অরিত্র দ্বিবেদী'র কবিতা -
∆
বন্ধুতা আসলে ভেক্টর রাশির নাম
একটা অভিজ্ঞতাকে দু-টুকরো করে কাটি। একটাতে এক বন্ধু অন্যতে আর এক। একজনের গায়ে ক্ষতি। অন্যজনের বিন্যাসে গ্লানি। এক অভিজ্ঞতা কাটি। বহুদিন দুপুর, শুভসন্ধ্যা দুয়ার। পড়তে বসি তিন-জন পাশে। ফিজিক্স, পড়ানো চলে রোজ। "একটি মাঝি গুণ টেনে চলে -- ভেক্টর রাশির প্রয়োগ" বললেন স্যার, "একবার বাঁয়ে একবার ডাঁয়ে"। তবু নৌকা সোজা চলে যায়...। একটা অভিজ্ঞতাকে দু-টুকরো করে কাটি। আমরা তিন বন্ধু। একটা ডাঁয়ে, একটা বাঁয়ে। ওরা আর কথা বলে না নিজেরা, পড়ে। আমি একা বকবক বকবক। ওদের মুখ দেখাদেখি বন্ধ হয়েছে। আমি গুণ টেনে নিয়ে যাই। একবার ডাঁয়ে, একবার বাঁয়ে। একটা অভিজ্ঞতাকে দু-টুকরো করে কাটে। আমাকে একবার কাটে, দেখে আবার পালটায়। একপাশে ক্ষতি একপাশে গ্লানি।।
∆
বিদায়
বিদায়। এর অনুরূপ শব্দাবলি নেই কোথাও আমাদের গঞ্জে। প্রথমে হারিয়েছিল সহজ পাঠ। তারপর নিম্ন বুনিয়াদি বিদ্যালয়, ধাপার মাঠ, ঠাকুরদিঘি আর...আর লাল ফ্রক। সেদিন সন্ধ্যেবেলাতেই হারিয়ে গেল পরিদি, সুন্দরী, নাচ জানতো, বাবা ট্যাক্সি চালাত...বাড়ি ফাঁকা। সাইকেলটা নিয়ে ফিরতে ফিরতে শুনেছিলাম বোসেদের বাগানটাও বেচে দিয়েছে ওরা। বিদায়। এর পরিবর্তন নেই! শুধু কালবৈশাখী এলে আমি সাইকেলে চেপে শপিং মল উঠে যাওয়া বোসেদের বাগানে এখনো আম কুড়োতে যাই, পথে পড়ে ধাপার মাঠ, ঠাকুরদিঘি, লাল ফ্রক আর পরিদি। পরিদি, সুন্দরী, নাচ জানতো....
∆
ওম্ মণিপদ্মে হুম
প্রথম লামা দ্বিতীয় লামাকে ডেকে বললেন, "ওম্ মণিপদ্মে হুম"! দ্বিতীয় জন তৃতীয়কে। তৃতীয় জন চতুর্থ কে ... পঞ্চমকে... ষষ্ঠকে...। এইভাবে লামাদের সারি আমার ঘর থেকে বের হয়ে চলে যায় হিমালয়ের দিকে। সেখানে পাহাড়ের দেওয়ালে দেওয়ালে লেখা আছে,"ধার বাকি", "ট্রেন বাতিল", "কাজ নেই", ... আরও আরও বিস্তার। ওঁদের কাজ এসব মুছে ফেলা। হিমালয়ের প্রতিটি পাথরে লিখে দিতে হবে: "ওম্ মণিপদ্মে হুম"।।
অলংকরণ - ঋতুপর্ণা খাটুয়া
•••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••
প্রতিটি লেখা অনবদ্য লাগল আমার। তাঁর আরও লেখা পড়েছি। এগুলো পড়েও মুগ্ধ হয়েছি। কবিকে আমার ভালোবাসা, কৃতজ্ঞতা। শব্দরঙ'কেও।
ReplyDelete