কবি গৌরাঙ্গ মণ্ডল এর কবিতা-
১।। ∆ ব্রহ্মাণ্ডদর্শন ∆
স্বপ্নের আসরে আমি ধারাজল মুখস্থ পারি না। দেখি, কক্ষপথ থেকে তাঁবু খুলে উঠে যাচ্ছে অভিযাত্রী, পাড়াপড়শি, একে একে সমস্ত গ্রহেরা। অজস্র স্তনের কুঁড়ি বাগানে ও বৃন্তে ঝুলে আছে। থাবার সংকেতহীন অভীতিজঙ্গলে অনিদ্রাদায়কভাবে ঘন হল হরিণের ডেরা। সূর্যের বদলে আজ ব্রহ্মাণ্ড কাঁপিয়ে তুলবে মিনুদি'র চোখ। দু' সের জ্যোৎস্নার লোভে গালমন্দ খেল যে বালক, স্বপ্নের আসরে তার ন্যাংটো পাছায় আমি মাঝ বরাবর চিরে দেওয়া চাঁদ দেখে ফেলি
২।। ∆ স্বীকৃতি ∆
তুলনামূলক নও। নখরে পৃথক দেখে শামুকের মাংসমোচন। বানানো ফুলের গন্ধে বাঁধিনি আয়ুধ। কেননা, কাঁচির রক্তে ধুয়ে যায় কাগুজে পালক। নদী তো ভরতেই হত। সামান্য বৃষ্টির কাছে ঋণী রইল পথেদের ক্ষত। শুনে নাও, ভাতঘুম, পছন্দমতন স্নানঘাট। ছায়ার সম্মতি ছাড়া এগোনো মানুষ, তুমি সাম্য নিয়ে কতদূর ভাবো?
৩।। ∆ মৎস্যজন্ম ∆
মাছের সৌভাগ্য দেখে ঈর্ষা হয়। মৃত্যুর ভেতরে কোনো দুঃখ নেই, হরিধ্বনি নেই। খই ও আধুলি নিয়ে পিছুপিছু আসে না সন্ততি। শ্মশান ছিল না বলে ক্ষয়ে গেছে মাছেদের কাঁধ। কেবল, মানুষ কিছু তার শোকে মুগ্ধ হয়ে থাকে। ডুব তো পারি না, প্রিয় । এই নাও বঁটি। তোমার উচ্ছ্বাসলোভে আমিও তো আঁশগন্ধে ভর করে আসি
৪।। ∆ চতুরাশ্রম ∆
লুকোনো শরীর। ঝাপসা। তুলোপেঁজা না মুছে দেখাও দীর্ঘলিপি, চতুরাশ্রমের
জল তো চিনি না। চোখ এখানে ছিল কি? দুখানি পুকুর, তার আল বরাবর হেঁটে আসা নালককুমার। ওষ্ঠের লালসা কেটে ধ্রুব হল নিখোঁজ কিশোর
বুক, বৃক্ষ ও নখরহীন, কীভাবে যে উহ্য করে ঘুম! যুবক ফুরোতে আসে।সুখহীন খায় তাকে, বালিপোড়া, উন্মত্ত মন্ত্রণা
চালচুলোহীন নই। একবিন্দু নাভি জুড়ে গার্হস্থ্য আমারও। আর জন্মান্তর বলতে, উগড়ে দিচ্ছ বারবার। ভীষন ক্ষুধার্ত তবু হজমে অক্ষম গিলোটিন
৫।। ∆ বাড়িতে ∆
সরকারী চাকুরে বলতে পুরোনো ঘড়িটা। বাবার নিজের কেনা হাতঘড়ি নেই। মাথা উঁচু রেখে সময়কে দেখব ভেবে দেওয়ালে টাঙানো। ঠিক-ঠিক শব্দে তাঁর ঘাড়নাড়া শুনি। অমত বিষয়ে আমরা জেনেছি বিরতি
ঘর - রান্নাঘর - গাছ - বিছানা - উনুন, একঘেয়ে দ্রুত সেকেন্ড কাঁটার সঙ্গে মিলে যাচ্ছে মা, তোমার নম্র হাঁটাচলা। দাদা ও দিদিকে নিয়ে ছ'জনের ঘর। পিতা - জগন্নাথ; মাতা - অন্নপূর্ণা; আর, অভিভাবকের নাম - পুরোনো ঘড়িটা
অলংকরণ - ইন্দ্রানী পন্ডা
°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°
ReplyDelete" মাছের সৌভাগ্য দেখে ঈর্ষা হয়। মৃত্যুর ভেতরে কোনো দুঃখ নেই, হরিধ্বনি নেই। খই ও আধুলি নিয়ে পিছুপিছু আসে না সন্ততি।" ... নবীন ভাই বোন, যাদের লেখা পড়ে আমি নিজেকে প্রতিদিন শিক্ষিত করি , তাদের মধ্যে অগ্রগণ্য গৌরাঙ্গ । ওকে খুব ভালোবাসি কারণ ওর কবিতা আমাকে খুন করে ।
খুব ভালো লাগেনি
ReplyDelete