা ও মৃত্যুর দিকে--
জীর্ণ ধুলোর দিন শেষ হলে, অনন্ত গ্রহণ বেঁধে চলে যাবো শিমুলের বনে।
অলংকরণ - ইন্দ্রানী পন্ডা
""""""""""""""""""""""""""""”""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""
No comments:
Post a Comment