অনির্বাণ দাশ এর কবিতা-
১।
∆ রাত্রিকালীন ∆
এদিকে পুন্নিমে চাঁদ শরৎ আকাশে
টেলিস্কোপ ছাড়াই চন্দ্রযানগুলি দেখতে পাচ্ছি
আরও দূরে এলিয়েন হাসছে হা হা
এখনও পৃথিবী জুড়ে কেউ খেতে পায় কেউ পায় না
গ্লাসে গ্লাসে সাজানো মদ দুধ আর রমণীর মন
রজনী যাপনের ঘোর কাটে অবশেষে
রাত দুটো বেজে গেছে আর আমাদের মাতৃদেবী শয্যাগত
রকের ছেলেরা যারা মেয়ে দেখে টিজিঙে অভ্যস্ত
ওরা এসে নিয়ে গেল হাসপাতালে
মন্ত্রী ধরে বেড পেতে হয় যে-দেশে
পাড়ার বখাটে দিনে ভূত রাত্তিরে দেবতা
গ্লাসে ঢেলে নিচ্ছি জল চোখ লাল
পুবাকাশও...
২।
∆ অলি ∆
বহুফুলে ঘুরে শেষে দিনান্তের ক্লান্তি ---
গানের কলিরা ফোটে ঠোঁটে।দুটি কালো
চোখে কতো ভাষা তান! বন্ধু হবে বলো,
শিখে নেবো দর্শনের অপঠিত ভ্রান্তি।
কতোদিন হৃদিতলে পরাগ প্রভৃতি
আসেনি নিবিড় হয়ে।সকলই হারালো।
বিষাক্ত হুলের ঝাঁঝে বিদ্ধ করে তোলো
জানি ; তবু সখি দ্যাখো পরান-প্রতীতি।
মধু আর পৃথিবীতে নেই কোনোখানে,
কুসুম ধূসর হলো ব্যপ্ত ধুলো ঝড়ে ;
গভীর অসুখে আছি শোনো গো বিজনে
স্নেহ প্রীতি নেই আছি একা একা ঘরে,
পক্ষ বিধুনন করো মদির আননে
মরণের প্রৈতি দেখি প্রেম রূপ ধরে ।।
৩.
∆ মাস্টার মশাই ∆
কোথায় চলেছেন বেখেয়ালি মাস্টার মশাই
হাতে ছড়ি নেই বাজারের ব্যাগ
দুঁদে মাস্টার ভীষণ শাসনে ডানপিটেরা হতো জড়
সামান্য ভাইরাসে মুখ ঢেকে
কোথায় চলেছেন বেখেয়ালি মাস্টার মশাই ।
যাকে সেদিন কান ধরে দাঁড় করিয়ে রাখলেন
কালচক্রে সে কখন ডাক্তার সেজে পেন্নাম শেষে
হাসি একগাল
যার সেদিন মাথায় রেখেছিলেন হাত
সে এসে যেন না বলে কখনও
'কিছুই দেখেননি মাস্টার মশাই'।
বেঞ্চে ব্ল্যাকবোর্ডে করিডোরে জমে উঠেছে ধুলো
আগাছায় ভরা মাঠ স্কুলের প্রাঙ্গণ
ঘণ্টার শব্দেরা মিলিয়ে মিশেছে মাটিতে
কাকে বকবেন কাকে শেখাবেন অ আ
কাকে চেনাবেন মনীষীর ছবি দেয়ালে
নিজেই কখন ছবি হয়ে ফ্রেমে বন্দি।
পৃথিবী ঘুরছে অবিরাম তার গতিতে
প্রকৃতি কখন বেছে নেবে নিজ প্রিয়জন
কারা বেঁচে যাবে কারা যাবে চির অস্তে
এভাবেই তো মানুষ এসেছে দুনিয়ায়
ডাইনোরা অবলুপ্ত
কবে শেখাবেন কলকল হবে ক্লাসঘর
সুর করে কবে পড়বে বলাই কানাই
কোথায় চলেছেন বেখেয়ালি মাস্টার মশাই ।।
৪.
∆ শোধ ∆
বসন্তের রাকারাত্রি পলাশ শিমুল ফুলে
আরণ্যক আভরণে রবিগানে মুখরিত করে
সে লিবিডো জাগানিয়া
ভোটরঙ্গ দুনম্বরী অথবা মঙ্গলযানের স্থিতি
ঈশ্বর পৃথিবী আর রাস্তার খানাখন্দ আলেয়া
ক্লান্ত করে দীর্ঘকাল
আসলে যেটা রোদ্দুর তা-তো যাপনের দিন
যা-তে চন্দ্রাহত হই তা প্রতিফলিত রৌদ্রালোক
দিনের সমস্ত শ্রম রাত্রি ঘুম দিয়ে শোধ নেয়
৫।
∆ নৈরাশ্যলিপি ∆
পৃথিবী শেষ হবে গরম বাতাসে
পৃথিবী শেষ হবে ক্ষুদ্র অণুজীবে
পৃথিবী শেষ হবে মাশরুম মেঘে
পৃথিবী শেষ হবে সূর্য নিভে গেলে
অন্য গ্রহ খুঁজে নেবো এলিয়েন মিতা
তার আগে হাত ধরো নিবিড় চুম্বন
লিখে লিখে ভরে তুলি কবিতার খাতা ।
স্রডিংগার সাহেবের বিড়াল বাবাজি
গজানন ঠাকুরের পদতলে এসে
ইঁদুরের মৃতদেহ উদরস্থ করে
এদিকে
আদম ইভের এঁটো আপেলের টুকরো
খসে পড়ে
বাগানের বেঞ্চে বসে নিউটন শেষে
খুঁজে পান পীরিতির কনা
এখানে মানুষ ছিল রাঁধা হতো ভাত
সকালে অ আ ক খ পড়া করে শিশু
স্নান সেরে স্কুলে যেতো।
আলো নেই আলো নেই শুধু দীর্ঘ যাম।।
ছবি- মেহবুব গায়েন
০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০
No comments:
Post a Comment