Monday 18 March 2024

কবিতা

বসন্ত বৈষ্ণবী -শেষ পর্ব‌

রূপক চট্টোপাধ্যায়’র কবিতা -

লক্ষী হীন

এবছর অকাল বর্ষণে সব ধান পচে গেছে।
পচা ধানের খেতে অলক্ষ্মী শুয়ে থাকেন।

কৃষ্ণরঙ দেহের ওপর অনাবাদি কারুকাজ
পায়ের গোড়ালিতে একটু আলতা রঙ ভোর।

ঘুম ভাঙতে ভাঙতে এমন সকাল দেখা যায়
বহু গাঁয়ের পাড়ায় পাড়ায়। টিউশনি মুখরা
সাইকেলে অলক্ষী যায় বাবা কে নিয়ে

হলুদ ডানায় হা ভাতের ওড়না জড়ানো
বাবার ফুসফুস গলতে গলেত নিভে গেলে
বিশ্ব নিখিল
গড়িয়ে পড়ে যাবে খাদের অতলে।

অলক্ষী মনে মনে কেঁদে উঠবে না আর
সব কান্না নিয়ে গেছে অকাল বর্ষণে!


চুম্বন

প্রশ্ন বিজড়িত ঠোঁট
ওখানে চুম্বন নামবে কি করে?

কাঁচ কাটা জোৎস্নায় নিজের পরমায়ু খুইয়ে
ঘর ছেড়েছে হতভাগা। তারপর সারাজীবন ধরে
সেই পরমায়ু খুঁজেছে এখানে ওখানে,
ইতি উতি। মনোজ্ঞ ডাস্টবিন অথবা
সার্কাসের জোকার সুলভ জন সমাগমে!
অথবা দ্বিধা বিভক্ত পথের অসুখ নিয়ে
চলে যাওয়া গাঁয়ের ঠিকানায়!

তার কাছে সব প্রশ্ন-ই
গাছে গাছে ভারি হয়ে আসা ছায়া,
এলোমেলো ধান খেত, ধুলা মলিন বধ্যভূমি,
তীক্ষ্ণ নখের আগায় বসিয়ে রাখা কিশোর প্রেমিক!

বলো হে চুম্বন নামতে পারো কি তুমি
এমন কোনো কঙ্কালের পাথুরে কপালে?

ঘড়ি

পুরানো পোশাকের ভেতর ফেলে এসেছি যে শরীর
তার পুঁতি গন্ধ মাখানো
একটা সকাল এসেছিলো আজ।

কতোদিন পর বিগলিত ফুসফুসে নিয়ে তার সাথে
কথা বললাম। গল্পের গোছগাছ, চায়ের কাপ
টি টেবিলের পিঠে গুলঞ্চ ঝোপ, কাঁচপোকা
হাত থেকে পড়ে যাওয়া সরণিকায় ভোঁকাট্টা ঘুড়ি।

এমন সময় দেখি

সে হঠাৎ উঠে গিয়ে ঘড়ির কাঁটা গুলো ভেঙে ফেলে
নিজেই টিকটিক করে বেজে চলল
আমি চোখ বন্ধ করে দেখে নিলাম পৃথিবীকে!

ছবি- মেহবুব গায়েন‌
•••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••

No comments:

Post a Comment