রূপক চট্টোপাধ্যায় এর কবিতা-
১.
• বানভাসি •
ভোরের আলোর ভেতর পৃথিবীর বালিকা বয়স
হেঁটে যেতে দেখি। তিনটি লাল সিঁড়ি নামলেই
সামনে সামুদ্রিক উঠোন। উঠোনে উবু হয়ে বসে
রাঙা দিদি আলপনা আঁকে।তার আঁকা লতাপাতায়
জেগে থাকে রূপসী প্রজাতি, আড়ালে গিরগিটির
জিভ নজরে পড়ে না! আলপনা শেষ হয়না কভু
উবু হয়ে বসেথাকা রাঙা দিদির শরীরে
বিচ্ছিন্ন দ্বীপেরনোনা ঢেউ লাগে,
বিষন্ন সাইকেল উড়ে যায়
কবেকার ওড়না উড়িয়ে স্কুলের দিকটায়! আবছায়া
পেয়ারা গাছে উঠে বসেছে বিশু মাস্টারের উড়নচণ্ডী
মেয়েটা। আঁচলের পেয়ারা দিয়ে সাজাচ্ছিল
মেঘের মনেস্ট্রি! তার সুজাতা বয়স তখন খোলা চুল।
এই স্রোত ক্রমশ প্রবাহিত হয় হলুদ জ্বরের মতো
উষ্ণ বালিয়াড়ির ওপর দিয়ে। হঠাৎ চোখের
জল আসে স্মৃতির নদীতে। ডুবে যায় ধানিজমি!
২.
• হাওয়া মোরগের গান •
সাইকেলের কেরিয়ারে একরত্তি মেয়ে,
সামনে হাড়ের স্তূপের ভেতর থেকে
প্রাণপণে প্যাডল ঘোরায় বাবা। চাকা ঘোরে,
একটু খানি গড়ায়, দাগ কেটে কেটে!
সামনে অনেকটা পথ, পৃথিবী নিজের মত
করে বিপদ সংকুল করেছে! সরল বাক্যের
মাথায় হাত উঁচিয়ে হঠাৎ পূর্ণচ্ছেদ বসিয়ে দিয়েছে!
নামিয়ে দিয়েছে সান্ধ্যকালিন ক্লান্তি শিরা ও সন্তাপে!
একরত্তি মেয়ে তবুও চুল ঝাঁকিয়ে
গেয়ে চলেছে হাওয়া মোরগের গান। তাই শুনতে
বৃষ্টির কার্ণিশে, উড়ে এসে বসলো
তৃতীয়ার চন্দ্র ইসারা!
৩.
• নিয়ম ছিঁড়ে •
এমন নীল লবন পাখা পেলে
আমিও সামুদ্রিক সন্তরণে যাবো।
মাঠ খোলা বুক পেতে সহজ মাটিতে
জটিল শেকড় সন্ধি মেনে সরলবর্গীয়
সাজাবো আবার বন বিলাসে।
বিচ্ছিন্ন ডিঙা গুলির মনি কাঞ্চন বেলা শেষে ,
তীরে এসে দুলেদুলে খুলে দেবে চুলের অন্ধকার।
সারস শুভ্র নারীরা শঙ্খ বেদনায়
বাজাবে মঙ্গল কামনার শাঁখা, যাদের
স্বাতী সজ্জিত বিনুনি র ফাঁসে কত
উজ্জ্বল পুরুষ মেনে নিয়েছে শেকলের
কৃতদাস স্বাদ। মনে নিয়েছে মীন রাশি।
এমন অরূপ রতন
আমি পাগলের প্রলাপ থেকে খুঁজে পেলে
সান বাঁধা গণিত ভেঙে দিঘিকে দেব ইচ্ছেমতি জল।
জল হবে বারোমাস নদীর শরীরে...
জাফরানী রঙের হরিণী
এমন বয়স এলে তোকে মৃত্যু ভেঙে ছোঁবো।
এমন নীল লবন পাখা পেলে
আমিও সামুদ্রিক সন্তরণে যাবো
ছবি:- অর্ণব জানা
.................................…...................................
No comments:
Post a Comment