হীরক বন্দ্যোপাধ্যায় এর কবিতা -
∆
লুকোচুরি
ক্রমশ রাত গভীর হলে অন্ধকারে আমাদের আজন্মের লুকোচুরি শুরু হয়
মিউট করা টেলিভিশনে আলোও তখন ম্লান হয়ে আসে আজব সে চু কিত কিত ,কবাডি কবাডি খেলা
ছোটাছুটির মাঝে এক সময় ললিতা বিশাখা হাতের মুঠোয় উঠে আসে, ধরা দেয় ঊর্বশীর নগ্ন শরীর
মোহ ময় লাস্যে যেন মোম ,যেন কস্তুরী মৃগ
দ্রৌপদীর বস্ত্রহরণের মতো ঝুনে খামচে অদ্ভুত সব হযবরল. ..দাঁত বসিয়ে দেওয়া. ..ঠোঁট থেকে ঝরতে থাকা রক্তের লালা , ,নোনাস্বাদ চোখ জ্বলজ্বল করে ওঠে তবু কেউ কাউকে দেখতে পাই না. ..
সংঘাতজটিল পিঠ থেকে ক্রমশ নেমে আসা পার্বত্যভূমি কেঁদে কঁকিয়ে ওঠে, কবিরা শুদ্ধাচারে
যাকে বলে জঙ্ঘা,যেন প্রতি অঙ্গ কাঁদে রতি মহারণে
পা থেকে মাথার চুল অব্দি নিঃশ্বাস উদ্গীরণে
অধীর হয়ে ওঠে যেন মুহূর্মুহূ কেঁপে ওঠে সসাগরা
মেদিনী, রেকটার স্কেলে কম্পনের মাত্রা সবিশেষ
পূর্ণতা পা য় ,সেও যেন বলতে চায় ,আর নয় আর নয় স্বর্গ মর্ত্য পাতাল যে ধ্বংস হয়ে যায় ......
∆
জোৎস্নার ভাষা
আমি কিছু বলার আগেই সে আমার দিকে বাড়িয়ে দেয় হাত,আমি কি এই হাত স্পর্শ করবো,টেনে নেব বুকে. ..? জানিনা সমস্ত কথায় আজ কথার কথা হয়ে ধরা দিচ্ছে মথুরার হাটে
ক্রমশ তোমার ছায়া দেখা যায়
শহরজুড়ে মেঘ জমে ,বৃষ্টি পড়ে
সুয়োরাণি দুয়োরাণি আমাকে দেখায় ...
কী যেন মায়া তার শরীরে, ফেলে যায় গতিপথ সবুজ
ঘাস ও সোনালী ধানে ,গোপন কথার মতো
মিলনের আনন্দ স্বপ্নের কাজল এমনকি পার্বতী ও পরমেশ্বরের অলৌকিক ষড়যন্ত্রে চিকচিক করছে তখন ভালবাসার শালগ্রাম শিলা
কিন্তু কোনও ছবিই আজ স্পষ্ট নয় ,মনে হয়
প্রেম ভালবাসা আঁকতে আঁকতে ঘৃণা ঈর্ষাকাতর
ক্রোধ ঢেউ গুনতে গুনতে রাত্রি কাবার হচ্ছে শুধু
ভাবছি, অন্ধকারের আলো আর জ্যোৎস্নার ভাষা তাকে ঠিক শিখিয়েই ছাড়ব, তবে অবশ্য শেষপর্যন্ত
সে হাত সরিয়ে নেবে কীনা জানিনা ......
∆
দৃষ্টির বদলে হাসি
দৃষ্টির বদলে হাসি তুমি শিখিয়েছিলে,অক্ষরে অক্ষরে
আমি সারাজীবন তা পালন করে গেছি
এখন বিভ্রমের অনুশীলন না অনুশীলনের বিভ্রম ,
অন্ধকারের বেদনা না বেদনার অন্ধকার জানিনা
আন্দোলনের যন্ত্রণা না যন্ত্রণার আন্দোলন প্রতিদিন
প্রতিমুহূর্তে আমাকে তিষ্টোতে দিচ্ছে না
কুরে কুরে খায় যা আমার না কিংবা ছিলনা কখনো
তাকে ছোঁয়ার প্রবণতা কি ঠিক ?
ভাগ আর বাটোয়ারা কি এখনো সমার্থক শব্দ অভিধানে ,আগুনের সঙ্গে ঘিয়ের তুলনা করতে গিয়ে আমি অন্ধ হয়ে গেছি অথচ ঋতুভেদে বৃষ্টিপাত এবং প্রবল বজ্রপাতে প্রলয়তো বন্ধ হয় নি. ....
ঘুড়ির সঙ্গে সুতো আর সুতোর সঙ্গে ঘুড়ি
যেভাবে লেপ্টে থাকে সুখের সময় দুঃখ
আর শান্তির মধ্যে অশান্তি ঠিক সেইভাবে আমার জীবনে লেপ্টে আছে মানুষ কেন অহংকারী
জল কেন নিম্নগামী ,পোষা কুকুর কামড়ানোর আগে
কেন মালিকের মুখের রেখায় একবার তাকায়
বিস্ময় , এসব তুমি শেখাওনি কেন আগে
তাহলে বুঝতে পারতাম খাম থেকে গোলাপি চিঠি বের করার আগে কোনো উড়ানের স্বপ্ন দেখতে নেই...
ছবি - মেহবুব গায়েন
•••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••
No comments:
Post a Comment