Thursday 1 October 2020

কবিতা

মাটি খোসা পর্ব-১

কবি দিশা চট্টোপাধ্যায় এর কবিতা-




১।।  ∆ নিছক বৃষ্টিকথা  ∆ 



 আকাশে আজ মেঘ নেই।
তবু মনের ভিতর  নিম্নচাপ 
গ্রীষ্মদিনের দমবন্ধ করা হাঁসফাস
হয়েতো এবার ঝরে পড়বে
জুঁইফুলের বৃন্দচ্যুত!
বর্ষায়  অজস্র  জলধারায় 
কেঁদেও ফেরাতে পারব না যাকে 
সেকি এই বৃষ্টি ধারা?
কিংবা ভেজা  অক্ষর অজাত?
এ সবই কি নিয়তি?
অঝোর ধারায় অশ্রুস্নাত.......
আমার পরনের শাড়ি স্মৃতিজ্লে ভিজে আছে।
অথচ কী  অন্ধ তুমি!
বারেবারে বৃষ্টি চাও!!




২।।  ∆ অলীক ∆   



যতবার তোমার কথা 
লিখব ভেবেছি
ততবার ভাষাহীন হয়েছি।
আষাঢ় দীর্ঘবেলা 
কোনদিকে গেলে ভালো হতো জানি না।
ঘর নির্জন ততধিক নির্জন
ঘরের ছায়ারা .......
ক্ষেপে ওঠে শ্রাবণ সন্ধা
জ্যোৎস্না ক্রমশই অলীক এখানে।




৩।।  ∆ অমিই নারী আমিই নগরীক ∆
    

 
অমি এক নারী; নাগরিক
নিজের বাড়ি ছেড়ে
স্বামীর ঘরে ঘর বাঁধি।
দীর্ঘকাল ধরে খেলাধুলোয়  মেতে থাকতে থাকতে
ম্লান, সম্ভাবনাহীন এক সাগরের খোঁজে থাকি....
 গোটা জীবন ধরে কিছুই পাইনি।
যা পরিবার পরিজন দিতে পারত, দেয়েনি।
সুখের বদলে পেয়েছি অসুখ
ঢেউ উপচে ওঠে
তারপর
বলাই বাহুল্য ভাসিয়ে নিয়ে যায়ে  সব।
আমার শহুরে চোখ
দুপুরের রোদে  পুড়তে পুড়তে দেখেছে----
কেবল মানুষ নৌকার  নিকট দাঁরালে
গোপনে কোনো ছবি
সাগরও হয়ে যেতে পরে।




৪।।  ∆ অনুচ্চার ∆



চারপাশে বড্ড আওয়াজ 
কতবার  আর্জি জানিয়েছি
কোনো  শব্দ কোরো না।
কেউ শোনেনি, কেউ শোনে না।
কতবার বলেছি------ 
নিঃশব্দে কথা বলতে শেখো!
গাছেরা  বাতাসে দুলতে দুলতে নিঃশব্দে  ঢলে পড়ছে মাটিতে....
দেখেছো কী? 
জলের স্রোতে নীরবে মিশে যাচ্ছে
জীবনের ছায়া!
মৌন ধ্রুবপদে গান  গাইছে পাহাড়ও.....
এতকাল নিজেকে গোপন রেখেছিলাম অন্য ব্রক্ষেন্ডে
আর নয়ে,
রক্তের কত ধ্বনি
হৃদপিণ্ড একা একা শোনে!!
নিঃশব্দে পুবে সূর্যদয়, 
পশ্চিমে অস্ত যায়ে, নিঃশব্দে!!
আমার দু'চোখ যত  দূর  দেখতে পায়ে
 ততদূর  চেয়ে থাকে------
কতবার বলেছি, শব্দ কোরো  না
নিঃশব্দে কথা বলতে শেখো।




ছবি - অহীন্দ্র কুমার দাস
–––––––––––––––––––––––––––––

No comments:

Post a Comment